ভাষা দিবসে শহীদের ভিটে ঘিরে ডান-বাম ভুলে একতা, দিন ফুরলেই 'ভ্যানিশ' সকলেই বাবলা গ্রামে


 

  • ৫২ এর ভাষা আন্দোলনের অন্যতম শহীদ আবুল বরকত 
  • তাঁর জন্ম ভিটে মুর্শিদাবাদের সলারের বাবলা গ্রামে 
  • তাই ২১ ফ্রেবুয়ারীতে ছুটে আসেন ডান -বাম সব পক্ষই
  • সকলেই প্রসংশা কুড়োতে ব্যাস্ত,দিন শেষ হলেই 'ভ্যানিশ' 

Asianet News Bangla | Published : Feb 21, 2021 10:30 AM IST / Updated: Feb 21 2021, 04:03 PM IST

ভোট বড় বালাই। তার থেকেও ঢের জটিল রাজনীতি।তাই সেখান থেকে নিস্তার নেই মানুষের জন্ম মৃত্যুর আবেগও। ৫২ এর ভাষা আন্দোলনের অন্যতম শহীদ আবুল বরকত।তার জন্ম ভিটে মুর্শিদাবাদের সলারের বাবলা গ্রামে।সারা বছর বরকতের ভিতের চৌহদির আশেপাশে দেখা মেলেনা রাজনীতিবিদদের।তবে ২১ ফ্রেবুয়ারীর রব উঠলেই হুহু করে ছুটে আসেন ডান -বাম সব পক্ষই।সকলেই প্রসংশা কুড়োনোর দৌড়ে তখন ব্যাস্ত।আর দিন শেষে সকলেই 'ভ্যানিশ'।বাবলার গুটি কয়েক লোক,যারা কেউ বাবা,ঠাকুরদার মুখে শুনে, বরকতের সমসাময়িক হবার দরুন প্রকৃত অর্থেই চান শহীদকে নিয়ে অচিরেই বন্দ হোক রাজনীতি।বরকত হয়ে উঠুক সকলের,কোন দল বিশেষের নয়। 


সেই আন্তর্জাতিক মাতৃ ভাষা দিবসের মুহূর্তে রবিবার সালারের স্থানীয় গোলাম হোসেন আক্ষেপের সুরে দাবি তুলে বলেন, 'ভাবতে অবাক লাগে,যে গুলি খেল,প্রাণ দিল,সেই শহীদের নামে আজ পর্যন্ত একটা গ্রামের নাম,রাস্তার,নাম এমনকি একটা ভাল সংগ্রহ শালাও আজ এত বছরে গড়ে উঠল না ।' পরাধীন ভারতে ১৯২৭ সালের ১৬ জুন সলারের বাবলা গ্রামে জন্ম আবুল বরকতের।কৃষক পরিবারে  বাবা সামসুজোহা শেখ ও মা হাসিনা বেওয়ার কাছে বড্ড আদরের ছিল সে।ছোট থেকেই বাংলা ভাষার প্রতি ছিল তার গভীর নাড়ীর টান।গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের পাঠ শেষ করে ভর্তি হন স্থানীয় তালিবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে।সেখান থেকে পরে বহরমপুর কে এন কলেজের পাঠ শেষ করে ও উচ্চ শিক্ষার জন্য বাংলাদেশের  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাড়ি দেন।সেখানে বাংলা ভাষাকে মাতৃভাষার মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ১৯৫২ সালের ২১ফেবুয়ারীর এই দিনটিতেই গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে যায় বরকতের দেহ।


সবাই ভুলে গেলেও শহীদের মা হাসিনা বেওয়া জীবিত থাকা কালীন এক মুহূর্তের জন্যেও ছেলেকে ভুলে উঠতে পারেনি।গ্রামের অনেকেই জানান,'বছরের এই দিনটিতে গ্রামের ছোটদের নিয়ে শহীদের মা বাড়ীর চারপাশে পিদিম জ্বেলে স্মরণ করত বরকত কে,তবে এখন সেই সবের কোন বালাই নেই।হাসিনা খাতুনের এই দেশ ছেড়ে ভিটেমাটি বিক্রি করে বাংলাদেশে চলে যাবার পর থেকেই তা বন্দ।' যদিও সেই দুঃখ ঘোচাতে শহীদকে নিয়ে  আসরে নেমে পরে ডান-বাম দুই পক্ষই।শুধু তাই নয়।এমনকি কংগ্রেস সিপিএম দুটি আলাদা আলাদা  মঞ্চ গড়ে শহীদ বরকত কে নিয়ে।কংগ্রেস তৈরি করেছে 'আবুল বরকত সঙ্ঘ'।পিছিয়ে না থাকে সিপিএম বানায় 'শহীদ আবুল বরকত কেন্দ্র'।


এই ব্যাপারে জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র তথা অধীর চৌধুরীর রাজনৈতিক সচিব জয়ন্ত দাস বলেন,'শহীদ কে নিয়ে কোন ধরনের রাজনীতির পক্ষপাতী নয় আমরা,যে কেউ চাইলে আমাদের মঞ্চে কোন কাঁটা তার ছাড়াই শহীদ কে সম্মান প্রদর্শন করতে এগিয়ে আসতেই পারে।' পাল্টা সিপিএম এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়,'বামেরা এই দিনটিকে আলাদা গুরুত্ব দিয়ে বিচার করে ,সেখানে শহীদ নিয়ে তাদেরও কোন ছুঁতমর্গ নেই।এই সকলের মাঝে পিছিয়ে নেই শাসক দল তৃনমুল।' স্থানীয়  তরফে জানানো হয়,  'রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে আজ রবিবার থেকে টানা ৩ দিন ব্যাপী বরকতের জন্ম ভিতেই চলবে বরকত কে নিয়ে নানাবিধ অনুষ্ঠান।' তবে জেলা বাসীর একটাই প্রশ্ন প্রাণ দিয়েও বছরের অন্তত একটা দিনেও সকল রাজনীতিবিদদের শহীদ বরকত স্মরণে এক করতে পারবে বাবলা।

Share this article
click me!