পলাশের পুরুলিয়ায় করোনা আতঙ্ক। তাই রাঙামাটির দেশে এখন ঢোল বাজিয়ে সাবধান করা হচ্ছে গ্রামের মানুষকে। টুসুর দেশে এ গ্রাম থেকে ও গ্রামের মধ্য়ে গিয়েছে ব্য়ারিকেড। সবমিলিয়ে এ যেন এক অন্য় পুরুলিয়া।
গত মঙ্গলবার রাত বারোটা থেকে দেশজুড়ে লকআউট ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তারপর থেকেই কার্যত শুনশান হয়েছে শহর মফস্বলের পাড়াগুলো। সকালের দিকে ভিড় থাকলেও বাকি সময়ে কার্যত খাঁ-খাঁ করছে বাজার দোকানগুলো। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কলকাতার রাস্তায় পুলিশ কমিশনারকে বেরোন খোদ মুখ্য়মন্ত্রী। বৃহস্পতিবার তিনি শহরের বিভিন্ন বাজারে যান। এদিকে এই পরিস্থিতিতে গড়িয়ার দত্তাবাদে নতুন করে এক করোনা আকান্তের খবর পাওয়া যায়।
এই পরিস্থিতিতে পুরুলিয়ার বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়েছে আতঙ্ক। তার অবশ্য় সঙ্গত কারণও রয়েছে। লকডাউনের দু-একদিন আগেই সেখানে ভিনরাজ্য় থেকে ঘরে ফিরেছে বেশ কয়েকজন। এদিকে শহর-মফস্বলে যেটুকু যা স্ক্রিনিংয়ের ব্য়বস্থা রয়েছে, গ্রামের দিকে তা নেই। সেখানে তাই গ্রামবাসীদের সচেতনতার ওপরই পুরোটা নির্ভর করছে। এই পরিস্থিতিতে একই সঙ্গে রীতিমতো আতঙ্কিত ও সজাগ রয়েছে পুরুলিয়া। গুজরাত, মুম্বই, চেন্নাই, পঞ্জাব থেকে যাঁরা ঘরে ফিরেছেন তাঁদের থেকে যাতে কোনওরকমভাবে সংক্রমণ ছড়াতে না-পারে তার জন্য় কোমর বেঁধে নেমেছে পুরুলিয়ার বিভিন্ন গ্রাম। রীতিমতো ঢোল বাজিয়ে চলছে প্রচার। গ্রাম থেকে গ্রামে যাতায়ত বন্ধ করতে সেখানে এখন পাড়ায় পাড়ায় ব্য়ারিকেড। পারা থানার আনাড়া গ্রামে এপাড়া থেকে ওপাড়া ফতোয়া জারি করে ঢোল বাজিয়ে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, ভিনরাজ্য় থেকে যাঁরা ফিরেছেন, তাঁরা যেন অবিলম্বে ডাক্তারের কাছে যান আর ১৪ দিন গৃহবন্দি থাকেন। নইলে পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে ব্য়বস্থা নেবে। তখন গ্রামের লোকও পাশে থাকবে না।
যদিও জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, অনেককেই চিহ্নিত করে আলাদা রাখা হয়েছে। তাঁদের ওপর নজর রেখেছে প্রশাসন। তাই আতঙ্কের কিছু নেই। আর পুরুলিয়ার এই ছবি দেখে অনেকেই বলছেন, এ যেন এক অচেনা টুসুর দেশ।