বঙ্গের বুকে প্রায় ৬৪ লক্ষ হিন্দিভাষী, বিজেপির কাছে এটা 'কালোঘোড়া', কীভাবে জাদু দেখাবে এই তথ্য

Published : Apr 29, 2021, 01:23 PM IST
বঙ্গের বুকে প্রায় ৬৪ লক্ষ হিন্দিভাষী, বিজেপির কাছে এটা 'কালোঘোড়া', কীভাবে জাদু দেখাবে এই তথ্য

সংক্ষিপ্ত

কলকাতা ছাড়াও হাওড়া, হুগলি ও উত্তর ২৪ পরগনার শহরতলি এলাকায় প্রচুর হিন্দিভাষী মানুষ বসবাস করেন। ঝাড়খণ্ডের সীমানায় পশ্চিম বর্ধমানের শিল্পাঞ্চল এলাকাতেও অনেক হিন্দিভাষী মানুষ রয়েছেন। আসানসোলে প্রায় ৫০ শতাংশ ভোটার অবাঙালি। 

ঠিক কতজন হিন্দিভাষী রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী প্রায় ৬৪ লক্ষ মানুষ বাংলার বুকে রয়েছেন, যারা হিন্দিতে কথা বলেন। ২০১১ সালের জন গণনা অনুযায়ী এই রিপোর্ট পেশ করেছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এই হিন্দিভাষীরাই এবারের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-র বড় হাতিয়ার। কিছু দিন আগেই ভাইরাল অডিও ক্লিপে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরকে বলতে শোনা গিয়েছিল, এই রাজ্যে হিন্দিভাষী ভোটাররা একটা বড় ফ্যাক্টর এবারের ভোটে, যারা নরেন্দ্র মোদীকে পছন্দ করেন এবং সমর্থন করেন।  প্রশান্ত কিশোরের মতে সেই সংখ্যাটা নেহাত কম নয়। তাঁর মতে এই রাজ্যে কমবেশি ১৫ শতাংশ মানুষ অবাঙালি, যার মধ্যে ৮ শতাংশ হিন্দিভাষী। এদের সমর্থন একাকাট্টা হয়ে বিজেপির ঝুলিতেই পড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। 

কলকাতা ছাড়াও হাওড়া, হুগলি ও উত্তর ২৪ পরগনার শহরতলি এলাকায় প্রচুর হিন্দিভাষী মানুষ বসবাস করেন। ঝাড়খণ্ডের সীমানায় পশ্চিম বর্ধমানের শিল্পাঞ্চল এলাকাতেও অনেক হিন্দিভাষী মানুষ রয়েছেন।  আসানসোলে প্রায় ৫০ শতাংশ ভোটার অবাঙালি। উত্তরবঙ্গেও প্রচুর অবাঙালি মানুষ আছেন। এর মধ্যে এক-একটা জায়গা এক এক সম্প্রদায়ের আধিক্য। যেমন ব্যারাকপুরে গুজরাতিদের, কলকাতায় মারওয়াড়ি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের কেন্দ্র ভবানীপুরেও (নন্দীগ্রামের আগে এখানে বরাবর ভোটে দাঁড়িয়েছেন) হিন্দি, পাঞ্জাবি ও গুজরাতি ভাষার প্রচুর লোকজন রয়েছেন। বাম আমলে বামেদের, তৃণমূল আমলে তৃণমূলকে, যখন যারা ক্ষমতায় থাকে তখন মোটামুটিভাবে তাদেরই সমর্থন করে অবাঙালি এই সম্প্রদায়গুলি। কিন্তু হিন্দিভাষীদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। আসলে বিজেপি হিন্দিবলয়ের পার্টি বলেই সুপরিচিত জনমননে।  বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট বাজার পর থেকেই এই রাজ্যে হিন্দিবলয়ের বিজেপি নেতারা ঘনঘন যাতায়াত করছেন। কেন্দ্রীয় এই নেতাদের ‘বহিরাগত’ তকমা দিয়ে প্রচার চালাচ্ছে তৃণমূল। সেই প্রচার কোথাও না কোথাও গিয়ে বিঁধছে এই রাজ্যে বসবাসকারী হিন্দিভাষী মানুষদের। মধ্য কলকাতার এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘৩০ বছর ধরে কলকাতায় রয়েছি। কখনও মনে হয়নি মারওয়াড়ি বলে আমাকে কেউ অন্য চোখে দেখছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায় এত দিন পরে মনে হচ্ছে আমরা তাহলে বহিরাগত।’

বিজেপি এই সুযোগকে উস্কে দিতে ছাড়ছে না। রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ এক ধাপ এগিয়ে বলেছেন, বাংলার বিকাশে বাঙালিদের চেয়ে নাকি অবাঙালিদের অবদান বেশি। গুরুত্ব বুঝতে পেরে হিন্দিভাষীদের শান্ত করতে আসরে নেমেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।  তাঁদের কথায়, ‘বাংলায় যাঁরা থাকেন, তাঁরা সকলেই বাঙালি। ভোটের নামে বাইরে থেকে এসে যারা প্রচার করছেন, তাঁরা বহিরাগত।’ কিন্তু ক্ষতি যা হওয়া হয়ে গিয়েছে। রাজনীতির কারবারিদের মতে,  ওই কথার জেরে না হলেও, হিন্দিভাষীদের মধ্যে এমনিতেই বিজেপির প্রতি টান বেশি। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে হিন্দিভাষীরা ঢেলে ভোট দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদীকে। 
মমতা এটা জানেন বলে হিন্দিভাষীদের সন্তুষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছেন নিজের মতো করে। ছটে বিহারের চেয়েও বাংলায় ছুটি বেশি। হিন্দিভাষীদের জন্য তৃণমূলের একটা শাখা সংগঠন খুলেছেন তিনি, যার নেতৃত্বে আগে ছিলেন দীনেশ ত্রিবেদী। তিনি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে মারওয়াড়ি নেতা বিবেক গুপ্তাকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গুপ্তা এবার জোড়াসাঁকো কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী। বিভিন্ন অবাঙালি সম্প্রদায়ের সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠকও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। শেষমেশ কার পাতে কার ভোট গেল, জানা যাবে ২ মে। 

PREV
click me!

Recommended Stories

'এবার থেকে যেখানে যাবেন বন্দে মাতরম বাজান হবে' মমতাকে চরম বার্তা শুভেন্দুর
West Bengal SIR News: ভারতীয় বাবার ‘অচেনা বাংলাদেশি ছেলে’! SIR হতেই সব কাণ্ড ফাঁস