Deocha Pachami: সিঙ্গুরের ছায়া কি এবার দেউচায়, কয়লা খনিতে সায় নেই আদিবাসী মোড়লদের

একদিকে যখন সরকার পুনর্বাসন প্যাকেজ ঘোষণা করে খনির কাজ শুরু করার চেষ্টা করছে ঠিক সেই সময় হরিণসিংহার মাঠে বৈঠক করলেন আদিবাসীরা। আদিবাসী সমাজের মোড়লদের উপস্থিতিতে এই বৈঠক করা হয়। কয়লা খনি হতে দেবেন না বলে সেখানে স্পষ্টতই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আদিবাসীদের তরফে। 

Asianet News Bangla | Published : Nov 25, 2021 5:17 PM IST / Updated: Nov 25 2021, 11:34 PM IST

দেউচা পাঁচামিতে (Deocha Pachami) এবার শুরু হয়েছে আন্দোলন (Agitation)। কারণ এই মুহূর্তে বেশিরভাগ আদিবাসীই (Tribal) সেখানে এখন আর কয়লাখনি (Coalmine) চাইছেন না। এমনকী, রাজ্য সরকার (State Government) পুনর্বাসনের যে প্যাকেজ ঘোষণা করেছে তাও নিতে রাজি হচ্ছেন না তাঁরা। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে পরিস্থিতি। প্রস্তাবিত কয়লা খনি গড়ার লক্ষ্যে একদিকে যখন সরকার পুনর্বাসন প্যাকেজ ঘোষণা করে খনির কাজ শুরু করার চেষ্টা করছে ঠিক সেই সময় হরিণসিংহার মাঠে বৈঠক করলেন আদিবাসীরা। আদিবাসী সমাজের মোড়লদের উপস্থিতিতে এই বৈঠক করা হয়। কয়লা খনি হতে দেবেন না বলে সেখানে স্পষ্টতই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আদিবাসীদের তরফে। 

বৃহস্পতিবার মোড়লদের ডাকা প্রস্তাবিত কয়লা খনি নিয়ে আলোচনা সভায় উপস্থিত সকলের গলায় এক সুর শোনা গেলেও বিক্ষিপ্তভাবে ভিন্নমত শোনা গিয়েছে কারও কারও গলায়। সংবাদমাধ্যমের সামনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডেউচা পাচামি খনি এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerje) প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। উনি নিজের প্যাকেজ নিজের কাছেই রাখুন। আমরা খনি চাই না।" নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দেওয়ানগঞ্জের এক প্রৌঢ় জানান, তাঁর ১৬ কাঠা জায়গা আছে। তাতে যে পরিমাণ টাকা পাবেন তা দিয়ে অন্য জায়গা কিনতে গেলে তার থেকে অনেক বেশি পরিমাণ টাকা লাগবে। চাকরিও পাওয়া যাবে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আদিবাসী মহিলা বলেন, "গ্রামের সকলে যা সিদ্ধান্ত নেবেন তাই মেনে চলব।" 

আরও পড়ুন- দেউচা-পাঁচামি কয়লাখনির প্যাকেজ নিয়ে আলোচনা, সময় দেওয়ার আশ্বাস প্রশাসনের

তবে স্থানীয় কিছু আদিবাসী নেতার দাবি, সরকারের পক্ষে জেলাশাসক বা সরকারি অফিসাররা সরাসরি আদিবাসীদের সামনে এসে কথা বলুন। পাথর শিল্পাঞ্চলের কাজ করা আদিবাসীদের একাংশের দাবি, কয়লা খনি হলে এলাকায় অস্থিরতা তৈরি হবে, শান্তির পরিবেশ বিঘ্নিত হবে। এ প্রসঙ্গে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক আদিবাসী যুবক বলেন, "রাজ্য সরকার আসানসোল রানীগঞ্জ কয়লা শিল্পাঞ্চলে আগে প্যাকেজ ঘোষণা করে ক্ষতিপূরণ দিতে পারেনি। সেখানে এখনও পর্যন্ত অনেকেই সব সুযোগ থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। আমাদের এখানে যে সেটা হবে না তার নিশ্চয়তা কোথায়?" 

ডেউচা পাচামি প্রস্তাবিত কয়লা খনি শিল্পাঞ্চল গড়ে ওঠাকে ঘিরে এমন নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে আদিবাসীদের মনে। তবে আলোচনা এখনও শেষ হয়নি, আলোচনার রাস্তা খোলা আছে বলেই মনে করেন জেলাশাসক বিধান রায়। তিনি বলেন, "এলাকায় কয়লাখনি শিল্পাঞ্চল হলে প্রথমে সরকারের খাস জমিতে করা হবে। আদিবাসীদের সঙ্গে আলোচনার রাস্তা এখনও খোলা আছে, রাজ্য সরকার যে প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন তা অনেক ভালো। আশা করছি আদিবাসীদের সকল স্তরের মানুষ এতে উপকৃত হবেন।" 

যদিও এই এলাকার সঙ্গে সিঙ্গুরের মিল পাচ্ছেন অনেকেই। দেউচা পাচামি দ্বিতীয় সিঙ্গুরে (Singur) পরিণত হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন তাঁরা। যদিও এটা সিঙ্গুরের পুনরাবৃত্তি হবে না বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি বিধানসভায় দাঁড়িয়ে এই প্রকল্প নিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘‌সিঙ্গুরে যেভাবে জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়েছিল, আমরা সেভাবে করব না। আমরা প্রথমে নিজেদের জমি দিয়ে শুরু করব। তার পর কেউ জমি দিলে দেওয়া হবে আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও বাড়ি।’‌ কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরও সংশয় কাটেনি আদিবাসীদের মনে।

Share this article
click me!