বুদ্ধদেব পাত্র, পুরুলিয়া- দিনভর খাটা খাটুনির পর যে টুকর রোজগার হত, তা দিয়ে সংসার চলত শঙ্খা রজকের। কিন্তু করোনা মোকাবিলায় লকডাউনে সেভাবে আর কাজ জোটে না। পনেরো দিনে রোজগার মাত্র পঞ্চাশ টাকা। তাই দিয়ে কোনও রকমে টেনে টুনে সংসার চলছিল শঙ্খা রজকের। করোনা তাঁদের আগেই আধমরা করে দিয়েছিল। কিন্তু অবস্থায় তাঁদের নতুন করে আশঙ্কার মেঘ ভেঙে পড়ল। টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ভেঙে পড়েছে জরাজীর্ণ বাড়িটিও।
শঙ্খা রজক। পুরুলিয়ার বাগমুণ্ডি ব্লকের সিন্দ্রি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিন্দ্রি নমোপাড়া গ্রামের বাসিন্দা তিনি। তাঁর একমাত্র জরাজীর্ণ কাঁচাবাড়ি ভেঙে পড়ায় মাথা গোঁজার জায়গাটাও এখন নেই। কয়েক দিন আগে টানা বৃষ্টিতে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে তাঁর কাঁচাবাড়ি। তাই প্রশাসনের কাছে তাঁর ঘর তৈরির জন্য আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
শঙ্খা রজক বলেন, ''রাত তখন প্রায় বারোটা। বাইরে প্রচুর বৃষ্টি পড়ছিল। সেই সময় ঘুমন্ত অবস্থায় আচমকা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বাড়িটি। অল্পের জন্য রক্ষা পায় তাঁর পরিবার। যদিও কেউ কেউ সামান্য আঘাতও পেয়েছেন। সকাল হতেই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য রামহরি কুইরিকে জানিয়েছি। ''
তিনি আরও বলেন, '' ১৫ দিনে রোজগার হয়েছে মাত্র ৫০ টাকা। বেশ কয়েক দিন ধরে পরিবারের অন্যরাও জ্বরে ভুগছে। এই অবস্থায় ঘর বানাবো কীভাবে? আর ডাক্তার দেখানোর টাকা কোথায়? ''
পঞ্চায়েত সদস্য রামহরি কুইরি জানান, শঙ্কা রজকের কাঁচা বাড়িটি বৃষ্টির কারনে ভেঙে পড়েছে। সিন্দ্রি গ্রাম পঞ্চায়েত ও বাগমুণ্ডি ব্লকে বিষয়টি জানানো হবে। প্রশাসনের কাছে আবেদন করব. তাড়াতাড়ি যেন তার ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়। জানালেন পঞ্চায়েত সদস্য।
কোনও রকম দিন গুজরান শঙ্খা রজকের পরিবারের। কাজ না থাকায় কষ্টের মধ্য়ে শিশুকে সঙ্গে দিন কাটছে পরিবারের। কাতর কণ্ঠে তিনি জানালেন, 'দিনে বেঁচে রাতে মরণকে সঙ্গী করে কোনও রকমে রয়েছি'।