রবিকবির হাত ধরে এই বাংলায় চোখ মেলুক তাঁদের কুঁড়ি-এমনই তো চেয়েছিলেন হাবরা জয়গাছি শ্রদ্ধানন্দ পল্লীর দেবাশিস ও সুস্মিতা। হলও তাই।
রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে গাইতে ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দিলেন মা। অক্ষয় তৃতীয়ার মতো বিশেষ দিনে কোল আলো করে ঘরে এসেছে মা লক্ষ্মী-দিব্যাংশী। আর তাঁকে স্বাগত জানানোর মতো শুভ সময়ে রবীন্দ্রসঙ্গীতের চেয়ে ভালো উপহার আর কিবা হতে পারে।
ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল আটটা বেজে চার মিনিট। অপারেশন থিয়েটারে চলছে সদ্যোজাতকে পৃথিবীর আলো দেখানোর প্রস্তুতি। অপারেশনের বেডে শুয়ে প্রসূতি মায়ের গলায় তখন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জনপ্রিয় একটি গান "আমারো পরানো যাহা চায় তুমি তাই গো। রবিকবির হাত ধরে এই বাংলায় চোখ মেলুক তাঁদের কুঁড়ি-এমনই তো চেয়েছিলেন হাবরা জয়গাছি শ্রদ্ধানন্দ পল্লীর দেবাশিস ও সুস্মিতা। হলও তাই।
ইতিমধ্যেই অপারেশন থিয়েটারে সেই গান গাওয়ার দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। ফুটফুটে কন্যা সন্তানের নাম রাখা হয়েছে দিব্যংশী দাস। জানা যায় আড়াই বছর আগে হাবরা হাটথুবার বাসিন্দা সুস্মিতার সঙ্গে বিয়ে হয় দেবাশিস দাসের সঙ্গে। চলতি মাসের তিন তারিখ সকালে অন্তঃসত্ত্বা সুস্মিতাকে মসলন্দপুরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। এরপরে শুভ সময়ের অপেক্ষা- একপ্রকার মানসিক চাপ কমাতে সুস্মিতার সাথে বিভিন্ন মজার গল্প থেকে শুরু করে গল্প আড্ডার মধ্যে রাখার চেষ্টা করেন ডাক্তার থেকে নার্স সকলেই।
হঠাৎ করে ডাক্তার বাবু জানতে পারেন সুস্মিতা দেবী মিউজিক্যালে অনার্স নিয়ে পাস করেছেন তাই ডাক্তার বাবু থেকে নার্স সকলেই তার কাছে একটি রবীন্দ্র সংগীত শোনানোর আবদার রাখেন। ওটি(প্রসব) চলাকালীনই কবি গুরুর গান গেয়ে ডাক্তার বাবুদের আবদার মেটালেন সেই সাথে এক ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দিলেন মা সুস্মিতা দেবী।
তিনি জানিয়েছেন আমি আজ ভীষণ খুশি আমার মেয়ে হয়েছে,ওই দিনটির কথা কোনদিনও ভুলতে পারবো না। ভুলতে পারবো না ডাক্তার নার্সদের কথাও। তাইতো কবিগুরুর ১৬১ তম জন্মশতবার্ষিকীতে রবীন্দ্রনাথের প্রতি শ্রদ্ধা এবং ডাক্তার নার্সদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সেদিনের গান গাওয়ার সেই বিশেষ মুহূর্তের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছি - ভালো সাড়াও পেয়েছি। মায়ের গলায় রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনেই পৃথিবীর আলো দেখেছে মেয়ে তাইতো মেয়ে বড় হলে মেয়েকেও রবীন্দ্র সংগীত শেখাবেন বলে জানিয়েছেন মা।
এদিন সেই মুহূর্তে রবীন্দ্রসঙ্গীতের যে গানটি গেয়েছিলেন সেই গানটি দু'কলি গেয়েও শোনালেন মা সুস্মিতা দে। গোটা ঘটনায় খুশি ফুটফুটে দিব্যংশী দাসের বাবা দেবাশিস দাসও।