দু'মিনিট নয়, মাত্র ৩০ সেকেন্ডেই শরীরের যেকোনও ক্ষতস্থান থেকে রক্তক্ষরণ বন্ধ করে যাবে! অভিনব পাউডার আবিষ্কার করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বর্ধমানে সাবির হোসেন। কৃতিত্বের স্বীকৃতিও পেয়েছেন তিনি। দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে এক অনুষ্ঠানে সাবিরকে সম্মানিত করেছে ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভালমেন্ট অর্গাইজেশন বা ডিআরডিও। বাংলার তরুণ বিজ্ঞানীর হাতে পুরষ্কার ও মানপত্র তুলে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং।
শরীরের ভিতরে হোক কিংবা বাইরে, দ্রুত রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে না পারলে, কিন্তু রোগীর মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। তবে যে পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হয় বা যে ওষুধ দেওয়া হয়, তাতে রক্তরক্ষণ বন্ধ হতে কমপক্ষে ২ মিনিট সময় তো লাগেই। বর্ধমানের সাবির হোসেনের আবিষ্কার চিরাচরিত সেই ধারণাটা বদলে দিয়েছে। কী রকম? 'স্টপ ব্লিড' নামে এক অভিনব পাউডার আবিষ্কার করেছেন তিনি। এই পাউডার ব্যবহার করলে মাত্র ৩০ সেকেন্ডেই বন্ধ হয়ে যাবে রক্তরক্ষণ। শুধু তাই নয়, বাজার চলতি যেকোনও সলিউশন বা পাউডারের থেকে আশি শতাংশ কম খরচে তৈরি করে ফেলা যাবে এই 'স্টপ ব্লিড' পাউডার।
পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের বাদুলিয়া গ্রামে আদিবাড়ি। তবে বাবা-মায়ের সঙ্গে বর্ধমানের শহরের রসিকপুরে থাকেন সাবির হোসেন। বাবা রাইসমিলের মালিক, মা গৃহবধূ। সম্পন্ন পরিবারের ছেলেটি পড়াশোনায় বরাবরই মেধাবী। খণ্ডঘোষের আনন্দমার্গ স্কুলে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন সাবির। তারপর ভর্তি হন বর্ধমানের সিএমএস হাইস্কুলে। উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে কলকাতায় চলে যান সাবির। কলকাতার সেন্ট থমাস ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ছাত্র ছিলেন তিনি। ওড়িশার রাউরকেল্লা এনআইটি-তে পড়ার সময়ে দ্রুত রক্তক্ষরণ বন্ধে এই অভিনব পাউডারটি আবিষ্কার করে ফেলেন সাবির হোসেন। জানা গিয়েছে, যখন রাউরকেল্লার এনআইটি-এর ছাত্র ছিলেন, তখন সেখানকার অধ্য়াপক দেবেন্দ্র ভার্মার সংস্পর্শে আসেন সাবির। তাঁরই অনুপ্রেরণায় ভুবনেশ্বরে নিজের একটি ল্যাবোরেটরি খোলেন তিনি। তখনই গবেষণা করে নতুন কিছু আবিষ্কারের ভাবনা মাথায় আসে। সেই ভাবনারই ফল 'স্টপ ব্লিড' পাউডার।