শীতকালে বাজারে নলেন গুড়ের চাহিদা থাকে খুবই বেশি। যদিও এই বছর জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়েনি। এদিকে ঠান্ডা ঠিকমতো না পড়ায় সেভাবে বাজারে গুড়ের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকী এই বছরে ভালো গুড় নিয়ে বাজারে বসেও সেরকম বিক্রি হচ্ছে না বলেই আক্ষেপ করছেন হাওরার সাঁকরাইল এলাকার গুড় ব্যবসায়ীরা।
ভোজনরসিক হিসেবে বাঙালির খ্যাতি রয়েছে ত্রিভুবনে। আর শীত (Winter) পড়লেই পুলি পিঠের সঙ্গে বিভিন্ন রকমের গুড়ের (Gur) প্রতি বাঙালির দুর্বলতা চিরকালের। আর যদি রকমারি পায়েস বা পিঠের কথা ওঠে সেখানে নলেন গুড় (Nolen Gur) না হলে মনটা যেন কেমন একটা খারাপ হয়ে যায়। কারণ শীতকালে নলেন গুড় ছাড়া যেন বাঙালির মন যেন কিছুতেই ভরে না। আর নলেন গুড় দিয়ে শুধুমাত্র পায়েস বা পিঠেই নয়, মিষ্টি থেকে শুরু করে আইসক্রিম (Ice-Cream) সহ আরও অনেক কিছুই তৈরি হয় এই গুড় দিয়ে। এমনকী, শীতের রাত্রে রুটি বা পরোটার সঙ্গে ঝোলা গুড় বা পাটালি অনেকেরই চাই। তাই এই গুড় ছাড়া শীতকালে বাঙালির একেবারেই চলে না।
শীতকালে বাজারে নলেন গুড়ের চাহিদা থাকে খুবই বেশি। ঠান্ডা মানেই নলেন গুড় থাকবেই। যদিও এই বছর জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়েনি। এদিকে ঠান্ডা ঠিকমতো না পড়ায় সেভাবে বাজারে গুড়ের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকী এই বছরে ভালো গুড় নিয়ে বাজারে বসেও সেরকম বিক্রি হচ্ছে না বলেই আক্ষেপ করছেন হাওরার সাঁকরাইল এলাকার গুড় ব্যবসায়ীরা। ভোর রাতে উঠে খেঁজুর রস সংগ্রহ করে তাকে উনুনে ফুটিয়ে বিশেষ প্রক্রিয়াতে নানা স্বাদের গুড় তৈরিতে যে পরিমাণ পরিশ্রম করতে হয়, সেই তুলনায় এই বছর তাদের কপাল মন্দ বলেই দাবি তাঁদের। অন্য বছরের তুলনায় এবছর বাজারে ক্রেতার সংখ্যাও অনেক কম।
একটা সময়ে বাড়িতে আসত নলেন গুড়। আর সেই গুড়ের গন্ধ সারা বাড়িতে ম-ম করত। গুড় ব্যবসায়ী সুদীপ্ত প্রধান জানান, "এই বছর অত্যাধিক পরিমাণে বৃষ্টি হওয়ার কারণে গাছ কাটতে সমস্যা হয়েছে। বৃষ্টির জলে খড় ভিজে গিয়েছে। নতুন খড়ের দামও অনেক বেশি। গাছ কেটে কলসি টাঙিয়ে আসার পরে বৃষ্টির জল পরে তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বাজারে দামও পাওয়া যাচ্ছে না। এই বছর ব্যবসাতেও মন্দা চলছে।" অপর এক গুড় ব্যবসায়ী নিশিকা প্রধান বলেন, "এই বছরে জল বৃষ্টি বেশি হওয়ার কারণে ব্যবসা মার খাচ্ছে। এই বছর ভালো ব্যবসা হচ্ছে না। সেরকম চাহিদা নেই। খড়ের দাম অনেক বেড়ে গিয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য বারের মতো এই বছর ঠান্ডাও তেমন একটা পড়েনি।" সব মিলিয়ে এই বছর তাদের কপাল মন্দ বলেই দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা।
শীত মানেই বাজারে খেজুর গুড়ের ব্যাপক চাহিদা থাকে। বাড়তি কিছু আয় হবে ভেবে নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারির গোড়া পর্যন্ত সময়ের দিকে তাকিয়ে থাকেন গুড় ব্যবসায়ীরা। সাঁকরাইলের বিভিন্ন এলাকার প্রায় অনেক বাসিন্দাই এই সময় গুড় তৈরিতে জোর দেন। কিন্তু, এবার সে গুড়ে বালি। তাই এই বছরের লোকসান পুষিয়ে কবে আবার ভালো ব্যবসা করতে পারবেন সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তাঁরা।