টেক্কা দুর্গাপুজোকে, কয়েক লক্ষ টাকার বাজেটে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় মেতে কান্দি

কোভিড বিধিকে মান্যতা দিয়ে সমস্ত কিছু আয়োজন করা হচ্ছে। তাই আগামী কয়েকদিন কান্দি জুড়ে চলবে লক্ষ্মী পুজোর আমেজ।

Parna Sengupta | Published : Oct 20, 2021 10:57 AM IST

দুর্গাপুজোকে(DurgaPuja) টপকে শতবর্ষ প্রাচীন কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয়(Kojagari Lakshmipujo) মাতোয়ারা আট থেকে আশি। এ যেন বিপরীত ছবি মুর্শিদাবাদের(Murshidabad) কান্দি (Kandi) এলাকায়। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো হলেও কয়েক শতাব্দী প্রাচীন কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোই কান্দির মনোহরপুর গ্রামের মানুষের প্রধান উৎসব। তাই প্রাচীন এই গ্রামের একমাত্র বিগ বাজেটের পুজো ঘিরে বুধবার সাজোসাজো রব। মণ্ডপ থেকে আলোকসজ্জা, সমস্ত কিছুর আয়োজনে মেতে উঠেছে গোটা গ্রামের লোকজন।

গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতেই আত্মীয়স্বজনের আনাগোনা শুরু হয়ে গিয়েছে। কয়েকদিন ধরে চলবে এই পুজোকে ঘিরে উৎসব। এই পুজোয় গ্রামের আট থেকে আশির উন্মাদনা তুঙ্গে। কান্দি-বহরমপুর রাজ্য সড়কের পাশেই রয়েছে মনোহরপুর গ্রাম। এখানে প্রায় ৪০০ পরিবারের বসবাস। দুর্গা, কালী, সরস্বতী ছাড়াও অন্যান্য সমস্ত পুজো হয় গ্রামে। তবে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোই গ্রামের মূল উৎসব হয়ে উঠেছে। এই পুজোর জন্যই বাসিন্দারা সারা বছর তাকিয়ে থাকেন। 

জানা গিয়েছে, প্রায় ১৫০ বছর আগে এটি ছিল পারিবারিক পুজো। কিন্তু ওই সময় পুজোর উদ্যোক্তা গ্রামের দাস পরিবার কান্দি শহরে বসবাস শুরু করেন। তখন থেকেই ওই পুজো সর্বজনীন পুজোর রূপ নিয়েছে। গ্রামে একটি মাত্রই লক্ষ্মী পুজো হয়ে থাকে। তাতেই অংশ নেয় গ্রামের প্রতিটি পরিবার। কয়েক লক্ষ টাকার বাজেট ধরা হয়েছে এবারও। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় জৌলুসে কিছুটা খামতি দেখা যাবে বলেই উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন।

পুজো উপলক্ষে চারদিন ধরে চলবে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উৎসব। বাউল, যাত্রা, সঙ্গীতানুষ্ঠানের সঙ্গে আতসবাজি প্রদর্শনীও চলে। যদিও গত বছর করোনা পরিস্থিতির জেরে পুজোর আড়ম্বরে ভাটা পড়ে। এবারও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশ না মেলায় ওইসব অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা হচ্ছে। তবে অন্যান্যভাবে দর্শনার্থীদের আনন্দ উপভোগ করার ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। করোনাবিধি মেনে পুজো করা হবে বলে জানান পুজো কমিটির সদস্য তাপস মণ্ডল। 

পুজো উপলক্ষে গোটা গ্রাম রংবেরঙের আলো দিয়ে সাজানো হবে। গ্রামে ঢোকার রাস্তার দু’পাশে আলোর বিভিন্ন থিম ফুটিয়ে তোলা হবে। অল্প সংখ্যার দর্শনার্থী নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও করা হতে পারে। বহিরাগতদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।এদিকে পুজো ঘিরে বাসিন্দারা মধ্যে উন্মাদনা চরমে উঠেছে। পুজোর আগে রীতি অনুযায়ী নতুন জামাকাপড় কেনার হিড়িক পড়ে গিয়েছে। বাড়িতে নারকেল নাড়ু তৈরির কাজ চলছে বলে জানান গৃহবধূ শম্পা হাজরা, মাম্পি বিশ্বাস প্রমুখরা। এমনকী কাজের সূত্রে যাঁরা বাইরে থাকেন, তাঁরাও বাড়ি ফেরা শুরু করেছেন। 

পুজো কমিটির সম্পাদক তপনকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দুর্গাপুজো নয়, কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোই হল গ্রামের সেরা উৎসব। তাই পুজো ঘিরে গ্রামের উৎসবের মেজাজ ফুটে উঠেছে। তবে করোনা পরিস্থিতির কথা ভেবে পুজোর অনেক বিষয় কাটছাঁট করা হয়েছে। পুজোর বাইরের জৌলুস কমে গেলেও অন্তরের আনন্দ এতটুকুও কমেনি। কোভিড বিধিকে মান্যতা দিয়ে সমস্ত কিছু আয়োজন করা হচ্ছে। তাই আগামী কয়েকদিন কান্দি জুড়ে চলবে লক্ষ্মী পুজোর আমেজ।

Share this article
click me!