ব্লাড ক্যানসার-এর উপর করোনা-র ঘা, সবাইকে হারিয়ে জয়ী হল পুরুলিয়ার পুঁচকে

তার লড়াইটা ছিল বহুমুখী
সবকটা বাধা টপকে জিতে গেল ৫ বছরের পুঁচকে

তার লড়াইয়ে মুগ্ধ ডাক্তার, পুলিশ সকলে

তবে লড়াই কম ছিল না তার বাবা-মা'এরও

 

amartya lahiri | Published : Jun 22, 2020 3:13 PM IST / Updated: Jun 22 2020, 08:44 PM IST

শত্রু একটা নয়। লড়াইটা ছিল তার বহুমুখী। করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছিল। দেহে ছিল ব্লাড ক্যানসারের মতো অসুখ। আর ছিল পরিবারের চরম দারিদ্র। কিন্তু, এই সবকটা বাধা টপকে জিতে গেল ৫ বছরের পুচকে ছেলেটা। যাকে সাাধুবাদ জানাচ্ছেন ডাক্তার, পুলিশ সকলে।

পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামে তাদের বাড়ি। সেখানে পরিবারের সামান্য কিছু জমি আছে। তাতে যা ফসল হয়, তা বিক্রি করে সংসার চলে না। তাই চাষের পাশাপাশি দিনমজুর হিসাবে খাটে তার বাবা-মা, শত্রুঘ্ন সিং সর্দার এবং গুরুবরী সিং সর্দার। দেড় বছর আগে তাদের চার সন্তানের সবচেয়ে ছোটটির ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়ে। তারপর থেকেই কলকাতার এক ক্যানসার হাসপাতালে কোনওরকমে ছেলের চিকিৎসা করাচ্ছিলেন তাঁরা। এরমধ্যে সেখানে সে ভর্তিও ছিল। গত ৩০ মে তার উপর সে করোনা পজিটিভ বের হতেই গুরুবরী আর শত্রুঘ্ন-র  মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছিল।

তবে সেই সময় ক্যানসার হাসপাতালের ডাক্তাররা তাদের সাহস জুগিয়েছিলেন। তাদের সন্তানকে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। তারপর থেকে চলেছে তাদের লড়াই। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে ৫ বছরেরে ছেলেটা যেমন লড়েছে, তেমন তার মা-বাবাও। গুরুবরী ছিলেন, কলকাতায়, অসুস্থ ছেলের কাছে। কোভিড ওয়ার্ডে, তাঁর ছেলের মতোই এক শিশুর অবস্থা খুব খারাপ হতেও দেখতে হয়েছে। অন্যদিকে, গ্রামের বাড়িতে বাকি সন্তানদের সামলেছেন শত্রুঘ্ন। নিজেদের ফোনও নেই, প্রতিবেশির থেকে ধার করা ফোনে স্ত্রীকে মনোবল দিতেন।

অবশেষে, গত ১৫ জুন তাদের আশঙ্কা দূর হয়। আবার খোলা মনে শ্বাস নিতে পারেন তাঁরা। ওই দিন তাদের ছোট ছেলে সম্পূর্ণ করোনামুক্ত বলে ঘোষণা করেছিলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তাররা। ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন গুরুবরী সিং সর্দার। ডাক্তারবাবুদের পরামর্শ মতো এখন ১৪টা দিন সপরিবারে তাঁরা হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন। আর ছোট্ট ছেলেটার সসাহসে মুগ্ধ হয়ে তাঁদের খাওয়ার দায়িত্ব নিয়েছে পুরুলিয়ার বড়বাজার থানা।

*ছবি প্রতিনিধিত্বমূলক

Share this article
click me!