নন্দীগ্রামে কতটা কার্যকর হবে শুভেন্দু 'ফ্যাক্টর', মমতা মিথ কি ভাঙতে পারবেন বিজেপি নেতা

  • নন্দীগ্রামে মনোনয়ন দাখিল শুভেন্দু অধিকারীর 
  • বিজেপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল
  • মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে তিনি প্রার্থী 
  • কংগ্রেসের হয়ে রাজনীতি শুরু শুভেন্দু অধিকারীর 
     

Asianet News Bangla | Published : Mar 12, 2021 8:22 AM IST / Updated: Mar 29 2021, 07:50 AM IST

নন্দীগ্রামে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করেই মজা দিলেন তাঁর মনোনয়ন। মনোনয়ন দাখিলকে কেন্দ্র করেও উপস্থিতি ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। ছিল জনতার ঢল। মাত্র ৫০ বছরেরই রাজনীতিতে পারদর্শী ভোটের আগেই তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে নাম লিখিয়ে ছিলেন বিজেপিতে। আর তিনিই এখন বিজেপির তুরুপের তাস। তাঁকে সামনে রেখেই নন্দীগ্রাম কেন্দ্র তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারানোর ছক কষছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, জেপি নাড্ডারা। তাই বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর কাঁধে কিছুটা হলেও গুরুদায়িত্ব রয়েছে বলা যেতেই পারে। 


কংগ্রেসের টিকিটে কাঁথি পুরসভার কাউন্সিলর হয়ে ১৯৯৫ সালে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তার দশ বছরেরও বেশি সময় পরে তিনি ২০০৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য হন কাঁথি দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে। একই সঙ্গে দায়িত্ব সামলান কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যানের। তবে সেইসময় তিনি কংগ্রেস থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের যোগ দিয়েছিলেন। তারপর থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত থেকে গিয়েছিলেন 'দিদির' ছায়াসঙ্গী হিসেবে। তৃণমূলের টিকিটে লোকসভা গিয়েছিলেন মন্ত্রীও হয়েছেন। পূর্ব মেদিনীপুর পশ্চিম মেদিনীপুর সহ  রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকায় তাঁর প্রভার ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তৃণমূল কংগ্রসের পর্যবেক্ষক হিসেবে তিনি বীরভূম, মালদা, মুর্শিদাবাদের দায়িত্বে ছিলেন। আর সেই এলাকাগুলিতেও তাঁর অনুগামীর সংখ্যা বেড়েছে। মমতা ছত্রছায়ায় থেকে মদন মিত্রের ফেলে যাওয়ার পরিবহন দফতরের দায়িত্ব সামলেও নিজের একটা আলাদা পরিচয় তৈরি করেছিলেন শুভেন্দু। তাই তৃণমূলে থাকাকালীন তাঁর জনপ্রিয়তাও অন্য নেতাদের কাছে ঈর্শার বিষয় ছিল। যদিও দলের অন্দরে তিনি মৃদুভাষী হিসেবেই তিনি পরিচিত ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে বিজেপির জনসভাগুলিতে তাঁকে  রাজ্যের একাধিক বিষয় নিয়ে সরব হতে দেখা গেছে। 

সূত্রের খবর নন্দীগ্রামে লড়াই করতে চেয়ে নিজের রাজনীতি জীবন বাজি রাখতে চেয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেইমত বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে দরবারও করেছিলেন তিনি। প্রথম বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব তাতে রাজি হয়নি। কিন্তু পরবর্তী সময় শুভেন্দুকে নন্দীগ্রামে তাঁর প্রাক্তন দলনেত্রীর বিরুদ্ধে লড়াই করার ছাড়পত্র দিয়েছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেসে থাকার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ট হিসেবেই তাঁকে দেখা গিয়েছিল। মমতা তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ দপতরের মন্ত্রী করেছিলেন। তাঁর ভাইকেও গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। দলীয় সূত্রের খবর দলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রভাব বিস্তার মেনে নিতে পারেননি। একই সঙ্গে ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের নীতিও মেনে নিতে পারেননি তিনি। তার ওপর ছিল নারদ ফাঁড়া। যদিও নারদকাণ্ডকে চক্রান্ত হিসেবেই দেখেন শুভেন্দু। তবে সব মিলিয়ে বিজেপিতেও গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নিয়েছেন শুভেন্দু। 

সূত্রের খবর নন্দীগ্রামের ভোট প্রচারকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। মনোনয়ন দাখিলের দিনেই উপস্থিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। যা একটি বিশেষ রাজনৈতিক বার্তা বহন করে। তাঁর হয়ে প্রচার করতে পারেন মিঠুন চক্রবর্তীও। 

 নন্দীগ্রামের রাজনৈতিক সমীকরণও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ  ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটাতে যে ভূমি আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিল তার একটি পিঠস্থান যদি সিঙ্গুর হয় তাহলে অন্যটি অবশ্যই নন্দীগ্রাম। আর সেই জমি আন্দোলনের স্মৃতি উসকে দিতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার উত্থাপন করছেন জমি আন্দোলেন কথা। একটা সময় শুভেন্দু অধিকারী ছিলেন নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনের সামনের সারির নেতা। এই কেন্দ্র মূলত মুসলিম অধ্যুসিত। তাই শুভেন্দুও প্রচারে সামনে আনছেন মোদীর ডবল ইঞ্জিন সরকারের স্লোগান। দিন কয়েক আগে এএনআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শুভেন্দু   আরও বলেন  বাকি বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির মত এই রাজ্যেও মোদীর নেতৃত্বেই রাজ্যে উন্নয়ন সম্ভব। সোনার বাংলা তৈরি হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। একই সঙ্গে শুভেন্দু রাজ্যে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের আর্জি জানিয়েছেন। 

Share this article
click me!