বর্তমানে মাটির প্রদীপ তৈরি করে খুব কম মুনাফা দেখতে পাচ্ছেন তাঁরা। কারণ বর্তমানে বৈদ্যুতিক বিভিন্ন টুনি বাল্ব বাজারে চলে আসায় মাটির প্রদীপের চাহিদা অনেক কমে গিয়েছে।
আর কদিন বাদেই দীপাবলি উৎসব (Dipabali Festival)। দীপাবলি অর্থাৎ কালী পূজার(Kali puja) প্রধান সরঞ্জাম মাটির প্রদীপ(earthen lamps) তৈরি করতে ব্যস্ত কুমোর পাড়ায় কুমোররা(potters)। এমনই দৃশ্য ধরা পরল পুরাতন মালদা পৌরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের রশিলাদহ মণ্ডলপাড়ায়। তাঁদের দাবি দীর্ঘ কুড়ি বছর ধরে মাটির কাজ করে আসছেন তাঁরা। করোনার আবহের জন্য তাদের ব্যবসা কিছুটা হলেও ক্ষতির মুখে পড়েছে। তার উপরে বৃষ্টিপাত একটানা হয়ে যাওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। কাঁচামালও নষ্ট হয়েছে অনেকটাই।
শিল্পীরা আক্ষেপের সুরে জানাচ্ছেন ইদানিং আর মুনাফা মেলে না। বর্তমানে মাটির প্রদীপ তৈরি করে খুব কম মুনাফা দেখতে পাচ্ছেন তাঁরা। কারণ বর্তমানে বৈদ্যুতিক বিভিন্ন টুনি বাল্ব বাজারে চলে আসায় মাটির প্রদীপের চাহিদা অনেক কমে গিয়েছে। কিন্তু তবুও প্রতিবছর ১৫ থেকে ২০ হাজার মাটির প্রদীপ তৈরি করেন তাঁরা। এই মাটির প্রদীপগুলি পাইকারি হারে বিক্রি করা হয় ৫০০ টাকায় এক হাজার পিস।
শিল্পীদের দাবি এতদিন থেকে তাঁরা এই কাজে যুক্ত থাকলেও কোনো রকম শিল্পীর পরিচয়পত্র হয়নি বা শিল্পী হিসাবে কোন ধরনের সরকারি সহযোগিতাও পাননি রাজ্য সরকারের তরফে।
কথিত আছে, চোদ্দ বছরের বনবাস শেষে যেদিন অযোধ্যায় ফিরেছিলেন রামচন্দ্র, সেদিন শহরে দীপাবলী উৎসব পালন করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেই রীতি মেনে এখনও কালীপুজোর আগে বাড়ি অলোকমালায় সাজিয়ে তোলেন প্রায় সকলেই। কিন্তু মাটির প্রদীপ কী আর জ্বালানো হয়! চিনের তৈরি এলইডি লাইটের কদরই বেশি। চেনা সেই ছবিটা কি এবার বদলাবে?
খুব একটা আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন না মালদহের এই শিল্পীরা। এলাকায় বছরভর প্রদীপ-সহ মাটির বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে এই পরিবারগুলি। কালীপুজোর আগে ব্যস্ততা বেড়েছে তাঁদের। সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত কাজ করে চলেছে মৃৎশিল্পীরা। এবার বাড়িতে মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে সাবেকি কায়দায় দীপাবলীর আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। হরেক রকমের প্রদীপ তৈরি কাজও চলছে জোরকদমে।