রবিবার বিকেলের দিকে ঘণ্টাখানেকের ঝড়বৃষ্টি। তাতেই এক ধাক্কায় ছ' ডিগ্রি নেমে গেল কলকাতার তাপমাত্রা। ঝড় বৃষ্টি হয়েছে কলকাতা সংলগ্ন জেলাগুলিতেও। যার ফলে একটানা গরমের দাপটের পরে অনেকটাই স্বস্তি পেয়েছেন কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। আরও স্বস্তির খবর হল, আগামী আটচল্লিশ ঘণ্টায় কলকাতায় ফের বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তাপমাত্রাও ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচেই থাকবে বলেও আশ্বস্ত করেছেন আবহবিদরা।
গত এক সপ্তাহ ধরেই ঝাড়খণ্ড এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের উপর দিয়ে একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। যার ফলে বীরভূম, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়ার মতো জেলাগুলিতে গত কয়েকদিন ধরেই বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত রবিবার বিকেলের দিকে ঝড় বৃষ্টি শুরু হয় কলকাতায়। রবিবার ঝড়বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগে কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছিল ৩৪.৪ ডিগ্রিতে। রবিবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু দুপুরের ঝড়বৃষ্টির পরে সেটাই নেমে গয় ২৮.৪ ডিগ্রি। বৃষ্টির সঙ্গেই রবিবার ঘণ্টায় প্রায় ৫৪ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায় কলকাতার উপর দিয়ে। কলকাতায় বৃষ্টির পরিমাণ কম থাকলেও, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে ভারী বৃষ্টি হয়।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা জি কে দাস জানিয়েছেন, নিম্নচাপ অক্ষরেখাটি আগামী একসপ্তাহ সক্রিয় থাকবে। এর পরে সেটি ধীরে ধীরে দক্ষিণবঙ্গের দিকে এগোবে। এর ফলে সোমবার এবং মঙ্গলবার কলকাতায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার মতো জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও আবহাওয়া দফতর থেকে জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি পার করবে না বলেই আশাবাদী আবহবিদরা। শুধু তাই নয়, আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রির মধ্যেই থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস।
যদিও এই বৃষ্টিকে প্রাক বর্ষার বৃষ্টি বলতে রাজি নন আবহবিদরা। তাঁদের মতে, বৃষ্টির পরিমাণ যদি বাড়ে এবং একটানা চলতে থাকে, তাহলে সেটিকে প্রাক বর্ষার বৃষ্টি বলা যেতে পারে। কিন্তু প্রাক বর্ষার বৃষ্টির জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে বলেই মনে করছেন আবহবিদরা।
তবে দক্ষিণবঙ্গে কবে বর্ষা ঢুকবে সেই পূর্বাভাস এখনই দিতে রাজি নন আবহবিদরা। কারণ কেরলে বর্ষা দেরিতে ঢুকছে। ফলে কেরলে পৌঁছনোর পরে বর্ষা কলকাতায় কতদিনে এসে পৌঁছবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয় আবহবিদদের পক্ষে। কেরলের ক্ষেত্রে মৌসুমী বায়ু প্রবেশ করে আরব সাগর থেকে, অন্যদিকে বাংলার ক্ষেত্রে তা প্রবেশ করে বঙ্গোপসাগর হয়ে। গত বছরও কেরলে পৌঁছনোর পরে মৌসুমী বায়ুর অগ্রগতি থমকে গিয়েছিল। যার জেরে বাংলায় বৃষ্টি শুরু হতে দেরি হয়। এ বছর তাই এত আগে থেকে বাংলায় বর্ষার আগমন নিয়ে কিছু বলতে নারাজ হাওয়া অফিসের কর্তারা।