সরকারি হাসপাতালে প্রসূতিকে মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইন, ধরা পড়তেই পালালেন স্বাস্থ্য কর্তা

অভিযোগ, বছরের পর বছর কৃষ্ণপুর গ্রামীণ হাসপাতাল নানান অব্যবস্থা চলে আসছে। এমনকি সবকিছু জেনেও বিএমওএইচ মফিজ শেখ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নি।

Parna Sengupta | Published : Oct 17, 2021 1:01 PM IST

শিউরে ওঠা কান্ড! খোদ সরকারি হাসপাতাল থেকেই প্রসূতিকে দেওয়া হল মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইন। ঘটনায় রবিবার ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে মুর্শিদাবাদের সীমান্ত শহর লালগোলার কৃষ্ণপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। এদিকে খবর চাউর হতেই নিজের দায়িত্ব এড়াতে রীতিমতো হাসপাতাল চত্বর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন বিএমওএইচ মফিজ শেখ। দেখা মেলেনি অভিযুক্ত কর্তব্যরত নার্সেরও। 

এদিকে এই ঘটনায় রোগীর আত্মীয় পরিজনরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন সেখানে। সংবাদ মাধ্যমের সামনে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ক্ষোভ উগরে দেয় রোগীর পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা পর্যন্ত। জানা যায়,পাহাড়পুর এলাকার বাসিন্দা ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বছর আটাশের অনুশ্রী পাল শারীরিক সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন সরকারি কৃষ্ণপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। প্রথমে তাকে বেশ কিছু ওষুধ দেওয়ার পাশাপাশি পরবর্তীতে বেশ কিছু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়। 

এই পর্যন্ত সব ঠিক থাকলেও, এদিন হাসপাতালে কর্তব্যরত এক নার্স ঐ অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে একটি মাস দুয়েক আগেকার মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইন দেয়। প্রথমে কিছু বোঝা না গেলেও, পরবর্তীতে অনুশ্রীর শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে শুরু করতেই ওই রোগিনীর পরিবারের লোকেদের নজরে আসে মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইন। এরপরে তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি চাইতে গেলে কর্তব্যরত নার্স সরে পড়েন সেখান থেকে। 

এদিকে প্রসূতির অবস্থা ক্রমশ সংকটজনক হতে শুরু করায় তাকে সেখান থেকে ডিসচার্জ করে দেওয়া হয় বলেই শেষ পাওয়া খবরে জানা যায়। অভিযোগ, বছরের পর বছর কৃষ্ণপুর গ্রামীণ হাসপাতাল নানান অব্যবস্থা চলে আসছে। এমনকি সবকিছু জেনেও বিএমওএইচ মফিজ শেখ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নি। এমনকি তিনি নিজে দিনের পর দিন হাসপাতালে উপস্থিতও থাকেন না। 

স্থানীয় বাসিন্দা আবু নাসার বলেন,"এই হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে এমন নানা ঘটনা ঘটে চলেছে। এমনকি বি এম ওএইচ সবকিছু জেনেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না। তিনি সপ্তাহের মধ্যে অর্ধেকের বেশি দিনই উপস্থিত থাকেন না এই হাসপাতালে"। 

এদিকে ঐ রোগিনীর এক প্রতিবেশী ঋষভ উপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে জানান,"এই অচলাবস্থা কৃষ্ণপুর গ্রামীণ সরকারি হাসপাতালে প্রতিনিয়ত হয়ে চলেছে। কোন নজরদারী ছাড়াই মাঝেমধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন দেওয়া হয় রোগীদের। আমরা এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাচ্ছি সেই সঙ্গে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে পুরো বিষয়টি জানাবো"। যদিও এই ঘটনার পরে মুর্শিদাবাদ জেলার নবনিযুক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সন্দীপ সান্যাল কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের এমন উদাসীন ভূমিকায় রীতিমতো হতবাক সকলে।

Share this article
click me!