কলকাতার রাস্তা থেকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর পথে এগিয়ে যাচ্ছিল ট্রাম পরিষেবা। তারই হাল ধরতে WBTC-র ব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন আইনজীবী সুলগ্না মুখোপাধ্যায়।
কলকাতা ট্রাম কোম্পানি বর্তমানে হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন কর্পোরেশন, প্রায় দুই দশক পর তাদের পক্ষ থেকে ট্রামকে ফের স্বমহিমায় ফিরিয়ে আনার জন্য শুরু হল নতুন প্রস্তুতি। ফোরম্যান এবং লাইনম্যান হওয়ার প্রশিক্ষণ দিয়ে কলকাতার ট্রামে নিয়োগ করা হবে ৪৪ জন কর্মীকে। সম্প্রতি, আইনজীবী সুলগ্না মুখোপাধ্যায়ের দায়ের করা জনস্বার্থ মামলার জবাবে WBTC এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরভিএস কাপুরের দাখিল করা হলফনামায় এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
সুলগ্না মুখোপাধ্যায় নিজের পিটিশনে বলেছিলেন, “CTC বা WBCTC-এর অধীনে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত, অর্থাৎ, গত ২০ বছরে কোনও ট্রাম চালক নিয়োগ করা হয়নি। দেখা গেছে যে ২০২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ৩৩৯ জন ট্রাম কন্ডাক্টর এবং ১৪৩ জন চালক ছিলেন। কিন্তু, এখন সেই সংখ্যাটা কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২০৮ এবং ৬৫। এতে এটাই স্পষ্ট হয় যে, কর্তৃপক্ষ ট্রামওয়েগুলিকে বাঁচিয়ে রাখতে একেবারেই আগ্রহী নয়। যে ৬৫ জন ট্রামচালক বর্তমানে রয়েছেন, স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা এই ২০ বছরে নিজেদের অবসরের বয়সের কাছাকাছি রয়েছেন। এক্ষেত্রে যদি আর নতুন কোনও নিয়োগ না হয়ে থাকে, কলকাতার ট্রাম স্বাভাবিকভাবে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাবে।”
সুলগ্না মুখোপাধ্যায়ের এই পিটিশনের বিরুদ্ধে আরভিএস কাপুর জানিয়েছেন যে, বর্তমানে ৪৪ জন কর্মীকে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ দিয়ে ট্রাম পরিষেবা স্বচ্ছল রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই সমস্ত ট্রাম চালকদের প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পরে কাজ শুরু করার সম্ভাবনা রয়েছে। চালক পদে প্রশিক্ষণ এবং পদোন্নতির কথা উল্লেখ করে কাপুর বলেন, “যেহেতু ট্রাম চালনা করা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ, সেহেতু এর চালকদের একেবারে বাইরে থেকে নিয়োগ করা যাবে না। শুধুমাত্র বিদ্যমান থাকা কর্মচারীদের মধ্যে থেকে চালক নিয়োগ করা প্রয়োজন।”
“যতটা সম্ভব ট্রাম চালানোর অন্যতম প্রধান প্রতিবন্ধকতা হল চালকের অভাব। তাই, কিছু রুটে প্রতীকীভাবে ট্রাম চলে। নিয়মিত পরিষেবা নিশ্চিত করা না হলে যাত্রীরা কখনওই গণপরিবহণ হিসাবে ট্রামের উপর নির্ভর করবেন না”, বলেছেন কলকাতা ট্রাম ব্যবহারকারী সমিতির সভাপতি দেবাশীষ ভট্টাচার্য। সুলগ্না মুখোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, টালিগঞ্জ, বালিগঞ্জ, কালীঘাট এবং খিদিরপুর ডিপোতে অসংখ্য ট্রাম বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে, কারণ নোনাপুকুরের কেন্দ্রীয় কর্মশালার সাথে তাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তাই বিকল্পভাবে ডিপোতে মেরামতের কাজ করা যাচ্ছে না। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই সমস্ত ট্রামগুলো প্রয়োজনীয় মেরামতের পর সহজেই চলতে পারত।
কাপুর নিজের হলফনামায় নিশ্চিত করেছেন যে, শহরের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে ট্রামগুলিকে মোমিনপুর, ওয়াটগঞ্জ, এসপ্ল্যানেড এবং ওয়েলিংটন রুটের মাধ্যমে নোনাপুকুর ওয়ার্কশপে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। ২০২৫ সালের জুলাই মাসের পর যখন রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড এই লাইনগুলি WBTC-কে ফেরত দিয়ে দেবে, তখন এই কাজ সম্ভব হবে। তিনি জানান যে, জোকা-এসপ্ল্যানেড মেট্রোর একটি অংশ নির্মাণের কারণে প্রসারিত ট্রাম পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-
Rape Case: ছোট্ট শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করল প্রথম শ্রেণীর শিশু, উত্তরপ্রদেশের ঘটনায় স্তম্ভিত পুলিশকর্তারা
অনুব্রত মণ্ডলের 'অনুগত' জীবনকৃষ্ণ কলেজজীবন থেকেই ছিলেন তৃণমূলে, স্ত্রীও হয়েছিলেন প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা
Amit Shah News: প্রচণ্ড গরমে অমিত শাহের অনুষ্ঠান, রোদ্দুরে দাঁড়িয়ে মারা গেলেন ১১ জন