বাজেটে একাধিক কর্মসংস্থান ও প্রকল্পে বরাদ্দের ঘোষণা করা হয়। এই নিয়েই সরব হয়েছেব বিরোধীরা। বাজেট পেশের পর এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন এই বাজেটে সঠিক অর্থ কোনও দিশা নেই।
বুধবার বিধানসভায় ২০২৩-২০২৪ অর্থ বর্ষের জন্য বাজেট পেশ করেছেন। বাজেট পেশের একদম শেষ লগ্নে আচমকাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অর্থ মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের কাছে একটি চিরকূট পাঠান। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান কী চিরকূট পাঠিয়েছেন তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়। এর পরেই অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেন, রাজ্য সরকারি কর্মচারি, শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারি ও সমস্ত পেনশন ভোগীদের আরও ৩ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হচ্ছে। আগামী মার্চ মাস থেকেই বর্ধিত মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হবে। এর জন্য রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে বাড়তি খরচ হবে তিন লক্ষ ৪০ হাজার কোটি টাকা।
এছাড়াও বাজেটে একাধিক কর্মসংস্থান ও প্রকল্পে বরাদ্দের ঘোষণা করা হয়। এই নিয়েই সরব হয়েছেব বিরোধীরা। বাজেট পেশের পর এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন এই বাজেটে সঠিক অর্থ কোনও দিশা নেই। তাঁর দাবি, সাধারণ মানুষের কথা না ভেবে শুধুমাত্র আসন্ন ভোটের কথা মাথায় রেখেই এই বাজেট তৈরি করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ট্রেড মিলে ৩০ মিনিটে বাজেট তৈরি করেছেন বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি।
তিনি বলেন ‘বাজেট কিছুটা ভোটমুখী করার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু কাঁচা কাজ হয়েছে। সামগ্রিকভাবে আমাদের রাজ্যে যে বিষয়গুলো সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ যেমন- রাস্তা, বিমানবন্দর, সেতু, স্বাস্থ্য, শিক্ষা সংক্রান্ত কোনও ঘোষণা বাজেটে রাখা হয়নি। রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে শূন্যপদ রয়েছে, তা কীভাবে পূর্ণ করা হবে, এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ ফিরিয়ে আনা হবে কি না, ২ কোটির বেশি বেকার যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থানের দিশা কী হবে, তা উল্লেখ করা হয়নি।’
শুভেন্দু বলেন ‘এই বাজেটে পশ্চিমবঙ্গের যে সব জ্বলন্ত ইস্যু আছে, মানুষের যে আকঙ্খা আছে, তা পূরণের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। রাজ্যের অর্থনৈতিক দেউলিয়া অবস্থার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় আয়ুস্মান ভারত চালু করা হবে কি না, স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে এখনও পর্যন্ত কতজন পরিষেবা পেয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের বাইরে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যাবে কি না তা জানানো হয়নি। স্বাস্থ্যের জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষের বাইরের রাজ্যে যাওয়ার যে লম্বা লাইন, সেটা আরও দীর্ঘ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।’
তাঁর দাবি ‘এই রাজ্যের উত্তরবঙ্গ, সুন্দরবন, জঙ্গল মহল, রাঢ়বঙ্গ ও উন্নয়নের দিক থেকে পিছিয়ে থাকা রাজ্যগুলির জন্য কোনও প্যাকেজের ঘোষণা নেই। চা বাগানে পাট্টা দেওয়ার কথা আবার বলা হয়েছে। কিন্তু চা বাগান প্রোমোটারদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে, শাসক দলের ঘনিষ্ঠ শিল্পপতিদের বাণিজ্যে সুবিধা করে দেওয়া হচ্ছে। পাট্টা দেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট উল্লেখ রাখা হয়নি।’
ডিএ বাড়িয়ে আখেরে কোনও লাভই পেলেন না রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। এমনই দাবি করেছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তাঁর দাবি রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলনের জেরে পিছিয়ে গিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও, কেন্দ্রের দেওয়া ডিএ-র হারের চেয়ে অনেক পিছিয়ে রাজ্যের দেওয়া ডিএ-র হার। এতে খুশি হওয়ার কোনও কারণ নেই।