মূলত পাকিস্তান থেকে আসা নোটগুলি মুর্শিদাবাদ, মালদহ সংলগ্ন ফারাক্কা স্টেশন হয়ে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ফেলতে চাইছে জালনোট কারবারিরা। বিহারের এক এজেন্টের নির্দেশে ওই মহিলা পাকিস্তানে তৈরি ভারতের জালনোটগুলি সরাসরি বাংলাদেশ থেকে ঘুরপথে এনেছিল।
পাকিস্তানে (Pakistan) তৈরি জালনোট (Fake Currency) এবার হাত বদল করে ঢুকে পড়ছে মুর্শিদাবাদে (Murshidabad)। সেক্ষেত্রে পার্শ্ববর্তী ঝাড়খণ্ড, বিহার, উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন 'মিডিল ম্যান'-দের হাত ধরে এই জেলা থেকে শুরু করে রাজ্যের বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসায় নোটগুলি খাটছে। এমন তথ্যই আসে পুলিশের (Police) কাছে। বিশেষ সূত্রের খবর, পাকিস্তানের জালনোট কারবারের বিস্তার করতে মুর্শিদাবাদে সক্রিয় হয়ে উঠেছে একটি নেটওয়ার্ক (Network)। যাদের খোঁজেই এখন ঘুম ছুটছে পুলিশ কর্তাদের। বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার (Arrest) হওয়া জালনোট কারবারিদের ধারাবাহিক জেরা করে মেলা 'মিসিং লিঙ্ক' রীতিমতো কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলছে মুর্শিদাবাদের পুলিশকর্তাদের। জানা যায়, সম্প্রতি মুর্শিদাবাদ জেলার করিডোর দিয়ে সক্রিয় হয়ে ওঠা জালনোট পাচারকারীদের অন্যতম মহিলা পান্ডা সনজীরা খাতুন গ্রেফতারের পর পুলিশের জেরায় নানান অজানা তথ্য উঠে আসে।
মূলত পাকিস্তান থেকে আসা নোটগুলি মুর্শিদাবাদ, মালদহ সংলগ্ন ফারাক্কা স্টেশন হয়ে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ফেলতে চাইছে জালনোট কারবারিরা। বিহারের এক এজেন্টের নির্দেশে ওই মহিলা পাকিস্তানে তৈরি ভারতের জালনোটগুলি সরাসরি বাংলাদেশ থেকে ঘুরপথে এনেছিল। এর আগেও সে বেশ কয়েকবার নোট বিহারে পৌঁছে দিয়ে এসেছে। সেগুলি সেখান থেকে উত্তর প্রদেশে যেত। এই কাজ করার জন্য তাকে মোটা অঙ্কের কমিশনও দেওয়া হতে। জেলার এক পুলিশ আধিকারিক জানান, "এই মুহূর্তে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা নানান তথ্য সম্বলিত করে পাকিস্তানে তৈরি জালনোট মুর্শিদাবাদ হয়ে ভারতে প্রবেশ করানোর ক্ষেত্রে নানান তথ্য সংগ্রহ করছে। সাফল্যও মিলছে বহু ক্ষেত্রে।"
জানা গিয়েছে, পাকিস্তান থেকে আসা জালনোটগুলি উন্নতমানের। বিশেষ করে কাগজের মান আসল নোটের মতোই। হাতে নিয়ে আসল নকলের পার্থক্য করা কঠিন হয়ে পড়ে। আসল নোটে প্রায় ১৬টি বৈশিষ্ট্য থাকে। কারবারিরা অধিকাংশ বৈশিষ্ট্যই নকল করে দিচ্ছে। কিন্তু সবগুলি নকল করতে পারে না। এমনকী বাংলাদেশ ইতিপূর্বে প্রচুর জালনোট উদ্ধার হয়েছে। ওই নোটগুলি পাকিস্তানের লাহোর থেকে শ্রীলঙ্কা হয়ে জলপথে বাংলাদেশে পৌঁছে ছিল। তার পিছনেও ছিল এক মহিলা।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, পাকিস্তান থেকে বিপুল পরিমাণ নোট বাংলাদেশে এসেছে আর সেগুলোই নানান পথে মুর্শিদাবাদ হয়ে ভারতে প্রবেশ করার সম্ভাবনা প্রবল। এমনকী ওই গ্রেফতার হওয়া মহিলা জানায়, বৈষ্ণবনগর সীমান্ত দিয়েই নোটগুলি এনেছিল সে। সে নিজে আগে বাংলাদেশে গিয়ে নোট এনেছে। বিহার এবং উত্তর প্রদেশে জালনোটের চাহিদা রয়েছে। ওই দুই রাজ্যের এজেন্টদের সঙ্গে বাংলাদেশের পাচারকারীদের যোগাযোগ রয়েছে। এক লক্ষের জালনোট মান অনুযায়ী তারা ৩৫ থেকে ৫০ হাজার টাকায় কিনছে। অনেক সময় ভিনরাজ্যের ক্যারিয়াররা এসেও মালদহ, মুর্শিদাবাদ থেকে জালনোট নিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশেও জালনোট তৈরির কারখানা রয়েছে। কিন্তু সেখানে তৈরি নোটের মান ততটা উন্নত নয়। তাই সেই নোটের চাহিদা ততটা নেই।