মমতার ধাক্কা, বিজেপি-তে বিধায়ক চম্প্রামারি ও দিনাজপুরের বিপ্লব

  • দক্ষিণ দিনাজপুরে বিজেপি এবার লোকসভা নির্বাচনে ভালো ফল করেছে 
  • বালুরঘাট লোকসভা আসনটি এসেছে বিজেপি-র দখলে 
  • দীর্ঘদিন বাম আধিপত্য থাকার পর দক্ষিণ দিনাজপুরে তৃণমূল জায়গা পেয়েছিল
  • এবার আস্তে তৃণমূলকে সরিয়ে জায়গা করে নিচ্ছে বিজেপি 

Indrani Mukherjee | Published : Jun 24, 2019 1:06 PM IST / Updated: Jun 24 2019, 08:31 PM IST

জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ফের নতুন দল খুঁজে নিলেন বিপ্লব মিত্র। আর সেই সঙ্গে বিজেপি-কে উপহার হিসাবে তুলে দিতে চলেছেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ। লোকসভা নির্বাচনের পর বিজেপি-র এটা অন্যতম বড়় সাফল্য। এর আগে বিজেপি এই রাজ্যে কোনও জেলা পরিষদ দখল করতে পারেনি। কিন্তু, দক্ষিণ দিনাজপুরে তৃণমূলের একলব্য বিপ্লব মিত্র-র হাত ধরে সেই খাতাটা খুলে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু করে দিল বিজেপি। সোমবার, সপ্তাহের শুরুর দিনেই দিল্লিতে বিজেপি-তে যোগ দেন বিপ্লব মিত্র। তাঁর সঙ্গে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে নাম লেখান আরও ৯জন। এঁরা সকলেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদে বিজেপি-র সদস্য। এছাড়াও জেলা পরিষদের আরও ৮  তৃণণমূল সদস্য নীতিগতভাবে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন বলে এদিন দিল্লিতে বিজেপি সদর দফতরে সাংবাদিক সম্মেলনে জানান রাজ্যে বিজেপি-র পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। এই ৮জনেরও এদিন দিল্লিতে থাকার কথা ছিল। কিন্তু, কিছু কারণবশত তাঁরা আসতে পারেননি বলেই জানান তিনি। 

এদিন দিল্লিতে বিপ্লব মিত্রদের দলবদলের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং, বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ, বিজেপি নেতা মুকুল রায় এবং রাজ্যে বিজেপি-র পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূল কংগ্রেসে এলেও বিপ্লব মিত্র দীর্ঘদিন ধরেই কোণঠাসা ছিলেন নিজের দলে। দক্ষিণ দিনাজপুরে আরএসপি ও সিপিএম-এর একাধিপত্যে একমাত্র শক্তিশালী বিরোধী নেতা হিসাবেই নাম ছিল বিপ্লব মিত্রের। কিন্তু, তৃণণমূল কংগ্রেসে সেভাবে কোনও মূল্যই তিনি পাননি বলে অভিযোগ। উল্টে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শঙ্কর চক্রবর্তী-র মতো আনকোড়া রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের হাতেই দক্ষিণ দিনাজপুরে দলের রাশ তুলে দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অর্পিতা ঘোষকে কলকাতা থেকে নিয়ে গিয়ে বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করেছিলেন, কিন্তু বিপ্লবকে তিনি ব্রাত্য করে রেখেছিলেন। যদিও, অনেকটা একলব্যের মতোই হাজারো অবহেলাতেও মমতা থেকে আস্থা সরাননি তিনি। এবার লোকসভা নির্বাচনে অর্পিতা ঘোষকে ফের প্রার্থী করতে বিপ্লবের ক্ষোভ বিদ্রোহে পরিণত হয়েছিল। রাজনৈতিক মহলের দাবি, বিপ্লবের এই ক্ষোভকেই কাজে লাগিয়েছে বিজেপি। তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীকোন্দলকে কাজে লাগিয়ে সুকান্ত মজুমদারের মতো এক অখ্যাত মুখকে লোকসভা নির্বাচনে জিতিয়ে নিয়ে এসেছে বিজেপি। বিপ্লব মিত্র ও তাঁর লবির বিরুদ্ধে লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরে দল বিরোধী কাজের অভিযোগ এনেছিল তৃণূল কংগ্রেসের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী। এরপর থেকে যত দিন গিয়েছে ততই বিপ্লব মিত্র-এর দল ছাড়ার বিষয়টি নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছিল। 

বিপ্লব মিত্র-র সঙ্গে এদিন তৃণমূল ছেড়েছেন উইলসন চম্প্রামারিও। কালচিনি বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক তিনি। চম্প্রামারি জানিয়েছেন, আরও বহু তৃণমূল নেতা ও কর্মী বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন। এরা সকলেই বিজেপি হাইকম্যান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলেও দাবি করেন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যাওয়া বিধায়ক চম্প্রামারি। তাঁর সঙ্গে ১৮ জন কাউন্সিলরও এদিন বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন। বিপ্লব মিত্রর সঙ্গে গঙ্গারামপুর পুরসভারও অধিকাংশ কাউন্সিলর বিজেপি-তে যোগ দেন। বিজেপি নেতা মুকুল রায় দাবি করেন খুব শিগগিরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় সংখ্যা গরিষ্ঠতা হারাতে চলেছেন। তিনি আরও দাবি করে জানান, বিজেপি-র হাতে আরও তিনটি পুরসভার দখল আসতে চলেছে। 

Share this article
click me!