চোর ধরতে পুলিশ নয়, ডাক পড়েছিল গুণিনের। পাড়ার মোড়লরাও তাতেই সায় দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা থাকতে গুণিন এসে চোর ধরবে, পুলিশই বা তা মানবে কেন! শেষ পর্যন্ত দু' দিন গুণিনের যজ্ঞ, পুজোর পরে সবকিছু ভেস্তে দিল পুলিশ।
পুলিশ দেখেই অবশ্য চোরের মতো পালিয়েছে গুণিনও। পরিবারের লোকজন এবং গ্রামবাসীদের কুসংস্কার নিয়ে বুঝিয়েছেন খোদ এসডিপিও। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের বুধবার বেলদা থানার বড়মাৎকতপুর গ্রামে ৷
আরও পড়ুন- উল্টে যাওয়া ট্রলারের উপরে মৎস্যজীবীরা, উত্তাল সমু্দ্রে বাঁচার লড়াই, দেখুন ভিডিও
পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার গ্রামের বাসিন্দা মুকুল মাইতির বাড়িতে গুণিন ডেকে পুজো ও যজ্ঞ চলছিল। স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবারও পুজো হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আসলে গয়না ধরতেই এত আয়োজন। জানা গিয়েছে, মুকুল মাইতি নামে ওই গ্রামবাসীর স্ত্রীর সোনার গয়না কয়েকদিন আগে চুরি হয়ে যায়। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও খোয়া যাওয়া গয়না এবং চোরের হদিশ মিলছিল না। ঘটনার কথা শুনে গ্রামের মাথারাই পুলিশে না গিয়ে গুণিন ডাকার পরামর্শ দেন মুকুলবাবুকে।
সেই মতোই মঙ্গলবার থেকে মুকুলবাবুর বাড়িতে শুরু হয় গুণিনের বুজরুকি। গুণিনের দাবি ছিল, পুজো -যজ্ঞ করে 'কাঠিচালার' মধ্য দিয়েই চোর ধরা পড়বে। একবিংশ শতাব্দীতেও মধ্যযুগীয় কুসংস্কার ও বুজরুকিতে মেতে যায় গোটা গ্রাম। পুজো দেখতে ভিড় জমতে থাকে মুকুলবাবুর বাড়িতে। বুধবার খবর পেয়ে সেখানে হানা দেয় পুলিশ। বেলদার মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সুমনকান্তি ঘোষ ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রামের লোকজনকে বোঝান৷ এটা যে বুজরুকি তাও বোঝানো হয় এলাকাবাসীকে৷ বড়মাৎকতপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জুনিয়র হাইস্কুলের পড়ুয়াদের মাধ্যমে গ্রামবাসীদের সচেতন করেন এসডিপিও। সেই সঙ্গে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। অভিযুক্ত গুণিনকেও গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।