লালগোলা কালী মন্দিরে শিকলে বাঁধা দেবী, জানেন এর ব্যাখ্য়া

  • দেবীকে এখানে বেঁধে রাখা হয়েছে শিকল দিয়ে
  • দুই শতাব্দী ধরে লালগোলা কালী মন্দিরে নাম সর্বত্র
  • কিন্তু কেন দেবী এখানে শিকল দিয়ে বাঁধা
  • কী ব্যাখা দিচ্ছেন পুরোহিত থেকে এলাকাবাসী


ইতিহাস ছাড়া মুর্শিদাবাদ যেন অসম্পূ্র্ণ। দুই শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে লালগোলা কালী মন্দিরের মা কালী পূজিত হয়ে আসছেন।বঙ্কিমচন্দ্র থেকে রামেন্দ্র সুন্দর ত্রিদেবী,কবি কাজী নজরুল ইসলামের মতো ব্যক্তিত্বদের আনাগোনা ছিল এখানে। মুর্শিদাবাদের লালগোলার শ্রীমন্তপুরের এই কালী মন্দিরের সুখ্যাতি এখন অন্যত্রও ছড়িয়ে পড়েছে।

সালটা সম্ভবত ১৭৯০। শোনা যায়, সেই সময় স্বপ্নাদেশে তৎকালীন লালগোলার রাজা রাও রামশঙ্কর  নির্দেশ পান,এই রাজ পরিবারের দ্বারা অধিষ্ঠিত হয়েই কালীমন্দির পূজিত হবেন দেবী। সেইমতো এই কালীমন্দিরের পিছন দিয়ে প্রবাহিত পদ্মার শাখা নদীতে হটাৎই একটি দেবীর কাঠামো ভাসতে দেখা যায়। পরে এতেই মাটি লাগিয়ে দেবীর প্রায় ৪ফুট উচ্চতার একটি মূর্তি তৈরি করা হয়। এলাকার পুরোহিত বছর পঁচাশির গঙ্গাদাস চ্যাটার্জি  জানান,মা কালী স্বপ্নাদেশ দিয়ে বলেছিলেন তৎকালীন রাজা যেন পূজার জন্যে বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমার মণ্ডল গ্রাম থেকে পুরহিত আনার ব্যাবস্থা করে। সেই নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন রাজা। 

Latest Videos

পরে ত্রৈলক্য ভট্টাচার্য ও ধর্মদাস পণ্ডিত নামের ওই দুই পূজারীকে এনে তাদের স্থায়ীভাবে বসবাসের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন রাজা রামশঙ্কার রাও। রাজার উত্তরসূরী যোগীন্দ নারায়ণ রায় আনুমানিক ১৯১৩ সাল নাগাদ মন্দির সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ করেন। এই মন্দির চত্বরের মধ্যেই মহাদেবের পূজার জন্য আলাদা শিবের মন্দিরও নির্মাণ করা হয়। এই কালী মন্দিরের  পুজোর মাহাত্ম্য় রয়েছে আরও। বছর বছর নতুন করে মাটি দিয়ে আলাদা আলাদা দেবীর মূর্তি নির্মাণ হয় না এখানে। সেই শতাব্দীপ্রাচীন একই মূর্তিতে চলে আসছে পূজা। তবে ওই প্রাচীন মূর্তি যাতে কোনওভাবেই ভেঙে না পরে,তার জন্য লোহার শিকল দিয়ে বাঁধা আছেন মা। যেই কারণে 'শৃঙ্খলিতা কালী' নামে ডাকা থাকে দেবীকে । 

অবশ্য এ ক্ষেত্রে একটি ভিন্ন মতও প্রচিলত আছে। দেবী পদ্মা থেকেই  স্বপ্নাদেশে ভেসে এসেছিলেন,আবার সেই পথ ধরেই পদ্মাতেই ফিরে যাচ্ছেন,আর তার ফিরে যাওয়া আটকাতে এই শেকলের ব্যবহার। এই মুর্শিদাবাদের লালগোলার কালীমন্দিরের চত্বরেই বসে বহরমপুরের সেই সময় দায়িত্বে থাকা ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তার 'আনন্দ মঠ' এর শেষ খণ্ড 'বন্দেমাতারাম' এখানেই রচনা করেছিলেন। এই মন্দিরেই এসেছিলেন রামেন্দ্র সুন্দর ত্রিদেবী,বিদ্যাসাগরের মতো মহা পণ্ডিতরা।  ঐতিহাসিক আর সম্প্রীতির মেল বন্ধানের মেল বন্ধনের ফল এই শতাব্দী প্রাচীন কালী মন্দির।

Share this article
click me!

Latest Videos

ট্যাব কেলেঙ্কারিতে নয়া মোড়! এবার পুলিশের জালে দিনহাটার এক শিক্ষক, দেখুন | Bengal Tab Scam
'ভাইপোকে উপড়ে ফেলবো' রুদ্রমূর্তিতে শুভেন্দু অধিকারী | Suvendu Adhikari | BJP | TMC
মহারাষ্ট্র কাঁপালেন শুভেন্দু! সনাতনীদের এক হওয়ার নির্দেশ রাজ্য সভাপতির | Suvendu Adhikari News Today
একাই ১০০! মহারাষ্ট্রে ভোটের খেলা ঘুরিয়ে দিলেন শুভেন্দু! যা বলে দিলেন... | Suvendu Adhikari
ফের গায়েব ট্যাবের টাকা! ক্ষুব্ধ বেগমপুর হাই স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা | Bengal Tab Scam | Hooghly News