নতুন করে মালদহে করোনা আক্রান্ত ৭, জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ পেরোল

  • মালদহে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত ছিল ১৯
  • শুক্রবার আরও ৭ জনের শরীরে পাওয়া গিয়েছে এই ভাইরাস
  • যার জেরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এই জেলায় বৃদ্ধি পেয়েছে
  • অভিযোগ, পরিযায়ী শ্রমিকদের বিনা বাধায় প্রবেশ বিপদ বাড়াচ্ছে

Asianet News Bangla | Published : May 15, 2020 12:41 PM IST / Updated: May 15 2020, 06:50 PM IST

মাঝে তিন দিনের বিরতি। তারপর আবার মালদহ জেলায় খেল দেখাতে শুরু করেছে করোনা ভাইরাস। যার জেরে নতুন করে ৭ জন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর  থেকেও এই সাত জনের করোনা পজিটিভ হওয়ার কথা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে সম্প্রতি এদের লালরসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। সেই পরীক্ষার ফলে জানা গিয়েছে এই সাতজনের শরীরে করোনার জীবাণু রয়েছে। আপাতত মালদহের নারায়ণপুরের কোভিড হাসপাতালে এদের চিকিৎসা চলছে।

মালদহ জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আক্রান্ত ৭ জনের মধ্যে একজন হরিশ্চন্দ্রপুর দুই নম্বর ব্লকের সুজাপুরের বাসিন্দা। দুজন আক্রান্ত রয়েছে কালিয়াচক ১ নম্বর ব্লকের সেলিমপুর থেকে। কালিয়াচক ১ নম্বর ব্লকের জালালপুর থেকেও একজন করোনা পজিটিভ হয়েছে। ইংরেজবাজার থানার খেতুয়াহি-তেও একজন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। পুরাতন মালদহের মুছাতেও রয়েছে এক করোনা আক্রান্ত। মানিকচকের ব্রাহ্মণগ্রামেও রয়েছে একজন করোনা আক্রান্তের এই তালিকায়। 

যে সাত জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে তাদের মধ্যে একজনের বয়স ১৭, একজন ২০ বছরের, একজন ২১ বছরের, দুই জন ২৫ বছরের, একজন ৩৫ বছরের এবং অন্যজন ৩৯ বছর বয়সি। এর আগে মালদহে মোট ১৯ জন করোনা পজিটিভ -এর খবর প্রকাশ্যে এসেছে। এদের মধ্যে শুধু হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকেই ১১ জন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছিল। এই তালিকায় হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকেও এবার করোনা আক্রান্তের খবর জানা গেল। পুরাতন মালদহেও এর আগে করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলেছে। সেই তালিকায় এবার আরও এক সংযোজন বলা যেতে পারে। 

মালদহে প্রথম করোনা আক্রান্ত ছিল মানিকচকের। সেই তালিকায় এবার আরও একজনের সংখ্যা বাড়ল। কালিয়াচকে এর আগে কোনও করোনা আক্রান্তের কথা সরকারিভাবে জানা ছিল না। এবার জেলা স্বাস্থ্য দফতর যে সাত জনের তালিকা দিয়েছে তাতে এখানে ৩ জন করোনা আক্রান্ত রয়েছে। ইংরেজবাজারেও মিলেছে করোনা আক্রান্তের খোঁজ। 

সুতরাং বলতে গেলে মালদহ জেলার অধিকাংশ ব্লক এবং থানাতেও এবার এক এক করে করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলতে শুরু করেছে। মালদহ জেলাবাসীরা এর আগেই অভিযোগ করেছিলেন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিয়ে যে ভাবে জেলায় পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রবেশকে অবাধ করা হয়েছে তাতে এই পরিস্থিতি তৈরি হওয়াটা নিশ্চিত ছিল। এখনও কাতারে কাতারে পরিযায়ী শ্রমিকরা জেলায় ফিরছে। কেউ ট্রাকে করে আসছে দল বেঁধে। কেউ ঠেলায় চেপে, পায়ে হেঁটে, অটো এবং ট্যাক্সি নিয়ে চলে আসছে। কেউ আসছে তামিলনাড়ু থেকে। কেউ আবার হায়দরাবাদ, দিল্লি, মুম্বই, রাজস্থানে কাজ ছেড়ে দিয়ে ভিটেমাটিতে ফিরছে। এতে সংক্রমণের আশঙ্কা আরও বেড়ে যাচ্ছে। কারণ, দ্বিতীয় লকডাউনের শেষ দিকে এসে মালদহে প্রথম করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছিল। এর আগে এই জেলাতে একটিও করোনা পজিটিভ-এর কেস সরকারিভাবে নথিভুক্ত হয়নি। কিন্তু এপ্রিলের শেষ থেকে যেন এই জেলায় করোনা আক্রান্তের মেলা লেগে গিয়েছে। এখন পর্যন্ত যা দেখা যাচ্ছে তাতে সব আক্রান্তই পরিযায়ী শ্রমিক। সুতরাং এদের থেকে গোষ্ঠী সংক্রমণের ভয় পাচ্ছে সাধারণ মানুষ। কারণ, কিছুদিন আগে পর্যন্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের লালারসের নমুনা নিয়ে তাদের হোম কোয়ারান্টাইন করেছিল প্রশাসন। এখন লাগাতার করোনা আক্রান্তের সংখ্যা মিলতে শুরু করায় প্রশাসন ফের ইন্সিটিউশনাল কোয়ারান্টাইন চালু করেছে। সাধারণ মানুষের কথায় যা ঘটার তা ঘটে গিয়েছে। এখন করোনা আক্রান্তের সংখ্যাটা সামনে আসার অপেক্ষা। আর এর জন্য প্রশাসনকেই তারা দায়ী করছেন। 

Share this article
click me!