পশ্চিম মেদিনীপুরের রামজীবনপুর পৌরসভা দখল নিয়ে এখন তুঙ্গে রাজ্য় রাজনীতি। পুর নির্বাচনের ফলাফলে ১১ আসন বিশিষ্ট রামজীবনপুর পৌরসভাতে পাঁচটি করে আসন পেয়েছিল তৃণমূল-বিজেপি। একটি যায় নির্দলের ঘরে। কিন্তু বিজেপির দুই কাউন্সিলর পরে তৃণমূলে যোগ দিলে তৃণমূল রামজীবনপুর পৌরসভাতে বোর্ড গঠন করে। এই পরিস্থিতিতে বেশ কিছুদিন চলার পর ফের বিজেপিতে ফেরেন তাঁরা। ফলে ৫-৫-১ সংখ্যা দাঁড়ায় রামজীবনপুর পৌরসভার।
এক মাস আগে তৃণমূলের এক কাউন্সিলর শিবরাম দাস বিজেপিতে যোগ দেন। তখনই বিজেপির কাউন্সিলর সংখ্যা দাঁড়ায় ৬-এ। এরপর থেকেই পৌরসভা দখলের জন্য উঠেপড়ে লাগে বিজেপি। গত একমাস ধরেই এই সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে নিজেদের বোর্ড গঠন করার চেষ্টা চালাচ্ছিল বিজেপি। বুধবার প্রশাসনিক নিয়ম ব্যতিরেখেই সংখ্যাগরিষ্ঠ বিজেপি কাউন্সিলররা একত্রিত হয়ে পৌরসভায় বোর্ড গঠনের ঘোষণা করে। পুরপ্রধান নির্বাচিত করে দেন গোবিন্দ মুখার্জি নামের এক প্রবীণ বিজেপি কাউন্সিলরকে।
বিজেপির এই কাজে আপত্তি তোলে তৃণমূল। দলের কাউন্সিলররা বলেন, মহকুমা শাসকের অনুমতি না নিয়েই বোর্ড গডে়ছি বিজেপি। এমনকী তাঁরা বোর্ড গড়ার প্রয়োজনীয় আইনি পদ্ধতি অবলম্বন করেনি। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপির কাউন্সিলররা পুরপ্রধানের ঘরে ঢুকে তৃণমূলের প্রধানের বোর্ড ভেস্তে দিয়েছে। সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ফাইলপত্র। এরপরই বিকেলে তৃণমূলের কাউন্সিলরসহ পুরপ্রধান চন্দ্রকোনা টাউন থানায় পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। বেআইনিভাবে পুরপ্রধানের ঘরে ঢুকে নথি তছনছ করা সহ বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ করা হয়েছে বিজেপির কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে। সেইমতো পুলিশের পক্ষ থেকে বিজেপির ৬ কাউন্সিলরকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
এরপর বৃহস্পতিবার পুলিশি নিরাপত্তায় ফের পৌরপ্রধানের ঘরে ঢুকে কাজ শুরু করেন তৃণমূলের পুরপ্রধান নির্মল চৌধুরী। এদিন তিনি বলেন, 'আইনের পথেই সিদ্ধান্ত হবেকে পুরপ্রধান আর কে পুরপ্রধান নয়। বেআইনি এই পদ্ধতির বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ করেছিলাম। বর্তমানে পুলিশ দিয়ে কাজকর্ম স্বাভাবিক করার চেষ্টা হচ্ছে।' এ বিষয়ে বিজেপির স্থানীয় নেতা নন্দ নিয়োগী বলেন, 'আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিলাম বলে বোর্ড গঠন করেছিলাম। পুলিশ প্রশাসনের অসহযোগিতার কারণেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এখন পুলিশ যে কাজটা করছে তাতে পরিষ্কার রাজ্যে আইনের শাসন নেই। মানুষ দেখছেন।'