কলকাতা এবং দক্ষিণবঙ্গের তাপমাত্রার জ্বলুনি ভাবটা কমলেও বৃষ্টি এখনই আসছে না। বাতাসে আপেক্ষিক আদ্রতার মাত্রা বেশি থাকায় গরমের অস্বস্তি লেগে থাকবে বলেই আবহাওয়ার পূর্বাভাসে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
বৈশাখ মাস অতিক্রান্ত হতে চলেছে। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত কালবৈশাখীর দেখা নেই। আর জেরে এখনও বৃষ্টি অধরা বঙ্গে। সম্প্রতি এই মরসুমের প্রথম কালবৈশাখী হয়েছিল। ব্যাস! এরপর সেই যে তিনি হাওয়া হয়েছেন আর তার দেখা মিলছে না। মাঝে মাঝে বিকেল নাগাদ আকাশ কালো করে এলেও কালবৈশাখী হয়নি। জোর সে জোর কলকাতার কিছু অংশে এবং জেলার কিছু অংশে হালকা বারিধারা হয়েছে। তবে এতে গরমের যে আঁচ তা কমেনি। আবহাওয়া অফিস যে পূর্বাভাস দিয়েছে তাতেও আপাতত কলকাতা-সহ তামাম বঙ্গে সেভাবে বৃষ্টির দেখা মেলা ভার।
শনিবার সকালে আবহাওয়ার যে সরকারি পূর্বাভাস সামনে এসেছে তাতে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই সামান্য বজ্রবিদ্যুৎ -সহ ছিটেফোঁটা থেকে হালকা বৃষ্টির কথাই বলা হয়েছে। কলকাতার মানুষও এখন কোনও বৃষ্টি সেভাবে পাবে না। অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গের সমস্ত জেলাতেই বৃষ্টির পূর্বাভাস ও বজ্র বিদ্যুৎ-এর আগাম বার্তা দিয়ে রেখেছে আবহাওয়া দফতর।
আবহাওয়া দফতর যে পূর্বাভাস দিয়েছে তাতে ৬ মে কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রির আশপাশে থাকবে। কলকাতার ক্ষেত্রে এদিনের সর্বোচ্চমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম। তবে বাতাসে আপেক্ষিক আদ্রতা ৯১ শতাংশের বেশি থাকবে। যার ফলে প্যাঁচপ্যাঁচানি গরমের হাত থেকে উদ্ধার পাওয়ার সম্ভাবনা কম।
দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জেলার তাপমাত্রাই ৩৪ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করবে বলেই আবহাওয়ার পূর্বাভাসের রিপোর্টে প্রকাশ পেয়েছে। সেই সঙ্গে বজ্র বিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রেও তাপমাত্রা দাপট একটু কমবে। যদিও, এই অঞ্চলে ডুয়ার্স এলাকার জেলাগুলি এবং দার্জিলিং-ই শুধুমাত্র এই স্বস্তিটা পাবে। বাকি তিন জেলা মানে দুই দিনাজপুর ও মালদহে তাপমাত্রা ৩৪ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যেই ঘোরাফেরা করবে। ডুয়ার্সের জেলাগুলি মানে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি-র তাপমাত্রা ৩০ থেকে ৩৫ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করবে এবং বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। দার্জিলিং এবং তার পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি এলাকাগুলিতে তাপমাত্রা ১৮ থেকে ২২ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করার কথা। আর এই অঞ্চলেও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। শিলিগুড়িতে তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রির মধ্যে থাকার কথা। আর উত্তরবঙ্গের দ্বার বলে পরিচিত শিলিগুড়ি-ও হালকা বৃষ্টির স্বাদ পেতে পারে বলে পূর্বাভাস রিপোর্টে বলা হয়েছে।
ফি বছরই যে ভাবে গ্রীষ্মকালে বৃষ্টির আকাল এবং কালবৈশাখীর ভ্যানিস হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে তাতে একে এক্সট্রিম ক্লাইমেট বিপর্যয়েরই অঙ্গ বলে মনে করছেন আবহবিদরা। তাপামাত্রার পারদ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়া এরই অঙ্গ। আবহবিদদের মতে এর জন্য এপ্রিলে পারদের মাত্রা ৪০-৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার করে গিয়েছিল। যদিও, আবহাওয়া দফতরের এখনও পর্যন্ত যা পূর্ভাবাস তাতে মে মাসে তাপমাত্রার পারদ ৪০-এর গণ্ডী পার করতে পারবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। মে মাসে তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ ডিগ্রির মাত্রা পার করেছিল অন্তত ৬ বছর আগে।