বুদ্ধদেব পাত্র, সংবাদদাতা- স্বাধীনতার ৭৩ বছর বামফ্রন্টের ৩৪বছর আর তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের ৮ বছর পরেও আজও উন্নয়ন 'মাখে না খায়' তা জানে না অযোধ্যা পাহাড় কোলের গ্রাম লুসকুডি। উন্নয়ন আসবে গ্রামে এই অপেক্ষায় আজও এই গ্রামের বাসিন্দারা।
পুরুলিয়ার ঝালদা১ নাম্বার ব্লকের মাঠারি খামার গ্রাম পঞ্চায়েতের লুসকুডি গ্রাম | পাহাড় জঙ্গল ঘেরা লুসকুডি গ্রামে নেইয়ের তালিকাটা বেশ দীর্ঘ। প্রথমে এই নেই গ্রামে ঢোকার রাস্তাই নেই। রাস্তা করে ঢুকতে হবে গ্রামে।গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও নেই আই সি ডি এস কেন্দ্র।পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই ফলে গ্রাম থেকে দু কিলোমিটার দূরে রুপাই নদী থেকে মাথায় করে জল নিয়ে আসেন গ্রামের মেয়েরা।
গ্রামের বিনতা মাহাতো,রবীন্দ্র নাথ মাহাতোরা জানান।দীর্ঘ কয়েক দশক বছর ধরে আমাদের রুপাই নদীর পাতা পচার জল আমাদের পানীয় হিসাবে ব্যবহার করতে হয়।এই জল পান করার পর ফলে বছর ভর আমাদের নানান অসুখে ভুগতে হয়।এক কথায় রাজ্য সরকার যতই উন্নয়নের ঢাক পেটাক,উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এই গ্রামে। মাঠারি খামার গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত যে লুসকুডি গ্রাম সেই গ্রাম পঞ্চায়েতটি দীর্ঘদিন যাবৎ ছিল কখনো বামফ্রন্টের দখলে।কখনও বা বাম কংগ্রেস জোটের দখলে থাকলেও তৃণমূল কংগ্রেস এই এলাকায় ঘাসফুল ফোটাতে পারেনি।
২০১৮এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে মাঠারি খামার গ্রাম পঞ্চায়েত একক ভাবে দখল করে সিপিআইএম। পঞ্চায়েতের উপ প্রধান হেমন্ত কুমার মাহাতো বলেন।এর পূর্বে মাঠারি খামার গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রায় ৪০ বছর ধরে বাম কংগ্রেসের দখলে ছিল।তখন কোন উন্নয়নই হয়নি। লুসকুডি গ্রামের বর্তমান দুরবস্থার কথা স্বীকার করে নিয়েপঞ্চায়েতের উপপ্রধান বলেন আমরা সবে মাত্র ক্ষমতায় এসেছি। পঞ্চায়েত থেকে প্রধান, সদস্য সহ আমরা বেশ কয়েকজন লুসকুডি গ্রাম পরিদর্শন করেও এসেছি। খুব শীঘ্রই ওই গ্রামের পানীয় জল সহ অন্যান্য সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করছি।
বলা বাহুল্য একসময় এলাকাটি ছিল মাওবাদীদের খাস তালুক। এলাকার অনুন্নয়নের সুযোগ নিয়ে এই লুসকুডি গ্রামের আসে পাশে ডেরা বেঁধে ছিল মাওবাদীরা। ২০১০ সাল পর্যন্ত বারুদের কটু গন্ধ আর ভারী বুটের আওয়াজে ত্রস্ত হয়ে উঠেছিল মাঠারি খামার এলাকা।২০১১ সালে রাজ্যে পালা বদল করে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরে মাওবাদীরা এলাকা ছাড়া হলেও লুসকুডি গ্রামে বিন্দুমাত্র হয়নি পরিবর্তন। না কেন্দ্র না রাজ্য কোন প্রকল্পে আসেনি এই গ্রামে। গ্রামবাসীদের ক্ষোভ দেশ এত এগিয়ে যাচ্ছে অথচ পুরুলিয়ার লুসকুডি গ্রামে কোন গর্ভবতী মহিলা বা মুমূর্ষু রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে রাস্তাতেই সন্তান প্রসব আর মুমূর্ষু রোগীর মৃত্যুর ঘটনা লুসকুডি গ্রামের মানুষের গা সওয়া হয়ে গেছে।
গ্রাম বাসীদের দাবি রাজ্য সরকার থেকে ২ টাকা কেজি চাল আর কয়েকটা আবাস যোজোনার ঘর ছাড়া পাননি কিছুই। বেশ কিছুদিন থেকেই জেলা শাসক জেলার বিভিন্ন প্রান্তের উন্নয়নের হাল হকিকত ক্ষতিয়ে দেখতে ছুটির দিনে গো টু ভিলেজ কর্মসূচি শুরু করেছেন।এই প্রসঙ্গে বাগমুন্ডির বিধায়ক তথা বিধানসভার ডেপুটি লিডার নেপাল মাহাতো বলেন ডি এম গ্রামে গ্রামে ঘুরছে ঠিকই। তবে এটা ঠিকমতো ইমপ্লিমেন্ট হচ্ছেনা। যার জন্য লুসকুডি গ্রামের মত বহু গ্রাম এই অবস্থায় রয়ে গেছে। লুসকুডি গ্রামটি আমার বিধান সভা এলাকায় পড়ছে।খুব শীঘ্রই বিষয়টি নিয়ে কি করা যায় দেখছি। ওই গ্রামে রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জমি সমস্যার কারণে আটকে রয়েছে। লুসকুডি গ্রামের মানুষের মুখেএকটাই কথা মধ্যযুগে পড়ে রয়েছে লুসকুডি গ্রাম। এই অবস্থা থেকে আমাদের এবার মুক্তি দিক প্রশাসন।