'কারা রাজ্যপালকে হেনস্তা করেছেন তা রাজ্যপালের চিঠি থেকেই পরিষ্কার', বুধবার শাসকদলকে একহাত নিলেন শুভেন্দু অধিকারী।
'কারা রাজ্যপালকে হেনস্তা করেছেন তা রাজ্যপালের চিঠি থেকেই পরিষ্কার', বুধবার শাসকদলকে একহাত নিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এদিন তুমুল হট্টোগোল হয়ে বিধানসভায়। তারপরে ক্ষোভ উগরে দেন শুভেন্দু (Suvendu Adhikari)।
এদিন শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, 'কারা রাজ্যপাল কে হেনস্তা করেছেন তা রাজ্যপালের চিঠি থেকেই পরিষ্কার। সেখানে তিনি তাদের নাম পর্যন্ত লিখে টুইট করেছেন। তার থেকেই আমাদের দুই বিধায়ককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। আমি বিধানসভায় স্পিকারের কাছে সাসপেনশন প্রত্যাহারের আবেদন করেছি। উনি লিখিতো দিতে বলেছেন। লিখিত দেব না কারণ আমি যা বলেছি তা ওনার অনুমতি নিয়েই বিধানসভায় রেকর্ড হয়েছে। নন্দীগ্রাম নিয়ে মন্তব্য হারের যন্ত্রণা থেকেই মুখ্য মন্ত্রী এসব কথা বলছেন। এতদিন পর্যন্ত কেউ হেরে যায় মুখ্যমন্ত্রী হয়নি। হিমাচল প্রদেশের প্রেম কুমার ধুমোল কেরালায় অচ্যুতানন্দন পারার কারণে মুখ্যমন্ত্রী হননি। উনি হেরে যেও মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন।এই জ্বালা ওনার সারা জীবন থাকবে।' এদিকে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে বিজেপি। ওরা মানুষের কথা শোনে না। ওদের একটিও আসন দেওয়া উচিত নয়। খালি দাঙ্গা করে। সমস্ত অপ্রচারের জবাব দিয়েছে রাজ্যের মানুষ।মনে রাখবেন, বাংলায় রয়েল বেঙ্ঘল টাইগার এখনও আছে। অব কি বার, বিজেপি পগারপার।'
মমতা আরও বলেন, যারা সাধারণভাবে নিজের এলাকাতেই জিততে পারে না, তাঁরা আবার বড় বড় কথা বলে।' বুধবার অধিবেশন চলাকালীন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় স্পিকারের কাছে আবেদন জানান, '৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যপালের বাজেট ভাষণ চলাকালীন বিজেপি তুমুল বিক্ষোভ করেছে। এটি অসংশোধীয় আচরণ। মিহির গোস্বামী এবং সুদীপ মুখোপাধ্যায় সামনে থেকে দাঁড়িয়ে নের্তৃত্ব দিয়েছিলেন। তারাই বাকিদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই অপরাধে এদের সাসপেন্ড করা হোক এই সেশনের জন্য। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এই আবেদন ধ্বনীভোটে পাশ হয়। এরপরেই পুরুলিয়ার বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায় এবং এবং কোচবিহারের নাটাবাড়ির বিধায়ক মিহির গোস্বামীকে চলতি অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে।
কেন্দ্রের বরাদ্দ নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী মন্তব্য করেন, 'যে টাকা দেওয়া হয়েছিল বলেই ক্যাগ তদন্ত করছে। কে আগের রিপোর্ট সামনে এলেই সিবিআই ইডি আবার তদন্ত করবে, তাকেই ভয় পাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। সাসপেন্ডেড ২ বিধায়ক আগামীকাল থেকে বিধানসভার লবিতে অবস্থান-বিক্ষোভ করবেন।অন্যদিকে আমরা বিধানসভার অভ্যন্তরে সাসপেনশন প্রত্যাহারের আন্দোলন চালিয়ে যাব।' প্রসঙ্গত, মূলত সোমবার বেলা ২ নাগাদ বিধানসভায় ভাষণ দেবার কথা ছিল রাজ্যপালের। কিন্তু রাজ্যপাল পৌছতেই প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বিজেপি বিধায়করা। টানা এক ঘন্টার ধরে এদিন বিক্ষোভ চলেছে।
বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেছেন রাজ্যপাল। এরপর একাধিকবার বিধানসভা কক্ষ ছেড়ে উঠে যেতে উদ্যত হন ধনখড়। কিন্তু বারবারই করজোড় করে তাঁকে থেকে যেতে অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। পরবর্তীতে মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধেই ফিরে আসেন রাজ্যপাল। যদিও তা ক্ষণস্থায়ী। মাঝে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ডেকেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। এরপরেই বিধানসভা কক্ষ ত্যাগ করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এদিকে পরে রাজ্যের বাজেট অধিবেশনে গিয়ে শাসকদলের মন্ত্রী এবং বিধায়কদের হাতে হেনস্তা হয়েছে বলে অভিযোগ তুললেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এবং অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্য়োপাধ্যায়ের ( Biman Banerjee) সঙ্গে তিন দিনের মধ্যে এনিয়ে বৈঠকে বসতে চান বলে জানিয়ে চিঠি পাঠান রাজ্যপাল ।