করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে অবশেষে কড়া পদক্ষেপ করল নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশান জানিয়েছে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের শেষ দুই দফায় বাংলায় কোনও জনসভা, পথসভা বা রোডশো করা যাবে না। রাজ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্ট ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কমিশনকে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই নির্বাচন কমিশন কড়া পদক্ষেপের কথা জানায়। একই সঙ্গে কমিশন জানিয়েছে ভোট প্রচারের জন্য আগে থেকে যেসব অনুমতি দেওয়া ছিল সেগুলিও বাতিল করা হয়েছে। বর্তমানে শুধুমাত্র এমন জনসভার অনুমতি দেওয়া হবে যেখানে মাত্র ৫০০ জনের কম মানুষ উপস্থিত থাকতে পারে। নির্বাচন কমিশনের এই ঘোষণার পরেই তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় তাঁর পূর্ব ঘোষিত নির্বাচনী প্রচার বাতিল করেছেন।
মাত্র দুদিন আগেই রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজারের গণ্ডি ছাড়িয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত বুলেটিনে বলা হয়েছে বৃহস্পতিবার রাজ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১১ হাজার ৯৪৮। মৃত্যু হয়েছে ৫৬ জনের। যা নিয়ে রীতিমত উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এখনও রাজ্যে আরও দুটি দফায় ভোট গ্রহণ বাকি রয়েছে। ২৬ এপ্রিল সপ্তম ও ২৯ এপ্রিল অষ্ঠম দফার ভোট গ্রহণ। তবে আগেই নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল কমিশনের করোনা সংক্রান্ত নিয়ম বিধি না মানলে প্রার্থী, রাজনৈতিক নেতা বা কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রচারের সময় সীমাও কমানো হয়েছিল। কিন্তু এদিন আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করল কমিশন।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষণার পরেই তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন তাঁদের কাছে মানুষের জীবনের দাম অনেক বেশি। আর সেই কারণে নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা ও রাজ্যে করোনাভাইরাসে সংক্রমণের কারণে তাঁর পূর্ব নির্ধারিত সমস্ত প্রচারসূচি বাতিল করছেন তিনি। অন্যদিকে আগামিকাল ভোট প্রচারে রাজ্যে আসার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। কিন্তু করোনাভাইরাস নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক থাকায় তিনি রাজ্য সফর বাতিল করে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠক করবেন। মোদীর মতই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েও ভার্চুয়ালি নির্বাচনী প্রচার করবেন বলে সূত্রের খবর। খুব তাড়াতাড়ি ভার্চুয়াল সভার সূচি জানিয়ে দেওয়া হবে বলেও তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে। আর সেক্ষেত্রে বলা যেতে পারে এদিনও রাজ্যে শেষ হয়েছে বড় নির্বাচনী প্রচার। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহ দুজনেই প্রচার করেছিলেন।