উত্তম দত্ত, হুগলি: দশমীর দিন দুপুরে 'দুগ্গা চচ্চড়ি' খেতেই হবে। খানাকুলের পারিয়াল জমিদার বাড়ির এটাই রেওয়াজ। শুধু তাঁরাই খান তা নয়, আশেপাশের গ্রামের লোকেদেরও তা খাওয়ানো হয়। এই দুগ্গা চচ্চড়ি খেতে প্রচুর লোক ভিড় করেন। হুগলির খানাকুলের রাজহাটি গ্রামে চারশো বছরের পুরোনো এই বনেদি বাড়ির দুর্গা পুজো।
পারিয়াল বাড়ির এক বংশধর রাজীব পারিয়াল জানান, 'এই দুগ্গা চচ্চড়ির মূল উপকরণ হলো কচু এবং ঘুসো চিংড়ি। আমরা দশমীর দিন দুপুরে গ্রামের বাসিন্দাদের নিমন্ত্রণ করি। ভাত, ডাল, মাছের সঙ্গে এই এই দুগ্গা চচ্চড়ির উপকরণ থাকবেই। সারা বছরের মধ্যে একমাত্র এই পুজো উপলক্ষে আমরা পরিবারের সদস্যরা একত্রিত হই। তাই আমরাও খাই। এই রেওয়াজ দুশো বছর ধরে বংশপরম্পরায় চলে আসছে।'
রাজীববাবু আরও জানান, পারিয়াল বাড়িতে বৈষ্ণব মতে পূজো হয়। পরিবারের কুলদেবী সিংহবাহিনী দুর্গা রূপে পুজিত হন। অষ্টধাতুর মূর্তিতে পুজো হওয়ায় তা বিসর্জন হয় না। বিসর্জন হয় দেবীর পাদমূলের বিল্বপত্র। পারিয়ালদেরই একটি পুকুরে পরিবারের সদস্যরা এই বিল্বপত্র মাথায় করে শোভাযাত্রা সহকারে নিয়ে যান এবং বিসর্জন দেন। পরিবারের প্রায় দেড়শোজন সদস্য এই বিল্বপত্র মাথায় করে নিয়ে যান। সঙ্গে থাকে নহবত। খানাকুলের হীরাপুর গ্রাম থেকে আসে নহবত। এটাই চলে আসছে যুগ যুগান্তর ধরে। আর এই শোভাযাত্রা দেখতে ভিড় করেন হাজার হাজার দর্শনার্থী।