বাংলায় কাজ জুটবে কি, কাশ্মীরেই ফিরতে চান সাবিরুল- জামালরা

  • কাশ্মীর থেকেও ফিরেও চিন্তায় বাঙালি শ্রমিকরা
  • রাজ্যে কর্মসংস্থান নিয়ে নিশ্চিত নন
  • ফের কাশ্মীরেই ফিরে যেতে চান অনেক শ্রমিক
  • সোমবারই সরকারি উদ্যোগে ফিরে এসেছেন তাঁরা
     

প্রাণের নিশ্চয়তা হয়তো পাওয়া গিয়েছে, কিন্তু পেটের কথা ভাবলেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ছে সাবিরুল ইসলাম, জামাল আলিদের। সোমবারই রাজ্য সরকারের উদ্যোগে কাশ্মীর থে্কে ফেরানো হয়েছে কাশ্মীরে কর্মরত এই বাঙালি শ্রমিকদের। কিন্তু পেটের দায়েই ফের কাশ্মীরে ফিরতে চান সাবিরুল, জামালরা। কারণ এরাজ্যে আদৌ তাঁদের কোনও কর্মসংস্থান হবে কি না, তাই নিয়েই সন্দেহে ফিরে আসা শ্রমিকরা। 

কাশ্মীরের কুলগামে পাঁচ বাঙালি শ্রমিককে গুলি করে মেরেছিল জঙ্গিরা। তারপরেই সেখানে কর্মরত সমস্ত বাঙালি শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করে রাজ্য সরকার। ফিরে আসা শ্রমিকদের মধ্যে অনেকেই উত্তর এবং দক্ষিণ দিনাজপুরের বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যেই অন্যতম সতেরো বছরের সাবিরুল ইসলাম। 

Latest Videos

মাত্র সতেরো বছর বয়সের সাবিরুলকে সংসারের কথা ভেবেই কাশ্মীরে কাজ করতে পাঠিয়েছিলেন তাঁর বাবা। কাশ্মীরে সাবিরুলের মামা ঠিকাদারের কাজ করে। তাঁরই পরামর্শে সেখানে গিয়ে প্লাইউড কারখানায় কাজ করছিল ওই কিশোর। কাশ্মীরে মাসে আঠারো হাজার টাকা করে বেতন পেত সাবিরুল। তার বেশিরভাগটাই পাঠিয়ে দিত বাড়িতে। কিন্তু পরিস্থিতির চাপে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছে সে। সাবিরুলের কথায়, 'এখানে দিনে মাত্র একশো, দেড়শো টাকা করে পাই। তাই দিয়ে সংসার চলে না। সেই কারণেই কাশ্মীর গিয়েছিলাম। পরিস্থিতি ভাল হলে আবার হয়তো ওখানেই ফিরব।'

একই কথা বলছেন সাবিরুলের বাবা দাবিরুদ্দিন ইসলামও। তিনি বলেন, 'ওখানে যা পরিস্থিতি, তাতে ছেলেকে ফিরে আসতে বললাম। এক, দু' মাস এখানে থাকুক। তার পর হয়তো আবার কাশ্মীরেই ফেরত পাঠাতে হবে। না হলে তো আমাদের সংসার চলবে না।'

সাবিরুলের মতো একই কথা বলছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের বাসিন্দা জামাল আলিও। কাশ্মীরে কর্মরত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মোট একশো বারোজন শ্রমিককে সোমবার কলকাতায় ফিরিয়ে এনে বাসে করে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। তার মধ্যেই অন্যতম ছিলেন জামাল। বাড়িতে তিন সন্তান, স্ত্রী এবং বৃদ্ধ বাবা রয়েছেন। কাশ্মীর থেকে প্রাণ নিয়ে ফিরলেও সংসারের কথা ভাবলেই তাই মুখের হাসি শুকিয়ে যাচ্ছে জামালের। কারণ, সংসারের একমাত্র রোজগেরে তিনিই। কাশ্মীরে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করে বেতন বাবদ পাওয়া টাকা প্রতিমাসে বাড়িতে পাঠাতেন। তাতেই সংসার চলত। কিন্তু আপাতত ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। জামাল তাই রাখঢাক না করেই বলছেন, পরিস্থিতি একটু ভাল হলেই ফের কাশ্মীর ফিরতে চান। এ দিন বালুরঘাটে পৌঁছে ওই শ্রমিক বলেন, '২০০১ সাল থেকে কাশ্মীরে কাজ করছি। ওখানে প্লাইউড কারখানায় কাজ করতাম। এখানে  একশো টাকা, দেড়শো টাকা রোজগার হলে কী করে সংসার চালাব? কী করব সেটাই তো ভেবে পাচ্ছি না। তাই পরিস্থিতি একটু ভাল হলেই কাশ্মীরে ফিরে যাব।'

এ দিন ভোরে বুনিয়াদপুর বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছনোর পরে জেলা প্রশাসনের তরফে শ্রমিকদের প্রাথমিকভাবে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের পাশাপাশি তৃণমূল নেতৃত্বও উপস্থিত ছিলেন। হাজির ছিলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি অর্পিতা ঘোষ। গঙ্গারামপুরের মহকুমাশাসক দেবাঞ্জন রায় জানান, কাশ্মীর থেকে ফিরে আসা শ্রমিকদের একশো দিনের কাজের সুযোগ দেওয়া হবে। অন্যান্য প্রকল্পেও তাঁদের সুবিধে দেওয়া হবে বলে জানান ওই সরকারি আধিকারিক। 
 

Share this article
click me!

Latest Videos

WB By Election Result: Naihati-তে সবুজ ঝড়! এক ধাক্কায় এগিয়ে TMC! উল্লাসের আমেজ গোটা এলাকায়
গান্ধীমূর্তিতে শ্রদ্ধা নিবেদন থেকে Guyana সংসদে ভাষণ, এক ঝলকে দেখুন প্রধানমন্ত্রীর (Modi) গায়ানা সফর
খেলতে খেলতেই ঘটলো অঘটন! শোকের ছায়া Shantipur-এ, দেখুন | Nadia News Today
WB By Election: ‘Madarihat-এ যেই ফলাফলটা হয়েছে সেটা প্রত্যাশিত নয়!’ এ কী বললেন Samik Bhattacharya
PM Modi Live : প্রধানমন্ত্রী মোদীর বড় ঘোষণা! সরাসরি দেখুন