শোনেনি বাবা-মায়ের কথা। নিজের বিয়ে রুখতে সটান চলে গিয়েছিল থানায়। যার জেরে বসিরহাটের সুনিতা এখন নাবালিকাদের রোল মডেল।
বাবা পেশায় দিনমজুর। দুঃস্থ পরিবারে এমনিতেই ভাণ্ডার অপূর্ণ। সংসারের ভার টানতে না পারায় নাবালিকা মেয়ের বিয়ের কথা ভাবেন বাবা স্বপন পাল। কিন্তু নিজেই সেই বিয়ে আটকে দেন সুনিতা। আজ সেই কারণে পুরস্কৃত বসিরহাট মহকুমার হাসনাবাদ ব্লকের শিমুলিয়া গ্রামের স্কুলছাত্রী।
বরুনহাট আদর্শ ইউনিয়ন হাই স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী সুনিতা। নাবালিকা সুনিতা পালকে পরিকল্পনা করে বিয়ের ব্যবস্থা করেন তার বাবা ও মা। এই বিয়ের পুরো পরিকল্পনা হয়েছিল সুনিতার অমতে। নাবালিকার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কোনওভাবে সেই খবর যায় চাইল্ডলাইনের আধিকারিকদের কাছে। এরপরই হাসনাবাদের বিডিও অরিন্দম মুখার্জী ও ব্লকের বিডিওর নির্দেশে, কন্যাশ্রী প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা প্রণব মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি দল পৌঁছে যায় ওই নাবালিকার বাড়ি। কেন নাবালিকার বিয়ে দিতে চাইছেন তা জানতে চাওয়া হয় পরিববারের কাছে।
পরিবারের সাথে কথা বলেন প্রনববাবু। হাসনাবাদ বিডিও অফিসের তরফে ওই নাবালিকার পরিবারকে কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধার কথা বলা হয়।সেই সময় ওই নাবালিকার বাবা স্বপন পাল আঠারোর পরই মেয়ের বিয়ে দেবেন বলে মুচলেকা দেন। ইতিমধ্য়েই সংসারের অনটনের কথা ভেবে ওই নাবালিকার ঠাকুরমার বার্ধক্য ভাতাদেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। কথামতো নাবালিকার হাতে কন্যাশ্রীর সংশয়পত্র তুলে দেন কন্যাশ্রী দফতরের ভারপ্রাপ্ত অফিসার প্রণব মুখোপাধ্যায়। কন্যাশ্রীর সুযোগ-সুবিধা পেয়ে বেজায় খুশি সুনিতা।
তার এই বিয়ে রুখে দেওয়ার কাহিনী পৌঁছে গিয়েছে হাসনাবাদের কোনায় কোনায় । নাবালিকার এই কীর্তি দেখে গর্বিত স্কুল কর্তৃপক্ষ। বরুনহাট আদর্শ নিকেতন বলতেই এখন অনেকে সুনিতার স্কুল বলে চেনে। একাদশ শ্রেণীর এই ছাত্রীকে সাহসিকতার সম্মান দিচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। বাল্যবিবাহ রোধের সচেতনতা বার্তায় সুনিতা এখন নতুন পথের দিশারী।