লকডাউনের মরশুমে বন্ধ হয়ে গিয়েছে রাজ্য়ের সমস্ত স্কুল ও বিশ্ববিদ্য়ালয়। কিন্তু তাতে কী? যাদবপুর তো বরাবরের ব্য়তিক্রম। এই বন্দিদশার মধ্য়েই বিশ্ববিদ্য়ালয়েরর রসায়নাগার খুলে দেওয়া হল। জোগাড় করা হল কিছু টাকাপয়সা। তারপর সেখানে শুরু হয়ে গেল স্য়ানিটাইজার তৈরির কাজ। শুধু সেখানেই থেমে থাকলেন না যাদবপুরের পড়ুয়ারা। আশপাশের অভুক্ত মানুষগুলোর জন্য় ক-দিনের মধ্য়েই সেখানে শুরু হয়ে গেল যৌথ রান্নাঘর। যা দেখে অনেকেই বলে উঠলেন-- যাদবপুর জিন্দাবাদ।
দত্রাতেয় ঘোষ জানালেন, "দেখুন আমরা প্রথমে শুরু স্য়ানিটাইজার তৈরি দিয়ে শুরু করেছিলাম। ল্য়াবরেটরি খুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা কিছু টাকাপয়সা জোগাড় করে তৈরি করছি স্য়ানিটাইজার। তবে কিছুদিন বাদে দেখলাম, শুধু এতেই হবে না। ধরুন ঢাকুরিয়া থেকে শুরু করে বাঘাযতীন অবধি এমন প্রচুর লোকজন রয়েছেন, যাঁরা আটকে পড়েছেন। এঁদের রান্না করে খাবার ক্ষমতা নেই। তাই আমরা দিনে একবার করে খিচুড়ি রান্না করে ওঁদের দিতে শুরু করেছি।"
এই কাজে এককাট্টা হয়েছেন বর্তমান পড়ুয়ারা, রিসার্চ স্কলাররা আর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের প্রাক্তনীরা। প্রাক্তনীদের মধ্য়ে সুব্রত দাস জানালেন, "আমরা চেষ্টা করছি এক হতে। বন্ধুবান্ধবদের কাছে দুশো টাকা করে অনুদানের জন্য় অনুরোধ করছি। যাঁরা বিশ্ববিদ্য়ালয়ে গিয়ে কাজ করতে পারছি না, তাঁরা যাতে অর্থ দিয়ে এই উদ্য়োগকে টিকিয়ে রাখতে পারি।" বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত এক বাংলা প্রকাশনার কর্ণধার সুব্রতর কথায়, " শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখেও এই মুহূর্তে আমাদের কাছাকাছি থাকা দরকার। অনেক মানুষ এখন অসহায়। এখন যাঁরা যাদবপুরে পড়ছেন তাঁদের সঙ্গে কয়েকজন প্রাক্তনী মিলে ক্য়াম্পাসের ভেতর প্রতিদিন খিচুড়ি রান্নার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। আশপাশে এমন অনেক মানুষ রয়েছেন, যাঁরা উনুন পর্যন্ত জ্বালাতে পারছেন না। স্য়ানিটাইজার তো দূর অস্ত। তাঁদের জন্য়ই এই প্রয়াস।"