ভুয়ো আই এএস দেবাঞ্জনের পর এবার পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিক পরিচয় দিয়ে লক্ষাধিক টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠল নিউ ব্যারাকপুরে। কখনো সিআইডি অফিসার, কখনো কোনো থানার আইসি বা ব্যারাকপুর কমিশনারেট উচ্চ আধিকারিকের ঘনিষ্ট পরিচয় দিয়ে সরকারি টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে। পুলিশের সহযোগিতা না পেয়ে ব্যারাকপুর আদালতের দ্বারস্থ মধ্যমগ্রাম বাসিন্দা প্রতারিত ব্যক্তি অর্কপ্রভ মজুমদার।
অর্ক বাবুর কয়েক বছর আগে রিচার্ড গ্যাসপার নামক এক ব্যক্তির সাথে পরিচয় হয় যিনি নিজেকে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের উচ্চপদস্থ আধিকারিকের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচয় দেন। তাকে ব্যবসায়িক সূত্রে রাস্তার লাইট লাগানোর সরকারি টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে এবং ধাপে ধাপে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ। যখন তিনি বুঝতে পারেন যে সে প্রতারিত হয়েছে, তখন টাকা ফেরত চাইলে অভিযুক্ত রিচার্ড গ্যাসপার ও তার দুই সঙ্গী শুভ্রনীল দত্ত ও উমেশ ঝা অর্কপ্রভ এবং তার পরিবারের প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। এমনকি বাড়ীতে কয়েক জন দুষ্কৃতী পাঠিয়ে অপহরণ করার হুমকি দেয়।
এরপরও ভয় দেখিয়ে উল্টে আরো দেড় কোটি টাকা দাবি করে । এছাড়াও একটি সাদা কাগজে জোরপূর্বক অর্কপ্রভ মজুমদারের দস্তাক্ষর করে নেয় বলে অভিযোগ। পরবর্তী কালে এই বিষয় নিয়ে একাধিক বার নিউব্যারাকপুর থানার দ্বারস্থ হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা পায় নি। উপরন্তু থানার পক্ষ থেকে তার সাথে দুর্ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ। এরপর আইনজীবীর সহযোগিতায় ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটে বিষয়টি সম্পূর্ণ বিবরণ দিয়ে দুই বার চিঠি পাঠানো হলেও, কমিশনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি বলে জানান অভিযোগকারী ।
পরে ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন তিনি এবং পুলিশের দুর্ব্যবহার ও গতিবিধি নিয়ে মামলাটি শুরু হয়। বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে বলে জানালেন আইনজীবি অরিজিৎ রায়। তিনি আরো বলেন, যেভাবে উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের পরিচয় নিয়ে প্রতারণা চলছে, এই ঘটনা দেবাঞ্জন কান্ডের পর আরেক উৎকৃষ্ট উদাহরণ। পুলিশ কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না তা দুর্ভাগ্যজনক এর মধ্যে কোন অসাধু যোগ রয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন আইনজীবী।