নাগরিকত্ব আইন নিয়ে উদাসীন উদ্বাস্তু সুভাষিণী, ৯৬ বছরের বৃদ্ধার চিন্তা ছেলেকে নিয়েই

  • হুগলির চুঁচুড়ার বাসিন্দা সুভাষিণী চট্টোপাধ্যায়
  • ৯৬ বছরের বৃদ্ধাকে নাড়া দেয় না নাগরিকত্ব আইন
  • ছেলের ভাবনতাতেই দিন কাটে বৃদ্ধার
  • প্রায় দিনই অভুক্ত থাকতে হয় তাঁকে
     

debamoy ghosh | Published : Dec 22, 2019 4:12 PM IST / Updated: Dec 22 2019, 09:49 PM IST

উত্তম দত্ত, হুগলি: উদ্বাস্তু হিসেবে প্রায় পঞ্চান্ন বছর আগে এ দেশে এসেছিলেন। নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দেশ জুড়ে তোলপাড় হলেও তা নিয়ে বিন্দুমাত্র ভাবিত নন ৯৬ বছরের সুভাষিণী চট্টোপাধ্যায়। হুগলির চুঁচুড়ার বাসিন্দা বৃদ্ধার যাবতীয় চিন্তা যে তাঁর ক্যান্সার আক্রান্ত ছেলেকে নিয়েই। দিল্লিতে চিকিৎসাধীন সেই ছেলের চিকিৎসার খরচ জোগাতেই এই বয়সে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে তাঁকে। অর্ধেক দিন কাটে অনাহারে। 

বয়সের ভারে ভাল করে হাঁটাচলা করতে পারেন না। কিন্তু মায়ের মন যে শারীরিক প্রতিকূলতাকে সহজেই জয় করে নিতে পারে। ১৯৬৪ সালে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা থেকে হুগলিতে চলে এসেছিলেন স্বামী- সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে। এরপর চুঁচুড়ার কাপাসডাঙায় বসবাস শুরু করেন। বছর কুড়ি আগে স্বামী মহেন্দ্রনাথের মৃত্যু হয়। 

Latest Videos

ততদিনে তিন ছেলে আলাদা সংসার করেছে। মা নিজেরটা নিজেই চালিয়ে নেন,ছেলেরাও দিনমজুর হিসেবে কাজ শুরু করে আলাদা সংসার পাতেন। তাই তাঁরাও মায়ের খুব একটা খোঁজ নিতেন না। মেজো ছেলে অনিলের গলায় ক্যান্সার ধরা পরে বছর খানেক আগে। স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা শুরু করেন তিনি। মাস তিনেক আগে দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স- এ ভর্তি করা হয় তাঁকে। দিল্লিতে সুভাষিণীদেবীর মেয়ে পরিচারিকার কাজ করে। তিনিই বছর সাতষট্টির অনিলের ভর্তির ব্যাবস্থা করেন। কিন্তু চিকিৎসার খরচ চলবে কী করে। অশক্ত শরীরে ছেলের চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে বেরিয়ে পড়েন সুভাষিণীদেবী। লোকের কাছে যা পান, দু'- তিন হাজার টাকা জমা করে মেয়ের কাছে পাঠিয়ে দেন। নিজের বার্ধক্য ভাতার টাকাও দিয়ে দেন ছেলের জন্য।

এই বয়সে যা জোটে তাই দুটো ফুটিয়ে নেন। অর্ধেক দিন তাঁর খাওয়া জোটে না । ছেলের জন্য বড্ড ভাবনা তাঁর। হাড় কাঁপানো  ঠান্ডায় জবুথবু অবস্থা। তা সত্ত্বেও নিজের জন্য কোনও গরম পোশাক কেনার কথা মাথাতেও আসে না তাঁর।  এর মধ্যে এনআরসি এবং নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সারা দেশ তোলপাড়। এক সময় রিফিউজি ছিলেন তাই চিন্তা হওয়ারই কথা। কিন্তু সেসব ভাবনা নেই সুভাষিণী চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁর মনে শুধু একটাই চিন্তা , ছেলেটা আবার কথা বলতে পারবে তো, ছেলেটা বাড়ি ফিরবে তো, এই ভেবে ভেবেই চোখ ভিজে ওঠে তাঁর।
 

Share this article
click me!

Latest Videos

'ওদের টার্গেট মহিলা আর হিন্দু' তৃণমূল বিধায়কদের উপর হামলার কড়া প্রতিক্রিয়া শুভেন্দুর
মহিলাদের সুরক্ষায় ‘অভয়া প্লাস’! রাজ্যপালের ২ বছর পূর্তিতে ৯টি প্রকল্পের সুভারম্ভ | CV Anand Bose
মহিলাদের নিরাপত্তায় বড় উদ্যোগ! ফ্রী ক্যারাটে প্রশিক্ষণ শিবির রাজ্যজুড়ে! | RG Kar
'তৃণমূল নেতারা দু-তিন বার বাড়ি পেলেও বারবার আমরা বঞ্চিত' ক্ষোভে ফুসছে মুর্শিদাবাদবাসী
অন্ধকারে মশাল হাতে আগমেশ্বরী মাতার নিরঞ্জন! Shantipur-এর রাজপথে ভক্তদের জোয়ার | Kali Puja 2024