চাপের মুখে পড়ে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান সুবোধ। সেখানে তিনি টিকা নেন। যদিও তাঁর দাবি টিকা নিয়েও অনেক মানুষ করোনার কবলে পড়ছেন তাই তিনি ভরসা করতে পারেন না।
করোনা যুদ্ধে যেখানে ভ্যাকসিনকেই ( Corona Vaccine ) একমাত্র ব্রহ্মাস্ত্র বলছেন বিশেষজ্ঞরা সেখানে এখনও টিকা নিয়ে নানা আতঙ্ক, ভয় রয়েছে সাধারণ মানুষের মনে। এমনকী এই তালিকায় থেকে বাদ পড়ছেন না শিক্ষকের ( Teacher ) মতো সমাজের বুদ্ধিজীবীরাও। স্বাস্থ্য কর্মীরা বারাবার বাড়ি এসে টিকা নেওয়ার বিষয়ে সচেতন করলেও ফেরেনি হুশ। উল্টে তাদের সঙ্গে তর্ক জুড়ে দিয়েছেন কোচবিহারের বক্সিরহাট থানার (Boxirhat police station in coochbehar) মহিষকুচি গ্রামের সরকারি প্রথামিক স্কুলের শিক্ষক সুবোধ কর। এমনকী টিকা নেননি তাঁর স্ত্রীও। স্থানীয়দের অভিযোগ গ্রামের স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীরা প্রায় এগারো বার বাড়ি গিয়ে টিকা নেওয়ার জন্য সুবোধবাবুকে তাগাদা দিয়েছেন৷ কিন্তু তারপরেও তাদের টনক নড়েনি।
এদিকে সুবোধবাবুর এই কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণে স্বভাবতই দীর্ঘদিন থেকে ক্ষোভ বাড়ছিল স্থানীয়দের মধ্যে। এমনকী টিকার একটিও ডেজ না নিয়ে যত্রতত্রই ঘোরাফেরা করছিলেন ওই শিক্ষক। এমতাবস্থায় মঙ্গলবার দুপুরে সুবোধের বাড়িতে চড়াও হন গ্রামের মহিলাদের একাংশ। তাঁরা সুবোধকে টিকা নেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু তাদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন ওই শিক্ষক। সুর চড়ান তাঁর স্ত্রীও। আর তাতেই স্থানীয়দের মধ্যে আরও বাড়তে থাকে ক্ষোভ। স্থানীয় মহিলাদের আরও অভিযোগ, সুবোধবাবুর টিকার ব্যাপারে স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে যোগাযোগ করা হয় পঞ্চায়েত প্রধান সুমন বর্মনের সঙ্গে। খবর পেতেই টিকা দেওয়ার ব্যাপারে নিজে উদ্যোগী হয়ে সুবোধ সরকারের সঙ্গে কথা বলেন পঞ্চায়েত প্রধান। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি। এমনকী প্রধানের বিরুদ্ধে গিয়ে নিজের অবস্থানে অনড় থাকেন ওই প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক। এদিক এই ঘটনা নিয়ে মঙ্গলবার দুপুর থেকে ফের ব্যাপ জনরোষ তৈরি হয় গোটা এলাকা। দীর্ঘক্ষণ তর্কাতর্কির পরেও ওই শিক্ষক ভ্যাকসিন নিতে রাজি না হওয়ায় তার বাড়িতে তালা লাগিয়ে দেন স্থানীয় মহিলা। আর তাতেই চাপে পড়ে যান ওই শিক্ষক।
আরও পড়ুন-ক্লাব অনুদান নিয়ে চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট, ‘দুর্নীতির সরকার’ বলে মমতাকে তোপ ভারতীর
এরপরেই চাপের মুখে পড়ে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান সুবোধ। সেখানে তিনি টিকা নেন। যদিও তাঁর দাবি টিকা নিয়েও অনেক মানুষ করোনার কবলে পড়ছেন তাই তিনি ভরসা করতে পারেন না। অন্যদিকে এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আশিস মণ্ডল সাফ জানাচ্ছেন এর আগে ১০ থেকে ১২ বারেরও বেশি সময় করোনা টিকা দেওয়ার জন্য ওই শিক্ষকের বাড়িতে যান স্বাস্থ্য কর্মীরা। কিন্তু কোনোবারেই তাকে রাজি করানো যায়নি। আর তাতেই ক্ষোভ বাড়ে স্থানীয়দের মধ্যে।