করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল খড়দার তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কাজল সিনহার। তারই পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর স্ত্রী নন্দিতা সিনহা নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। অষ্টম দফা নির্বাচনের আগেই দিন এই খরবে কিছুটা হলেও চাঙ্গা তৃণমূল শিবির। কাজল সিনহার স্ত্রী নন্দিতা উপ নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈনসহ নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে খড়দা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। একই সঙ্গে তিনি বাংলায় আটটি দফায় নির্বাচনের বিষয়টিও তুলেছেন। গত রবিবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কাজন সিনহার স্ত্রী তাঁর অভিযোগে লিখেছেন, নির্বাচন কমিশন ' নিজের জন্যই অন্ধ উদ্দেশ্য ' চালিত হয়েছএ। গোটা দেশ যখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তখন বাংলায় আট দফায় নির্বাচন পরিচালিত করেছে। ২৭ মার্চ থেকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত দীর্ঘ সময় ধরে এই রাজ্যে ভোট গ্রহণ হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে তামিলনাড়ু, কেরলস পদুচেরি ও অসমের প্রসঙ্গও উত্থাপন করে বলেছেন, সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিতে দ্রুততার সঙ্গে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগে বলা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট সতর্ক করার পেরও কমিশন আসন্ন বিপর্যয়ের সমস্ত প্রমাণ ইচ্ছেকৃতভাবে উপেক্ষা করছিল। সব মিলিয়ে কাজল সিনহার স্ত্রীর মূল অভিযোগ তাঁর স্বামীর মৃত্যুর জন্য মূলত নির্বাচন কমিশনই দায়ি।
পাঁচ রাজ্যের নির্বাচন নিয়ে মাদ্রাজ হাইকোর্ট নির্বাচন কমিশনকে তুলোধনা করার দুদিনের পরেই কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন প্রয়াত তৃণমূল নেতার স্ত্রী। মাদ্রাজ হাইকোর্ট নির্বাচন কমিশনকে খুনের সঙ্গে তুলনা করেছিল। পাশাপাশি গোটা দেশে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকেও দায়ি করেছিল। মাদ্রাজ হাইকোর্টের বক্তব্যের প্রতিফলনই দেখা গেছে কাজল সিনহার স্ত্রীর অভিযোগ। অন্যদিকে করোনাকালে আট দফা নির্বাচন নিয়ে প্রথম থেকেই আপত্তি জানিয়ে সরব হয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। বিজেপি অঙ্গুলিহেলনেই কমিশন বাংলার আট দফায় নির্বাচন করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। একাধিক জনসভাতেই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন মমতা। করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় তরঙ্গ দেশের সঙ্গে রাজ্যে আছড়ে পড়ার পরেও দুদুবার বাকি দফার নির্বাচন একসঙ্গে করার আর্জি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। তবে তারপরেও নির্বাচন হচ্ছে আট দফায়। তবে মাদ্রাজ হাইকোর্টের উষ্মা প্রকাশের পর কিছুটা হলেও সংক্রমণ রুখতে কড়া পদক্ষেপ করেছে নির্বাচন কমিশন। কলকাতা হাইকোর্টের সতর্কতার পরই এই রাজ্যে বড় জনসভা ও রোড শো করার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। তবে ভোট প্রচারে রাজনৈতিক দলগুলি নির্বাচন কমিশনের করোনাবিধি মানেনি বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।