এনআরসি আতঙ্কে পূর্ব বর্ধমানের কালনায় ফের মালবদল করেছেন ১৫ দম্পতি। আর এবার বিয়ের আগেই পাত্রীর নাগরিকত্বের প্রমাণ চাইলেন পাত্রের বাড়িতে লোকেরা! একটি বাংলার দৈনিকের পাত্র-পাত্রীর কলামে বিজ্ঞাপন দেখে চোখে কপালের উঠেছে অনেকেরই। শোরগোল পড়েছে রাজ্যে।
বাড়ি উত্তর ২৪ পরগণার হাবড়ায়। চাকরি সূত্রে থাকেন মুর্শিদাবাদে। সরকারি চাকুরে পাত্রের বিয়ের জন্য খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন পরিবারের লোকেরা। তেমন কোনও চাহিদা নেই। পাত্রীর উচ্চতা ৫ ফুট ১ ইঞ্জির বেশি আর শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চমাধ্যমিক হলেই চলবে। তবে 'ভারতীয় ১৯৭১-এর আগের' প্রমাণ-সহ যোগাযোগ করতে হবে! বিজ্ঞাপনের বয়ানটি এইরকম, 'ঘোষ, 29/5'9", হাইস্কুল শিক্ষক HS Pass,5'1" উর্দ্ধে ভারতীয় 1971 এর আগে উপযুক্ত প্রমাণ-সহ ঘোষ পাত্রী চাই।' খবরের কাগজে হাজারো বিজ্ঞাপনে ভিড়ে এমন অভিনব বিজ্ঞাপনটি নজরে পড়েছে অনেকেরই। বস্তুত, সোশ্যাল মিডিয়ায়ও ভাইরাল হয়ে গিয়েছে বিজ্ঞাপনটিও।
আরও পড়ুন: এনআরসি-এর আতঙ্কে ফের ছাদনাতলায়, কালনায় মালাবদল ১৫ দম্পতির
কিন্তু নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য তো আধার কার্ড কিংবা ভোটার কার্ডই যথেষ্ট। তাহলে পাত্রীর পরিবারকে ১৯৭১ সালে আগে থেকে এদেশের থাকার প্রমাণ দিতে হবে কেন? বিজ্ঞাপন দেখে কেউ কেউ ভ্রু কুঁচকেছেন। তাঁদের বক্তব্য, পাত্রী খুঁজতে গিয়ে বংশ প্রমাণপত্র চাওয়াটা বাড়াবাড়ি। আবার উল্টো মতও আছে। কারও কারও মতে, এনআরসি নিয়ে যা চলছে, তাতে সাধারণ মানুষই বা কী করবে! পরিষ্কার করে সবকিছু বলে নেওয়ার ভালো। আর ঘটি-বাঙাল, পাত্রের আয় যদি বিয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়, তাহলে নাগরিকত্বের প্রমাণ চাইলেই বা ক্ষতি কী!
উল্লেখ্য, সামাজিক মতে বিয়ে করেছেন, কিন্তু রেজিস্ট্রি হয়নি। এমন দম্পতিরাও কিন্তু এনআরসি-র আতঙ্কে ভুগছেন। আতঙ্ক এতটাই যে, দিন কয়েক আগে পূর্ব বর্ধমানের কালনায় গণবিবাহের আসরে ফের মালাবদল করেছেন ১৫ দম্পতি। বিয়েরে হাজির ছিলেন তাঁদের সন্তান, এমনকী নাতি-নাতনিরাও। বর্তমান পরিস্থিতিতে যে বিয়ের শংসাপত্র নিয়ে ভাবতে বাধ্য হয়েছেন, তাও সাফ জানিয়েছেন ওই ১৫ দম্পতি।