খাদ্যনালীতে বিঁধে সুচ, জটিল অস্ত্রোপচারে প্রাণ বাঁচালেন বাঁকুড়ার চিকিৎসকরা

  • বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে জটিল অস্ত্রোপচার
  • রোগিণীর প্রাণ বাঁচালেন চিকিসকরা
  • খাদ্যনালী থেকে বের করা হলো সুচ

debojyoti AN | Published : Jan 24, 2020 12:17 PM IST / Updated: Jan 25 2020, 02:22 AM IST

পান্তা ভাতের মধ্যে ছিল ছোট্ট সুচ। বুঝতে না পেরে সেই পান্তা ভাত গিলতে গিয়েই গলায় সুচ আটকে বিপত্তি। শেষ পর্যন্ত বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের চিকিৎসকরা ২ ঘণ্টার জটিল অস্ত্রোপচারে প্রৌঢ়ার গলা থেকে বের করলেন সুচ। কার্ডিও থেরাসিক পরিকাঠামো না থাকা সত্ত্বেও ঝুঁকি নিয়ে এই সফল অস্ত্রোপচার করলেন।

গত ২০ তারিখ পশ্চিম মেদিনীপুরের কৃষ্ণপুরের বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের ফরিদা খাতুন পান্তা ভাত খাওয়ার সময় তিন ইঞ্চি সাইজের এই সুচ গিলে ফেলেন। ওই সুচ আটকে যায় তাঁর গলায়। গলায় কিছু আটকে পড়েছে এই ভেবে নিজের গলায় হাত ঢুকিয়ে সেই সুচ বের করার চেষ্টা করেন তিনি। হাতে লেগে সেই সুচ গলার আরও গভীরে ঢুকে যায়। এর পরে ওই রোগিণীকে পরিবারের লোকজন নিয়ে আসেন বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে। তখনও রোগিণী বা তাঁর পরিবারের লোকজন এমন কী বিষ্ণুপুর হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানতে পারেননি যে রোগিণীর গলায় আটকে রয়েছে সুচ। 

এরপর বিষ্ণুপুর হাসপাতালে পরীক্ষা করে জানা যায় যের খাদ্যনালী ভেদ করে রয়েছে একটি সুচ। এর পরই তড়িঘড়ি ওই রোগিণীকেবাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইএনটি বিভাগে ভর্তি করা হয় তাঁকে। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করে গলায় কোন জায়গায় সুচের অবস্থান রয়েছে তা ঠিক করে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

বৃহস্পতিবার ইএনটি বিভাগের চিকিৎসক রাজেস হাঁসদা ও অরবিন্দ ভার্মা এবং অ্যানেস্থেটিস্ট  তীর্থ রতন ঘোষ  এই টিম সফল ভাবে ২ ঘণ্টার চেষ্টায় রোগীর গলা থেকে সুচ বের করেন। চিকিৎসকদের কথায় এই ধরনের অস্ত্রোপচারের জন্য কার্ডিও থেরাসিক পরিকাঠামোর  প্রয়োজন হয়। কিন্তু বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সেই সুবিধা না থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসকরা ঝুঁকি নিয়েই সফল অস্ত্রোপচার করেন। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, গলায় যে জায়গায় সুচের অবস্থান ছিল তা অত্যন্ত বিপজ্জনক। সুচটি খাদ্যনালী ভেদ করে অন্যান্য অঙ্গেরও ক্ষতি করতে পারত। ওই রোগিণীকে কয়েকদিনের মধ্যেই হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ইএনটি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান চিকিৎসক সুদীপ দাস।

বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ রোগিণীর আত্মীয়ারা। তাঁদের কথায় ,চিকিৎসকদের প্রচেষ্টায় জীবন ফিরে পেয়েছেন ফরিদা খাতুন। বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এর আগেও সীমিত পরিকাঠামোর মধ্যেই জটিল অস্ত্রোপচার করেছেন চিকিৎসকরা। সেই সুনাম বজায় রাখতে পেরে খুশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও। 

Share this article
click me!