গোঁফের আমি, গোঁফের তুমি, গোঁফ দিয়ে.....স্রেফ গোঁফের কারণে শ্বশুরবাড়ি যেতে ভয় পান। যদিও বা যান, সারারাত জেগে থাকেন। আর আত্মীয়দের বাড়ি যাওয়া তো ছেড়েই দিয়েছেন। ভয় একটাই, পাছে তাঁর সাধের গোঁফখানা কেউ কেটে দেয়! পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে দাশরথি ভট্টাচার্যকে একডাকে চেনেন সকলেই।
যখন মুখে ভালো করে গোঁফের রেখাও ওঠেনি, তখন থেকেই গোঁফ রাখার শখ। কিন্তু সংসারে যে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর দশা! পড়াশোনাটাও শেষ করতে পারেননি ভাতারের বড়বেলুন গ্রামের বাসিন্দা দাশরথি ভট্টাচার্য। সংসারের হাল ধরতে অল্প বয়স থেকে টিউশন পড়াতে শুরু করেন তিনি। বিয়ে করে দিব্যি সংসারও করছিলেন। হঠাৎ-ই একদিন ছোটবেলার শখটা জেগে ওঠে। গত পাঁচ বছরে আর গোঁফ কাটেননি দাশরথি। আর এখন গোঁফের জন্যই এলাকায় রীতিমতো বিখ্যাত হয়ে গিয়েছেন তিনি। দাশরথি নয়, এলাকায় 'গোপেনবাবু' নামেই বেশি পরিচিত ওই গৃহশিক্ষক। কেউ কেউ আবার 'গোঁফ মাস্টার' বলেও ডাকেন। ব্যঙ্গ করে 'গোঁফো' বললেও অবশ্য রাগ করেননি দাশরথি। গোঁফে রং করার জন্য ব্যবহার করেন আলাদা ব্রাশ ও রং। বাড়িতে সবসময় মজুত থাকে নারকেল তেল, বাদাম তেল ও সর্ষের তেল।
কিন্তু শ্বশুরবাড়ি ও আত্মীয়দের বাড়িতে যাওয়া কেন ছাড়তে হল? স্বামীর এই গোঁফ প্রীতি নাকি একেবারেই পছন্দ নয় দাশরথি ভট্টাচার্যের স্ত্রীর। এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রী বিস্তর অশান্তিও হয়েছে। খবর তেমনই। দাশরথির আশঙ্কা, শ্বশুরবাড়ি গেলে সুযোগ বুঝে তাঁর সাধের গোঁফখানা কেউ কেটে দিতে পারে। তাই গত চার বছরে শ্বশুরবাড়ির দিকে আর পা বাড়াননি তিনি। ওই গৃহশিক্ষক জানিয়েছেন, যদিও কোনও কারণে শ্বশুরবাড়ি যেতে হয়, তাহলে রাতে জেগে গোঁফ পাহারা দেন। সকাল হলেই বাড়ি চলে আসেন। তাতে অবশ্য দুঃখ নেই। বরং ছোটবেলায় শখ মেটাতে পেরে বেজায় খুশি দাশরথি ভট্টাচার্য।