ভুল পূর্বাভাসেই কি অকারণ আতঙ্ক, মানতে নারাজ আলিপুরের হাওয়া অফিস

  • কলকাতায় ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় চল্লিশ কিলোমিটার
  • গতির নিরিখে মেলেনি আলিপুর আবহ দফতরের পূর্বাভাস
  • পূর্বাভাসে ভুল ছিল না, দাবি আবহবিদদের
  • শক্তিক্ষয় করে বাংলাদেশে ফণী
     

debojyoti AN | Published : May 4, 2019 9:24 AM IST / Updated: May 04 2019, 07:09 PM IST

শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোরের মধ্যে রাজ্যে আছড়ে পড়ার কথা ছিল সুপার সাইক্লোন ফণীর। যদিও শক্তি ক্ষয় করায় এ রাজ্যের উপরে সেভাবে তাণ্ডব চালাতে পারেনি এই ঘূর্ণিঝড়। পূর্বাভাস ছিল কলকাতাতে ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় সত্তর থেকে আশি কিলোমিটার।

বাস্তবে অবশ্য কলকাতায় ফণীর গতিবেগ এর থেকে অনেকটাই কম ছিল বলে শনিবার স্বীকার করে নিয়েছেন আলিপুর আবহ দফতরের আধিকারিকরা। তবে তাঁদের দাবি, পূর্বাভাসে কোনও ভুল হয়নি। কারণ দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বকখালিতেই ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় নব্বই কিলোমিটার।

ঝড়ের প্রবল গতিবেগ এবং তার জেরে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে সর্বস্তরেই প্রবল আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল। আলিপুর আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস ছিল কলকাতা এবং তার আশপাশের এলাকায় ঝড়ের সর্বোচ্চ গতি থাকতে পারে ঘণ্টায় সত্তর থেকে আশি কিলোমিটারের মধ্যে। একই পূর্বাভাস ছিল দুই মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলির মতো জেলাগুলির জন্য। বিপদ আঁচ করে প্রশাসনিক স্তরেও সর্বোচ্চ সতর্কতা নেওয়া হয়। কিন্তু প্রবল ঝড়ের আশঙ্কায় প্রহর গুনলেও কলকাতা বা তার আশেপাশের এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া ছাড়া সেভাবে প্রভাব ফেলেনি ফণী। 

আলিপুর আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোরের মধ্যে কলকাতায় ঘণ্টায় গড়ে চল্লিশ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বয়েছে। কোনও কোনও সময়ে সেই গতি উঠেছে পঞ্চাশ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। ফলে, প্রশ্ন উঠছে. হাওয়া অফিসের পূর্বাভাসে কি কোনও ভুল ছিল? এমন পূর্বাভাসে অহেতুক আতঙ্ক ছড়ালো কি না, সেই প্রশ্নও শুনতে হয়েছে আলিপুরের আবহবিদদের।

এই অভিযোগ অবশ্য খারিজ করে দিচ্ছেন হাওয়া অফিসের আধিকারিকরা। তাঁরা বলছেন, পূর্বাভাস একশো শতাংশ মেলানো মুশকিল। বিশেষত ফণী প্রথম আঘাত হেনেছে ওড়িশায়. তার পরে কলকাতা পর্যন্ত পৌঁছতে সে অনেকটাই শক্তিক্ষয় করেছে। ফলে, আধুনিক প্রযুক্তি, যন্ত্র সবকিছু ব্যবহার করেও একেবারে নির্ভুল পূর্বাভাস দেওয়া মুশকিল। তাছাড়া কলকাতায় ঝড়ের গতিবেগ কম থাকলেও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বকখালিতে ফণীর সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় নব্বই কিলোমিটার। আলিপুর আবহ দফতরের পক্ষ থেকে এমনই পূর্বাভাস ছিল। এ ছাড়াও ঝড় প্রথম কোথায় আঘাত হানবে, তার গতিপথ কী হবে- এ সবকিছুই নির্ভুলভাবে আগেভাগে জানিয়েছেন আলিপুরের আবহবিদরাই। ফলে তাঁদের পূর্বাভাসে কোনও ভুল ছিল না বলেই দাবি করছেন হাওয়া অফিসের কর্তারা। 

আবহ দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাংলা ছেড়ে ফণী বাংলাদেশের দিকে এগোচ্ছে. কলকাতা বা দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনাও আর নেই. ফণী ঘূর্ণিঝড় দুর্বল হয়ে বাংলাদেশের দিকে চলে গিয়েছে। শক্তি ক্ষয় করে সেটি নিম্নচাপে রূপান্তরিত হয়েছে. এর প্রভাবে শনিবার নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, দুই চব্বিশ পরগনায় হালকা বৃষ্টি হবে। পরশু থেকে আবার তাপমাত্রা বাড়বে, শুরু হবে অস্বস্তি।

Share this article
click me!