শ্মশানে মৃত বৃদ্ধার শরীরে প্রানের স্পন্দন। না অগ্রদাণী বাংলা ছবিও নয় যে মৃতদেহ খাট থেকে উঠে বসে বলবেন, 'ওগো কাঁদছ কেন, এই তো আমি।' আবার শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লালুর গল্পও হচ্ছে না। এ ঘটনা একেবারে রূঢ় বাস্তব। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল তারাপীঠ মহা শ্মশানে। খবর পেয়ে তারাপীঠ থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
আরও পড়ুন, কোভিডে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা পড়তেই চটে লাল অভিষেক, কমিশনকে তোপ তৃণমূলের যুবরাজের
আশি উর্ধ্ব মৃত বৃদ্ধার নাম সরস্বতী চক্রবর্তী। বাড়ি তারাপীঠ বামদেবপল্লী। বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে বেশ কিছু দিন ধরে বাড়ির মধ্যেই ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার বাড়ির লোকজন বৃদ্ধাকে নিয়ে তারাপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের যান। সেখানে চিকিৎসা করিয়ে ফের বাড়িতে নিয়ে আসেন। বাড়িতে ফেরার পর বৃদ্ধার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে থাকে। শুক্রবার ভোরের দিকে বাড়িতেই তাঁর মৃত্যু হয়। এরপর মৃত বৃদ্ধার বাড়ির লোকজন এবং নিকট আত্মীয়রা তারাপীঠ শ্মশানে শবদাহ এবং ক্রিয়াকর্মের ব্যবস্থা করে। সেখানেই মুখাগ্নির কাজ চলছিল। আরেক দিকে কাঠের চিতা সাজানোর কাজ চলছিল। মুখাগ্নির সময় একজন দেখেন মহিলা নিজেই হাত ভাঁজ করছেন। পা নড়াচ্ছেন। শরীর একদম নরম। এই কথা রটতেই আশেপাশের উৎসুক লোকজন ভিড় জমান শ্মশানে। দ্রুত খবর যায় তারাপীঠ থানায়। এরপরেই পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
আরও পড়ুন, করোনার বড় থাবা পুলিশ মহলে, আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে পুলিশ সুপার সহ পরিবার
মৃত বৃদ্ধার নাতি কাজল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,'শ্মশানে মুখাগ্নির সময় কেউ কেউ বলছে জীবিত রয়েছেন। কিছুক্ষণের মধ্যে গুজব কর্পূরের মতো ছড়িয়ে পড়ল। আমরা ডাক্তার নিয়ে এসেছিলাম। ডাক্তারের সহকারী সব দেখে বললেন বৃদ্ধা জীবিত নেই। এদিকে গুজব ছড়িয়ে পরায় পুলিশ কোন ঝুঁকি নীল না। পুলিশ এসে বলল সরকারিভাবে মৃত শংসাপত্র না পাওয়া পর্যন্ত দাহ করা যাবে না। এরপর পুলিশ মৃতদেহ রামপুরহাটে নিয়ে চলে যায়।' স্থানীয় হাতুড়ে চিকিৎসক দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'খবর পেয়ে আমি শ্মশানে গিয়েছিলাম। পেশার দেখলাম, অক্সিমিটার দিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করার পর দেখলাম দেহে প্রাণ নেই। ওদের পরিবারের কেউ হাতের পালস দেখে ভেবেছিল জীবিত রয়েছে। কিন্তু সেটা ঠিক নয়। পুলিশ এসে মৃতদেহ রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেল।'