শুভেন্দু তো একা নয়, লাইন অনেক লম্বা, তৃণমূল যাই বলুক ভাঙনে ভয় অন্তরে

 

  • শুভেন্দুর পিছনে লাইন অনেক লম্বা
  • ৬০ বিধায়কের বিজেপিতে যাওয়ার সম্ভাবনা 
  • ঘরের বিদ্রোহ তৃণমূল কংগ্রেসকে নিঃস্ব করে ছাড়বে
  • পদ্মের মুখ আরও কারা, জানুন বিস্তারিত 
     


তপন মল্লিকঃ- তৃণমূলের বিদ্রোহী নায়ক নন্দীগ্রামের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ায় রাজ্য রাজনীতিতে বহু প্রতিক্ষিত জল্পনার অবসান ঘটেছে, পাশাপাশি এ জল্পনাও দানা বেঁধেছে যে তিনি কতজনকে নিয়ে দলবদল করবেন।


পদ্মের মুখ আরও কারা 

Latest Videos

বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর বিধানসভা থেকে বেরিয়েই শুভেন্দু অধিকারী কাঁথিতে না ফিরে শুভেন্দু যান কাঁকসায় সুনীল মণ্ডলের বাড়িতে। বিক্ষুব্ধ তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডলের কাঁকসার বাড়িতে শুভেন্দু ছাড়াও ছিলেন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি, কালনার তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু। তাছাড়াও  ছিলেন কর্নেল দীপ্তাংশু চৌধুরী, পূর্ব বর্ধমানের জেলা পরিষদের সদস্য নুরুল হাসান, দুর্গাপুর পৌরসভার ৪ নম্বর বোরো চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর বন্দোপাধ্যায়, গুসকরা পৌরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবী অনুযায়ী অন্তত ৬০ জন বিধায়ক যোগ দেবেন বিজেপিতে। 


শুভেন্দুর পিছনে লাইন অনেক লম্বা


প্রসঙ্গত; শুভেন্দু অধিকারী বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন বুধবার। জানা গিয়েছে, মালদার বামনগোলা ব্লকের পাঁচ অঞ্চচল সভাপতি ওইদিন রাতেই পদত্যাগ করেছেন। এছাড়াও ইস্তফা দিয়েছেন জগদলা অঞ্চল সভাপতি নারায়ন মন্ডল, পাকুয়াহাট অঞ্চল সভাপতি শ্যামল মন্ডল, চাঁদপুর অঞ্চল সভাপতি সাহেব হাঁসদা, বামনগোলা অঞ্চল সভাপতি তফিউর রহমান এবং গোবিন্দপুর- মহেশপুর অঞ্চল সভাপতি মানিক মাহাতো। এই জেলায় দীর্ঘ পাঁচ বছরেরও বেশি সময় দলের তরফে পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন শুভেন্দু। মালদহে নিচুতলা পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারীর বহু অনুগামী রয়েছেন।

‘বন্ধু দেখা হবে’

শুভেন্দু অধিকারী মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর প্রকাশ্যে তারিফ করেছিলেন ব্যারাকপুরের বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত।আসলে শীলভদ্রের তারিফ যত না শুভেন্দুর প্রতি তার চেয়ে অনেক বেশী তাঁর নিজের দলের প্রতি ক্ষোভ। শুভেন্দুর মতো তিনিও ভোটকুশলী পিকের ওপর খুশী নন, প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাককে তিনি বাজারি কোম্পানি বলে আক্রমণ করেছিলেন। তবে দল ছাড়ার কোনও ইঙ্গিত না দিয়েই শীলভদ্র আগামী বিধানসভা নির্বাচনে যে তৃণমূলের হয়ে দাঁড়াবেন না, সে কথাও জানিয়েছেন। কিন্তু সামাজিক মাধ্যমে তিনি গেরুয়া রঙের ওপরে লিখেছেন, ‘বন্ধু দেখা হবে’।  


প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে ক্ষোভ 

শুভেন্দুর সঙ্গে দলের টানাপোড়েনের মধ্যেই মুখ খুলেছেন কলকাতা পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য এবং প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ৷ তৃণমূলে বিক্ষুব্ধদের তালিকায় যে তিনিও তা খুব স্পষ্ট। শুভেন্দু অধিকারীর মতো জননেতা দল ছাড়লে তৃণমূলের যে ক্ষতি হবে একথা বলার পাশাপাশি প্রশান্ত কিশোরকে নিয়েও তিনি ক্ষোভ জানিয়েছেন৷ নাম না নিয়েও দল পরিচালনার ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন যাঁদের উপর নির্ভর করেন, তাঁদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তার একটার পর একটা বিস্ফোরক মন্তব্য তৃণমূলের অস্বস্তি যে অনেকটাই বাড়িয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। 

