জৌলুস আজ অতীত, 'জলসাঘর' খ্যাত নিমতিতা রাজবাড়িতে কোনওক্রমে চলছে পুজো

Published : Oct 05, 2019, 05:44 PM ISTUpdated : Oct 05, 2019, 05:46 PM IST
জৌলুস আজ অতীত, 'জলসাঘর' খ্যাত নিমতিতা রাজবাড়িতে কোনওক্রমে চলছে পুজো

সংক্ষিপ্ত

মুর্শিদাবাদ জেলার নিমতিতা রাজবাড়ি এখানেই শ্যুটিং হয়েছে সত্যজিৎ রায়ের 'জলসাঘর', 'দেবী'-র জৌলুস হারিয়ে আজ কোনওক্রমে চলছে দুর্গাপুজো

এক নামে  সবাই চেনে। শুধু রাজ্যে নয়, জাতীয় স্তরেও তার পরিচিতির অন্ত নেই। কিন্তু ওই সুখ্যাতিটুকু বাদ দিয়ে বাকি সবকিছুই যেন আজ স্মৃতির অতলে। জরাজীর্ণ ভগ্ন দশা কেড়ে নিয়েছে তার অতীতের জৌলুস। সংরক্ষণের অভাবে একসময়ের বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে মুর্শিদাবাদের যে নিমতিতা রাজবাড়ি সেলুলয়েডের পর্দায় বিখ্যাত হয়েছিল 'জলসাঘর' আর  'দেবী'র মধ্যে দিয়ে, আজ তা কোনওক্রমে দাঁড়িয়ে রয়েছে তাসের ঘরের মতই।

প্রায় ৪০০ বছর ছুঁই ছুঁই পুরনো এই রাজবাড়ি তৈরি হয়েছিল গৌরসুন্দর চৌধুরী ও দ্বারকানাথ চৌধুরীর হাতে। রাজপ্রাসাদের চতুর্দিকে তখন রাজকীয় বৈভবের ছাপ ছিল। কিন্তু, আজ তার বুক থেকে  এক এক করে খসে পড়ছে ইঁট, দেওয়ালের চুন সুরকির আস্তরণ। দালানবাড়িগুলিও আজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। নেই কোনও আলোর উপযুক্ত ব্যবস্থাও। এক সময় নাটকের আঁতুড়ঘর ছিল এই রাজবাড়ি। ক্ষিরোদাপ্রসাদ, বিদ্যা বিনোদ, শিশির কুমার ভাদুরির নাটক মঞ্চস্থ হত এখানে। এখানেই ১৯৫৮ সালে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্প অবলম্বনে সত্যজিৎ রায় এখানেই তৈরি করেন তাঁর কালজয়ী ছবি  ‘জলসাঘর’। পারে ১৯৬০ সালে প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায়ের কাহিনি অবলম্বনে ‘দেবী’-র শ্যুটিংও হয়। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়,শর্মিলা ঠাকুরের মতো অভিনেতারা এই ঐতিহাসিক রাজবাড়িতে থেকেছেন অনেকদিন। এ ছাড়া পালাগান, ঝুমুর, যাত্রা, মেলা এই সব ছিল রাজবাড়ির পুজোর অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। 

বর্তমানে গৌরসুন্দর চৌধুরীর চতুর্থ প্রজন্ম এই পুজো করে। বাপ-ঠাকুরদার আমলের এই পুজো তাঁরা ফেলতে না পারলেও এই পুজোতে নেই তার পুরনো গৌরব। পুজোর জন্য তারা কলকাতা থেকে নিমতিতায় আসেন। এখনও একচালার দেবী প্রতিমা তৈরি হয়। প্রতিমা শিল্পীও বংশানুক্রমিক ভাবে এই কাজ করে আসছেন। তবে পুজোর জৌলুস না থাকলেও এখনও নিমতিতা রাজবাড়ির পুজো না দেখলে এলাকার অনেকের কাছেই পুজো অসম্পূর্ণ। ইতিহাসের পাতা যেভাবে জীর্ণ হয়ে যায় ঠিক সেভাবেই কালের গর্ভে চলে যেতে বসেছে মুর্শিদাবাদের গৌরব নিমতিতা রাজবাড়ি। এই বাড়ির এক পাশে রয়েছে ঠাকুর দালান। এখন কোনও রকমে চলছে পুজোর কাজ। 

পুরনো জাঁকজমক আজ না থাকলেও পুজো কিন্তু চলে আসছে একই নিয়মনিষ্ঠা মেনে। এই অঞ্চলে এক সময় একমাত্র রাজবাড়িরই পুজো হত। সেখানে  অংশ নিত গ্রাম ছাড়িয়ে দূরদূরান্তের মানুষও। পুজোর ক’দিন নববধূর সাজে সেজে উঠত এই রাজবাড়ি। ষষ্ঠীর দিন হত মায়ের আবাহন। গ্রামের মানুষের পাত পড়ত রাজবাড়িতেই। পুজো শেষে ছাড়া হতো নীলকণ্ঠ পাখিও। 

এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা প্রৌঢ় অমল দাস বলেন,'এই রাজবাড়ির সঙ্গে কত মানুষের কত স্মৃতি যে জড়িয়ে আছে, তা বলে শেষ করা যাবে না। তাই পুজো এলে কয়েকদিনের জন্য মনটা যেন সেই পুরনো দিনে ফিরে যায়।'

PREV
click me!

Recommended Stories

RG Kar Case : আদালতে CBI আধিকারিকের চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি! কী বললেন তিলোত্তমার মা-বাবা?
BREAKING NEWS: প্রকাশিত হল SIR-এ বাদ যাওয়া নামের তালিকা! আপনার নাম নেই তো? ক্লিক করে জেনে নিন