উত্তম দত্ত, প্রতিনিধি- চার চাকার গাড়িতে ঘুরলে মানুষ নিজের বলে মনে করবেন না। তাই টোটোই ভরসা। তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী টোটো করেই চষে বেড়ালেন গোটা এলাকা। বাইরে তুমুল বৃষ্টি। তারমধ্যেই দেখা গেল তাঁর টোটো বিস্তীর্ণ এলাকা চষে বেড়াচ্ছে। সামনে লেখা এমএল এ। বলাগড় বিধানসভা এলাকায় এখন এটি স্বাভাবিক ঘটনা।
দলিত সাহিত্যিক মনোরঞ্জন ব্যাপারীকে মুকুন্দপুরের বাড়ি থেকে সুদূর বলাগড়ে টেনে আনাটা ছিলো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাস্টারপ্ল্যান। আর সেই প্ল্যানটি যে কতটা যুক্তিযুক্ত ছিল সেটা বলাগড়ের মানুষ অনুভব করতে পারছেন। রেকর্ড হারে বলাগড় বিধানসভা কেন্দ্রে জিতেছেন মনোরোঞ্জন ব্যাপারী। হয়তো মার্জিন খুব বেশি নয়, কিন্তু যে বিধানসভা আসনটি গত লোকসভা আসনে ৩৫ হাজার পিছিয়ে ছিলো, সেই বিধানসভা আসনটি যে তৃণমূল টিকিয়ে রাখতে পারবে সেটা জেলার তৃণমূল নেতারা ধারণাই করতে পারেননি। তাই মাত্র সাড়ে সাত হাজার ভোটে জিতলেও সেটাকে রেকর্ড করাই বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে।
সম্প্রতি একটা টোটো কিনেছেন মনোরঞ্জন । আর সেটা চালিয়েই নিজের এলাকায় বাড়ি বাড়ি ঘুরে জনসংযোগ করছেন ব্যাপারী। বেশ কদিন ধরে নাগাড়ে বৃষ্টি পড়ছে। গরিব মানুষগুলো কারোর মাটির বাড়ি, কারোর চাল ফুটো কারোর বাড়ির বাইরে হাঁটু জল। এই সংরক্ষিত বিধানসভা এলাকায় এসমস্ত মানুষজন বেশি থাকেন। নিজে দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছেন তাই এই সমস্ত পরিবারগুলোর কষ্ট তাঁকে ভারাক্রান্ত করে তোলে। তাই সহযোগিতার হাত বাড়াতে তিনি দলবল ছাড়াই এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন।
কিন্তু টোটোতে কেন? উত্তর আসে পেট্রোল-ডিজেলের যা দাম। তাছাড়া এখনকার নেতাদের চালচলন নাপসন্দ তাঁর। বড় বড় চারচাকা গাড়িতে এলে মানুষ স্বাভাবিক ভাবে মিশবে না, ভয় পাবে। তাই টোটোই ঠিক আছে। এককালে ছিলেন রিকশাচালক। তিনি জানেন, বোঝেন টোটো অটো, রিকশা এইসমস্ত যানবাহনে সাধারণ মানুষরা সওয়ারী হন। আর এই সাধারণ মানুষের জন্যই তিনি জনপ্রতিনিধি। তাঁদের কথা শুনতে গেলে তাকে বাহুল্যতা দেখালে চলবেনা।
কিন্তু এই বিধায়ককে একা একা ঘুরতে দেখা যায়। দেহরক্ষী ছাড়া আর কাউকে তেমন একটা চোখে পড়েনা। এটা কেন? কেনই বা তিনি সঙ্গে কোনো অনুগামী রাখেন না জিজ্ঞাসা করতে তাঁর সাফ উত্তর তিনি স্তাবকতা পছন্দ করেন না।
যদিও তৃণমূল বিধায়কের এই কান্ডকে সস্তা প্রচার বলে মনে করছেন হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন,পেট্রোলের দাম কমানোর জন্য বিধায়কের উচিত মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা। প্রধানমন্ত্রী দাম বাড়াচ্ছেন এমন ভুল বার্তা দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য যে সেস নেয় সেটা কেন্দ্রের থেকে বেশি।