কুলতলির ডোঙ্গাজোড়া গ্রাম থেকে ধরা পড়া বাঘ ছেড়ে দেওয়া হয়েছে সুন্দরবনের জঙ্গলে। বাঘটি সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে বলে জানিয়েছে বনদপ্তর।
কুলতলির ডোঙ্গাজোড়া গ্রাম থেকে ধরা পড়া বাঘটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে সুন্দরবনের জঙ্গলে (Sundarbans)। বুধবার সকাল ছয়টা পঞ্চান্ন মিনিট নাগাদ সুন্দরবনের ২৪ পরগণা বনবিভাগের রামগঙ্গা রেঞ্জের ধূলি ভাসানী ৪ নম্বর জঙ্গলে ছাড়া হয় বাঘটিকে। বাঘটি সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে বলে জানিয়েছে বনদপ্তর (WB Forest department)। জানা গিয়েছে, পূর্ণবয়স্ক পুরুষবাঘ এটি। ঘুমপাড়ানো ওষুধের রেশ কাটতেই পেটপুরে মুরগির মাংস খাওয়া দাওয়া করেছে সে। বাঘটি সম্পূর্ণ সুস্থ থাকায় তাকে বুধবারই জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বনদপ্তরের আধিকারিকরা। সেইভাবেই বাঘটিকে ছাড়া হয় ধূলি ভাসানী ৪ নম্বর জঙ্গলে (Forest)।
বিগত ৬ দিন ধরে সুন্দরবনের কুলতলির ডোঙ্গাজোড়া শেখ পাড়া এলাকায় লোকালয়ে ঢুকে পড়েছিল বাঘটি। বৃহস্পতিবার থেকেই কুলতলির এলাকায় মেলে বাঘের পায়ের ছাপ। গ্রামবাসীরা নদীতে মাছ কাঁকড়া ধরতে যাওয়ার সময় বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পেয়েছিলেন, তারাই বনদপ্তরকে খবর দিলে বন দফতরের কুলতলী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে এলাকায় বাঘের উপস্থিতি লক্ষ্য করেন। সেই থেকেই গোটা এলাকাটিকে নাইলনের জাল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছিল। বাঘ ধরতে পাতা হয়েছিল দু-দুটি খাঁচা। গত কয়েকদিন ধরে ছাগলের টপ সেই খাঁচাতে দেওয়া হলেও ধরা দেয়নি বাঘ। বাঘকে ধরতে নাভিশ্বাস উঠেছিল বনদপ্তরের। গত কয়েকদিনে এই বাঘের জেরে গলা শুকিয়ে এসেছিল কুলতলিবাসীর। কারণ লোকালয়ের খুব কাছে চলে এসেছিল বাঘটি। শোনা যাচ্ছিল বাঘটির গর্জনও। পিয়ালি নদীর চর সংলগ্ন এলাকায় রীতিমত আতঙ্ক ছড়ায়। শুক্রবার থেকে সক্রিয়ভাবে বাঘের খোঁজে নেমে পড়ে বন দফতর। কিন্তু প্রথমে কয়েকদিন ধরে বাঘটিকে পটাকা ফাটিয়ে, ফাঁদ পেতেও বাগে আনতে পারছিল না বন দফতর। যার ফলে আতঙ্কে একদিন কার্যত ঘুম উড়ে গিয়েছিল এলাকাবাসীর। অবশেষে মঙ্গলবার সকালে তাঁকে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়ে খাঁচা বন্দি করে বনদপ্তর এর কর্মীরা। তারপর দীর্ঘ ৬ দিনের চেষ্টা বাঘ ধরা সম্ভব হয়।
এরপর ঘুমপাড়ানিগুলি ছোড়ার পর বাঘটি খাঁচায় ঢোকে। ঘটনাস্থলেই উপস্থিত হন পশু চিকিৎসক। তিনি ভাল করে ঘুমন্ত বাঘটির শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। বাঘটি সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে বলে জানা হয়। তারপেরই বাঘটিকে ফের নদীয় পেরিয়ে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বুধবার সকাল ছয়টা পঞ্চান্ন মিনিট নাগাদ সুন্দরবনের ২৪ পরগণা বনবিভাগের রামগঙ্গা রেঞ্জের ধূলিভাসানী ৪ নম্বর জঙ্গলে ছাড়া হয় বাঘটিকে।