সমাজের চোখে আপাতদৃষ্টিতে ব্রাত্য তাঁরা। কিন্তু আজ বিশেষ দিনে তাঁরাই পেল অগ্রাধিকার । হাঁসি ফুটল মলিন চেহারায়।
দশমীতে বিদায়কালে দেবী দুর্গাকে বরণ করে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন মহিলারা। সেই স্থানে ব্রাত্য থেকে যান বিধবা, কিন্নরেরা। সমাজের ভ্রুকুটি, অপমান, অবহেলার জেরে মিলন মেলার উৎসবে নিজেদের কোণঠাসা করে রাখেন তারা। তবে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সমাজের অন্ধ কুসংস্কারে ইতি টানল। এগিয়ে এল শিলিগুড়ির অন্যতম পুজো কমিটি ইউনার্স ক্লাব। আয়োজিত হল ব্রাত্যজনেদের পুজো। ওরা আনন্দে মেতে উঠলেন বহুকাল বাদে।
এদিন বিবাহিতদের পাশাপাশি বরণডালা সাজিয়ে উমাকে বরণ করেন কিন্নরেরা। সঙ্গে ছিলেন বৃদ্ধাশ্রমের বিধবারা। উদ্যোক্তাদের বক্তব্য, উমাকে বরণ করবে উমারা। সেক্ষেত্রে ব্রাত্য বলে কোনও কথা নেই, সকলেই সমান। উদ্যোক্তাদের এহেন চিন্তাধারাকে স্বাগত জানিয়েছে আপামর সমাজ। তাই তো আজ সমাজের বেড়াজাল টপকে কিন্নর, বিধবাদের সঙ্গে সিঁদুর খেলায় মেতেছেন মহিলারা।
স্বাভাবিকভাবেই এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন গুড্ডি কিন্নর। তিনি বলেন, এই প্রথম সিঁদুর খেলায় অংশ নিলাম। এতদিন সমাজের ভ্রুকুটি সয়ে এসেছি। তবে, এভাবে ডাক পাব আশা করিনি। আমরাও তো সমাজের অংশ। কিন্তু উপেক্ষা অবহেলা ছাড়া কিছুই পাইনি কোনওদিন। আজ বেশ ভালো লাগছে। কিন্নরদের পাশাপাশি এই প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বিধবারাও। সিদুঁরখেলা উপলক্ষে শ্রীমতি সরকার বলেন, বছর তিরিশ আগে স্বামী মারা যায়। পরিবার থাকতেও বৃদ্ধাশ্রমে ঠাঁই হয়। সমাজ থেকে ব্রাত্য হয়ে পড়ি। প্রায় বছর তিরিশ বাদে আজ ফের মা'কে বরণ করলাম আগের মতো করে। মায়ের কাছে আশীর্বাদ প্রার্থনা করলাম যাতে কোনও মা'কে আমাদের মতো বৃদ্ধাশ্রমে না আসতে হয়।