সোমবার কলকাতার একটি হোটেলে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা নিয়ে শাসকদলে যোগ দেন তন্ময় ঘোষ। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণার পরই ৫ মার্চ বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
গ্রেফতারির ভয় দেখিয়ে বিজেপি বিধায়ককে দলবদল করানো হয়েছে। সোমবার বিষ্ণুপুরের বিজেপি বিধায়ক তন্ময় ঘোষের তৃণমূলে যোগদানের ঘটনায় এই অভিযোগ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
সোমবার কলকাতার একটি হোটেলে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা নিয়ে শাসকদলে যোগ দেন তন্ময় ঘোষ। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণার পরই ৫ মার্চ বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ৬ মার্চ তাঁকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছিল বিজেপি। এরপর বিজেপির টিকিটে বিষ্ণুপুর থেকে জিতে বিধায়ক হন তিনি। তাঁর দলবদল প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, "আমি তন্ময় ঘোষকে চিঠি দেব। তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান ব্যাখ্যা করার জন্য। জানি তিনি কোনও উত্তর দিতে পারবেন না। তিনি অপেক্ষা করছিলেন। মুকুল রায়ের দলত্যাগ ও পিএসি চেয়ারম্যান পদ নিয়ে যে মামলাটি চলছে তার গতিপ্রকৃতি দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন ভেবেছিলেন। কিন্তু, তিনি একটু তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কারণ এখানকার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামাপদ মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই কারণে জন্মাষ্টমীর দিন তড়িঘড়ি গিয়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন তিনি। কারণ পুলিশ তাঁকে গ্রেফতারির ভয় দেখাচ্ছিল।"
আরও পড়ুন, 'জগদ্ধাত্রী পুজো পর্যন্ত উপনির্বাচন নয়', শাসকদলের চাপ বাড়িয়ে টুইট তথাগতর
একুশের নির্বাচনে বাংলায় ২০০টি আসন জিতে ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখেছিল বিজেপি। কিন্তু, ৭৭-এই থেমে গিয়েছিল তাদের বিজয় রথ। এদিকে নির্বাচনের পর একের পর এক বিধায়ক যোগ দিচ্ছেন শাসকদলে। এর ফলে ৭৭ থেকে সংখ্যাটা এখন কমে হয়েছে ৭৩। ফলে তন্ময় ঘোষের দলবদল বিজেপির কাছে একটা ধাক্কা বলাই যায়। আর এই দলবদলের খবর পেয়েই একাধিক কর্মসূচি বাতিল করে বিষ্ণুপুরে যান শুভেন্দু। যদিও তাঁর দাবি, তন্ময় বিষ্ণুপুর থেকে বিজেপির প্রতীকে জিতলেও গত চার মাস ধরে দলের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক ছিল না। দলের কোনও কর্মসূচিতেও দেখা যায়নি তাঁকে। মুকুল রায়ের দলবদলের পর থেকেই দলত্যাগের চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন- 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথেই বিষ্ণুপুরের উন্নয়ন করব', তৃণমূলে যোগ দিলেন BJP বিধায়ক
তবে দলবদল করলেও বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেননি তন্ময়। আর তা নিয়ে তাঁকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, "তাঁর মত বদলের অধিকার আছে। কিন্তু বিধায়ক পদে পদত্যাগপত্র দিয়ে করলে কিছু বলার ছিল না। আগামীকাল পরিষদীয় দলনেতা হিসেবে তন্ময় ঘোষকে চিঠি দেব তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য। মুকুল রায়ের মতো তাঁর বিরুদ্ধেও দলত্যাগ বিরোধী আইনে অভিযোগ দায়ের হবে।"
এদিকে পুলিশের ভয় দেখিয়ে বিধায়ককে দলবদল করানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। এনিয়ে টুইটারে শুভেন্দুকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি লেখেন, "পেগাসাস অধিকারী বলছে অমুক বিধায়ক কেসের ভয়ে চলে গেছে। ও নাকি চিঠি দিয়ে জানতে চাইবে কোন দলে আছে। বলি, অধিকারীবাড়িতে কি আয়না নেই?"