বৃহস্পতিবার কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল আবহাওয়া দফতর। সেই আশঙ্কাকে সত্যি করে দিনভর বৃষ্টির কারনে ভাঙন দেখা দিল দক্ষিণবঙ্গের নদীবাঁধ গুলিতে। কোথাও, ভাঙল নদীবাঁধ ভেঙে চাষের জমিতে ঢুকেছে নোনা জল। তার ফলে কৃষিতে বড়সড় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। আবার কোথাও, নদীর বাঁধ ভেঙে গ্রামে জল ঢুকেছে। বন্য়া পরিস্থিতি তৈরি না হলেও জমা জলে চূড়ান্ত দুর্ভোগে শিকার হয়েছেন গ্রামবাসীরা।
দিনভর টানা বৃষ্টির জেরে উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখা ও বসিরহাট বিদ্য়াধরী নদীর বাঁধ ভেঙেছে। হাওড়ার বাগনান ও পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে রূপনারায়ণ নদীর বাঁধ ভেঙে বিপত্তি। নদী ভাঙনের জেরে আতঙ্কে বাগনানের বাসিন্দারা। পাশাপাশি, তমলুকে তাম্রলিপ্ত পুরসভা জল ঢুকে দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখায় এদিন টানা বৃষ্টির জেরে বিদ্যাধরী নদীতে নতুন করে ভাঙন দেখা দেয়। মিনাখা এলাকায় নদীর ৫০ ফুট বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে নোনা জল ঢুকতে থাকে চাষের জমিতে। মেছো ভেড়িতে জল ঢুকে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা।
পাশাপাশি, বসিরহাট ব্লকের আটপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মুন্সিঘেরি এলাকায় বিদ্য়াধরী নদীর ২০ ফুট বাঁধ ভেঙে যায়। তার ফলে মুন্সিঘেরি, মল্লিক ঘেরি, ছয়আনা, ঘাটপারা সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে জল ঢুকে যায়। গ্রামবাসীদের দাবি, ঘূর্ণিঝড় আমপানের জেরে আগেই দুর্বল হয়েছিল নদীবাঁধ। এদিন দিনভর বৃষ্টির কারনে নদীবাঁধ ভেঙে যায়।
অন্যদিকে, তমলুকের তাম্রলিপ্ত পুরসভা এলাকায় রূপনারায় নদীর বাঁধ ভেঙে এলাকায় জল ঢুকে যায়। ফলে জলবন্দি হয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা। বিগত ১৫ বছরে এমন ঘটনা তাঁরা দেখেননি বলে দাবি গ্রামবাসীদের। শুধু তাই নয়,কৌশিকী অমবস্য়ায় রূপনারায়ণ নদীতে তীব্র জলোচ্ছ্বাসের কারনে জল ঢুকে যায় কোলাঘাট বাজারেও। বাজার থেকে জল নামাতে তৎপর হয় প্রশাসন।
হাওড়ার বাগনানেও রূপনারায়ণ নদীর বাঁধ ভেঙে বিপত্তি। দ্বীপমালিতা ও নসিবপুর এলাকায় নদীর ১২০ ফুট বাঁধ ভেঙে যায়। ঘটনার জেরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনাস্থলে গিয়ে নদীর বাঁধ পরিদর্শন করেন সেচ দফতরের আধিকারিকরা। তড়িঘড়ি বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়।
করোনা মহামারি, ঘূর্ণিঝড় আমফান দুই জোড়া ফলায় আগেই নাভিঃশ্বাস অবস্থা রাজ্যবাসীর। এই পরিস্থিতি টানা বৃষ্টির জেরে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তার উপর নদীবাঁধ গুলি ভেঙে যাওয়ার কারণে গোদের উপর বিষফোঁড়া। নতুন করে আতঙ্কে দক্ষিণবঙ্গ।