অধিকাংশ ক্ষেত্রে হয়নি এফআইআর-ই, হলেও তাতে যতজনের নাম আছে, তার ৩ শতাংশকেও গ্রেফতার করেনি। ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে তাদের রিপোর্টে বঙ্গ পুলিশর ভূমিকা নিয়ে কী বলল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন?
বৃহস্পতিবার, পশ্চিমবঙ্গের ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এই তদন্তের সময়ে রাজ্যপুলিশের ডিআইজি-র কাছ থেকে ভো পরবর্তী হিংসার তথ্য় সংগ্রহ করেছিল কমিশনের তদন্ত কমিটি। সেই রিপোর্ট থেকে দেখা যাচ্ছে হত্যা, ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি, মারধর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, ভাঙচুর, হুমকি মিলিয়ে মোট ১৯৩৪টি অভিযোগ জমা পড়েছিল পুলিশের কাছে। যার ভিত্তিতে ১১৬৮টি ক্ষেত্রে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। কিন্তু, সেইসব এফআইআর-এ যতজনের নাম ছিল, তারমধ্যে মাত্র ২.৮৮ শতাংশকে গ্রেফতার করতে পেরেছিল পুলিশ! তাদের আবার বেশিরভাগই জামিন পেয়ে গিয়েছে। তাই প্রশ্নটা উঠেই যাচ্ছে পুলিশ কি ঘুমিয়ে আছে?
ডিআইজির অফিসের প্রতিবেদন বলছে, ভোট পরবর্তী হিংসার ক্ষেত্রে সবথেকে বেশি অভিযোগ এসেছে ভাঙচুড়, লুটপাট সরকারি ও ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতি করার, ৯৪০টি। এছাড়া অপরাধমূলক হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ৫৬২ টি, মেরে গুরুতর আহত বা অক্ষম করে দেওয়ার অভিযোগ ৩৯১টি, হত্যা ২৯ এবং ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ রয়েছে ১২টি। এইসব অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের করা এফআইআরগুলিতে নাম ছিল মোট ৯৩০৪ জনের, কিন্তু পুলিশ গ্রেফতার করতে পেরেছে মাত্র ১৩৪৫ জনকে।
আরও পড়ুন - ভোট পরবর্তী হিংসা - সবথেকে বেশি অভিযোগ কোচবিহারে, ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রেই FIR করেনি পুলিশ
আরও পড়ুন - 'বঙ্গে আছে শাসকের আইন' - মমতা'কে চরম অস্বস্তিতে ফেলতে পারে NHRC'র তদন্ত রিপোর্ট
আরও পড়ুন - ভোট পরবর্তী হিংসায় তছনছ চোপড়া, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এল কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশন
মানবাধিকার কমিশন এই তথ্যের ভিত্তিতে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কড়া সমালোচনা করেছে। তারা, বলেছে, ডিআইজির কার্যালয় থেকে দেওয়া তথ্যই বলে দিচ্ছে স্থানীয় পুলিশ কতটা অদক্ষ এবং অপরাধীদের প্রতিরোধ করার কেউ নেই। পুলিশ যে প্রভাবিত এবং পক্ষপাতদুষ্টভাবে কাজ করছে তা একেবারেই স্পষ্ট। শাসক দলের গুন্ডাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার মতো সাহসই তাদের নেই। গ্রেফতার হওয়া আসামিদের সংখ্যা খুব কম, অনেক ক্ষেত্রে মামলাই করা হয়নি, কোনও কোনও ক্ষেত্রে তদন্ত করা হয়নি, কোনও কোনও ক্ষেত্রে অপরাধের মাত্রা লঘু করা হয়েছে, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে এমনভাবে মামলা সাজানো হয়েছে যে তারা সহজেই জামিন পেয়েছে, আর কারাগারে যারা আছে তাদের অধিকাংশই ভুয়ো - পুলিশি ব্যবস্থাটিকেই উপহাস করছে বঙ্গ পুলিশ।