৫০০ জনকে নিয়ে বাড়ির ছাদে ইদ্রিস আলির ইদের নামাজ, কোথায় করোনা, কোথায় লকডাউন

ইদের নামাজপাঠ উপলক্ষে ৫০০ জনের জমায়েত

ইদ্রিস আলির বাড়ির ছাদে হল এই জমায়েত

লকডাউন বিধি লঙ্ঘন করলেন খোদ তৃণমূল বিধায়ক

প্রশাসন কি তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে

 

amartya lahiri | Published : May 25, 2020 3:54 PM IST

কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র দফতরের নির্দেশ বলছে, করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে জারি করা চতুর্থ দফার লকডাউনে নানান শিথিলতা আনা হলেও কোনও রকম ধর্মীয় জমায়েত করা যাবে না। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে কোনও কড়া নির্দেশ না দিলেও অনুরোধ করেছিলেন ইদে জমায়েত না করার। কিন্তু, তাঁর দলের নেতা তথা রাজ্যের বিধায়কই সেই অনুরোধ রাখলেন না।

সোমবার ইদ-উল ফিতর'এর দিন উলুবেড়িয়া পূর্ব কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক ইদ্রিস আলিকে দেখা গেল, বাসভবনের ছাদে অন্তত ৫০০ লোককে সঙ্গে নিয়ে ইদের নামাজ পড়তে। স্থানীয় এক মৌলবী সেখানে উপস্থিত হয়ে তাঁদের নামাজ পড়ান। হলুদ কুর্তা পরে ইদ্রিস আলি-কে দেখা গেল একটি চেয়ারে বসে বাকিদের সঙ্গে সেই নামাজে অংশ নিতে।

ইদ্রিস আলির অবশ্য দাবি আইন মেনেই এই জমায়েত করা হয়েছে। কিন্তু কোন আইনের বলে এই জমায়েত হল তা তিনি বলতে পারেননি। সকল নামাজিদের মুখেই মাস্ক ছিল এবং সেখানে কিছু হ্য়ান্ড স্যানিটাইজার-ও রাখা ছিল। নামাজ পাঠের পর সকল নামাজিকে সেই স্যানিটাইজার ব্যবহারও করতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু সবটাই যেন ছিল লোক দেখানো। সংক্রমণ এড়াতে সামাজিক দূরত্বের যে বিধান দেওয়া হয়েছে তা কিন্তু মানা হয়নি। 'দো গজ দূরি' তো দূর অস্ত, নামাজিদের মধ্যে একফুটেরও দূরত্ব ছিল না। স্যানিটাইজার দেওয়ার সময় তো রীতিমতো গাদাগাদি করে দাঁড়ালেন তাঁরা।

অথচ শনিবার রাতে দিল্লির জামা মসজিদের শাহি ইমাম সৈয়দ আহমেদ বুখারি, ভারতে সোমবার ইদ পালনের দিন ঘোষণা করার সময় পই পই করে বলেছিলেন, কোনও জমায়েত নয়। পরিবারের সদস্যরা মিলে বাড়িতেই কোনও বড় ঘরে অথবা বাড়ির ছাদে ইদের নামাজ পাঠ করুন। তার আগে বাংলার ইমামদের সংগঠন থেকে ইদে জমায়েত না করার বিষয়টি নিশ্চিত করার বিষয়ে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। এমনকী রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম-কেও এদিন নিজের বাড়িতেই শুধু পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই নামাজ পড়তে দেখা গিয়েছে।

সাধারণত প্রতিবছর রেড রোডের ময়দানে গিয়েই ইদের নামাজে অংশ নেন উলুবেড়িয়া পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক। কিন্তু এই বছর রেড রোডের নামাজ বাতিল করা হয়েছে। যে জায়গায় অন্তত ৫ লক্ষ মানুষের ভিড় দেখা যায়, সেই ময়দানই এদিন ছিল একেবারে ফাঁকা। সেই কারণেই পরিচিতদের নিয়ে উলুবেরিয়ার বাজারপাড়া এলাকা তাঁর বাসভবনের ছাদেই নামাজপাঠ করা হয় বলে জানিয়েছেন ইদ্রিস আলি।

এই নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। যেখানে সারা বাংলার মুসলমানরা করোনাভাইরাস-এ বিস্তার রোধ করতে চেয়ে ইদের আনন্দ, মেলামেশা ত্যাগ করেছেন, সেখানে শাসক দলের বিধায়ক নিজেই আইন ভাঙলেন। এই বিষয়ে ইদ্রিস আলির বিরুদ্ধে প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয় কি না, সেটাই এখন দেখার।

 

Share this article
click me!