Kisan Mandi-সরকারি কিষাণ মান্ডিতে ধান বিক্রি, লাভের আশায় রাত জেগে লাইন কৃষকদের

রাতে কিষাণ মান্ডির বাইরে খোলা মাঠে কাঁথা- কম্বল, টুপি- চাদরে শরীর ঢেকে, শুয়ে বসে চলছে ধান বিক্রির লড়াই। সব মিলিয়ে ভোগান্তির শেষ নেই। 

Parna Sengupta | Published : Dec 2, 2021 12:09 PM IST

কনকনে ঠান্ডায়, খোলা আকাশের নিচে জবুথবু হয়ে কাতারে কাতারে মানুষ। ফাঁকা জায়গায় হু হু করে বইছে উত্তুরে বাতাস। তবু শীত উপেক্ষা করেই রাতভর লাইনে। পুরুষ, মহিলা, বৃদ্ধ সকলেই ঠাঁই বসে সকালের অপেক্ষায়। উদ্দেশ্য সরকারি কিষান মান্ডিতে ধান বিক্রি। এমনই ছবি ধরা পড়েছে মালদ হবিবপুর কিষান মান্ডিতে। 

কিন্তু, প্রশ্ন উঠছে এভাবে রাতভর লাইন কেন? খোলা বাজারের তুলনায় সরকারি কিষান মান্ডিতে(Kisan Mandi) বিক্রয় মূল্য অনেকটাই বেশি। আর এতেই মালদহের (Maldah) বিভিন্ন সরকারি কিষান মান্ডিতে ধান বিক্রির হিড়িক কৃষকদের (Farmers want to sell paddy)। পরিস্থিতি সামাল দিতে দৈনিক একশো জন করে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিভিন্ন কিষাণ মান্ডি। আর এই একশো জনের তালিকায় নাম তোলা এবং ধান বিক্রির "ডেট" পাওয়ার জন্যই রাত জেগে চলছে লাইন। 

ফড়েদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে যাঁরা ধান বিক্রি করবেন তাঁদের প্রত্যেককেই সশরীরে কিষান মান্ডিতে হাজির থাকার সরকারি নির্দেশ রয়েছে। আর ভিড় এড়াতে গভীর রাতে চলছে হাজিরা দেখে নাম লেখার কাজ। এজন্য সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া লাইন চলছে সারারাত। অনেকে একদিন লাইনে অপেক্ষা করে নাম লেখাতে না পারায়, পরদিন আরও তাড়াতাড়ি এসে হাজির হচ্ছেন সরকারি কিষান মান্ডিতে। এভাবে যত দিন যাচ্ছে ততই দীর্ঘ হচ্ছে লাইন।

রাতে কিষাণ মান্ডির বাইরে খোলা মাঠে কাঁথা- কম্বল, টুপি- চাদরে শরীর ঢেকে, শুয়ে বসে চলছে ধান বিক্রির লড়াই। সব মিলিয়ে ভোগান্তির শেষ নেই। সরকারিভাবে আজ থেকে মালদহেও শুরু হচ্ছে কৃষকদের থেকে ধান কেনার কাজ। এজন্য কয়েকদিন আগে থেকেই শুরু হয়েছে রাত জেগে লাইন। এবছর সরকারিভাবে কুইন্টাল পিছু ধানের দাম ধার্য হয়েছে ১৯৪০ টাকা। অথচ, খোলাবাজারে এপর্যন্ত দাম উঠেছে প্রতি কুইন্টাল মাত্র ১৪০০--১৫০০ টাকা। 

এই ফারাকের জন্য ভিড় বাড়ছে কিষাণ মান্ডি গুলিতে। প্রথমে কৃষক প্রতি সর্বোচ্চ ৪৫ কুইন্টাল করে ধান বিক্রির কথা বলা হলেও পরে কৃষক প্রতি সর্বোচ্চ ২৫ কুইন্টাল ধান বিক্রি করা যাবে বলে স্থানীয় স্তরে সিদ্ধান্ত হয়। শুধু তাই নয়, প্রতিদিন সর্বোচ্চ একশো জন কৃষকের ধান কেনার সিদ্ধান্ত হওয়ার ফলে বাড়ছে সমস্যা। কৃষকরা জানিয়েছেন, শুধু হবিবপুরের কৃষক কার্ড রয়েছে ১২ হাজার। এক্ষেত্রে দৈনিক সর্বোচ্চ একশো জন করে ধান কেনা হলে বা ডেট দেওয়া হলে বেশিভাগ কৃষক বঞ্চিত হবেন এমন আশঙ্কাও রয়েছে কৃষকদের মধ্যে। 

সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে বাড়ছে ক্ষোভ। প্রশ্ন তুলছেন কৃষকরা। সরকারি কিষান মান্ডিতে ধান বিক্রির জন্য কৃষকদের ভিড়কে রাজ্য সরকারের সফলতা বলে মন্তব্য করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন, সেচ ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। কৃষকদের হয়রানি ঠেকাতে জেলা প্রশাসনকে আরও বেশিসংখ্যক ক্যাম্প করে ধান কেনার নির্দেশ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। রাতভর লাইন দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই বরং কৃষকরা ধৈর্য ধরুন এমনই আর্জি মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের।

Share this article
click me!