'তৃণমূলে শূন্যতা': রাজীব

ইতিমধ্যে বিদ্রোহী হয়ে দলের সমস্ত পদ থেকে অব্যহতি নিয়ে দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন কোচবিহার দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী। পাশাপাশি দলের কাজকর্ম নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন আরেক তৃণমূল বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। তাঁরও ক্ষোভ দল পরিচালনা নিয়ে। ফলে তৃণমূলে বিদ্রোহীদের লাইন যে ক্রমশই লম্বা হচ্ছে তা জলের মতোই পরিস্কার। বিদ্রোহী বিধায়কদের পর মন্ত্রীর তালিকায় নতুন সংযোজন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বিক্ষোভের সুরে তিনি দলে স্তাবকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। শনিবার অরাজনৈতিক মঞ্চ থেকে তাঁর মন্তব্য ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। রাজীব বলেছেন, 'এখন স্তাবকতার যুগ। স্তাবকতা পারি না বলেই আমার নম্বর কম। আমাকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে পিছনের সারিতে। আর যাঁদের মানুষ চায় না, তাঁরাই সামনের সারিতে থাকছেন’। শুভেন্দু প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, দলে এবং রাজনীতিতে শূন্যতার তৈরি হবে।  

ঘরের এই বিদ্রোহ তৃণমূল কংগ্রেসকে নিঃস্ব করে ছাড়বে

২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু অধিকারী, শীলভদ্র দত্ত, মিহির গোস্বামী, প্রবীর ঘোষল, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়দের মতো বিদ্রোহীদের লাইনটা যদি লম্বা হতে থাকে তবে তা তৃণমূল দলের পক্ষে শুধু অস্বস্তির নয় সমূহ বিপদের। ঘরের এই বিদ্রোহ তৃণমূল কংগ্রেসকে নিঃস্ব করে ছাড়বে। তার ওপর বছর ঘুরতেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। এবার ক্ষমতা দখলে রাখা তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে রীতিমত চ্যালেঞ্জিং। অতীতের বিধানসভা নির্বাচনগুলি থেকে এবারের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ আলাদা।


  'মাথা গরম করিস না', জিতেন্দ্রকে মমতা

তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'যে লোভী সে চলে যাবে, যে উচ্চাকাঙ্ক্ষী সে চলে যাবে। যারা বলছেন তাঁরা চলে যাক, কিছু যায় আসে না’। আসলে কিন্তু এসে যায়। সে কারনে উত্তরবঙ্গ থেকে মুখ্যমন্ত্রী ফোনে জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে বলেন, 'মাথা গরম করিস না। আমি যাচ্ছি ১৮ তারিখ, কথা বলব সবকিছু নিয়ে।' যে কোনও মূল্যে বিজেপি ২০২১-এর যুদ্ধ জিততে চাইছে। কিন্তু এখনও এ রাজ্যে ভোটযুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিকল্প মুখ তাঁদের হাতে নেই। একমাত্র শুভেন্দু হতে পারেন সেই মুখ। মমতাকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো ক্ষমতা একমাত্র তাঁরই আছে। সেই নেতা পেয়ে গেলে বিজেপির লড়াইও অনেক সহজ হবে।

Share this article
click me!

Latest Videos

‘Chinmoy Krishna-কে আমি মুক্ত করবোই’ নির্ভীক Bangladeshi আইনজীবী Rabindra Ghosh-এর চরম প্রতিশ্রুতি
Mamata banerjee-কে সরাসরি চ্যালেঞ্জ Suvendu Adhikari-র! ২৬-এ হবে আসল খেলা | Suvendu Adhikari News
মাত্র এক মাসের সংসার! যৌতুক না দিতে পারায় এইরকম পরিণতি, শুনলে আঁতকে উঠবেন | South 24 Parganas News
জঙ্গি গ্রেফতারির পর কড়া নজিরদারি Canning-এ! পেশ করা হলো হোটেল মালিকদের জন্য নতুন নিয়ম | Canning News
জালে পুরনো পাপী! জাল পাসপোর্ট পৌঁছে যেত অনুপ্রবেশকারীদের হাতে! | Duttapukur News | Kolkata