ইন্দো-বাংলা সীমান্তের মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে কয়েকশো কোটি টাকার নির্মাণ শিল্পের মন্দা চলায়, কঠোরভাবে অবৈধ ইঁটভাটাগুলি বন্ধ করে দেওয়ার জোরালো দাবি উঠেছে ইটভাটা মালিকদের তরফে। আর এই খবর চাউর হতেই জেলার নানান প্রান্তে নির্মাণ শিল্পের সাথে যুক্ত আনুষঙ্গিক শিল্পের কারখানাগুলিতে তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছে। ফলত নির্মাণ শিল্পের বাজারে ব্যাপকভাবে মূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
এই ব্যাপারে ইটভাটা মালিক সমিতির জেলা সভাপতি আব্দুল বারিক শেখ বলেন,"কয়েক বছর ধরে টানা জেলার বৈধ ইটভাটার মালিকদের কাছ থেকে কোন রয়েলটি আদায় না করার ফলে রমরমিয়ে অবৈধ ইটভাটার শিল্প গড়ে উঠেছে। ফলে আইনসম্মতভাবে নির্মাণ হওয়া ইটভাটার মালিকরা ব্যাপকভাবে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। সরকারি নানান সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। তাই দ্রুত অবৈধ ইটভাটার বন্ধ করন প্রক্রিয়া শুরু হোক"।
জানা গিয়েছে, জেলায় এই মুহূর্তে অনুমোদিত ইটভাটার সংখ্যা ৫০০ এর অধিক। যার মধ্যে খোদ লালগোলাতেই রয়েছে বৈধ অবৈধ মিলিয়ে প্রায় ৫০ এর উপরে ইঁট ভাটা, জঙ্গিপুরে সংখ্যাটি ৭০ ছাড়িয়েছে। এরই মধ্যে পুরো জেলাজুড়ে শয়ে শয়ে চলছে অবৈধ ইটভাটার রমরমা বলেই সংগঠনের তরফেই জানানো হয়। শুধু তাই নয় পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে বর্তমানে যত্রতত্র অবৈধভাবে ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে ওঠা ইটভাটার ফলে এই মুহূর্তে জেলা জুড়ে প্রায় ১০০ কোটির উপরে ইঁট বিভিন্ন ভাটায় জড়ো হয়ে পড়ে রয়েছে চাহিদা ছাড়াই।
অভিযোগ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অবৈধ ইটভাটাগুলির দাপটে বৈধ ভাটা গুলি পিছিয়ে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেক্ষেত্রে শুরুর দিকে বাংলা ভাটায় ইট তৈরীর উপরে সরকারি বিধি নিষেধ আরোপ করায় বৈধ ইটভাটার মালিকরা 'ব্যারেল' পরে 'ফিক্সড ব্যারেল' ও বর্তমানে 'জিগজাগ' নামের আধুনিক পদ্ধতি (টেকনোলজির) সাহায্যে ইটভাটা নির্মাণ করেছেন। অথচ অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটা কোনরকম নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই নিজেদের মর্জি মতো ইটভাটা নির্মাণ করে ফেলেছে বলেই অভিযোগ করেন সংগঠনের জেলা সম্পাদক বিষ্ণুপদ দাস।
তিনি জানান, এই চরম পরিস্থিতিতে ডামাডোল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে কয়েকশো কোটি টাকার এই শিল্পে। একদিকে সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে যেমন বঞ্চিত হচ্ছে বৈধ ইটভাটার সাথে যুক্ত মালিকেরা, তেমনি এই শিল্পের সাথে যুক্ত শ্রমিকরাও নানান ধরনের সরকারি প্রকল্পের আওতায় আসতে পারছেন না ওইসব পড়ে ইটভাটার দৌরাত্ম্যে।
এই ব্যাপারে জেলার এক প্রতিষ্ঠা সিমেন্ট ও লোহা ব্যবসায়ী আমির হোসেন বলেন,"এইভাবে যদি আচমকা ইটভাটাগুলো বন্ধ হয়ে যায় তাহলে বহু ঠিকাদারেরা কাজের বরাত আগাম ধরে রাখার ফলে চরম নাকালে পড়বে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই এক ঝটকায় অনেকখানি দাম বাড়তে পারে নির্মাণ শিল্পের সাথে যুক্ত অন্যান্য কাঁচামালেরও।